নীলফামারীতে আগাম আমন ধান কাটার ধুম

নীলফামারীতে আগাম আমন ধান কাটার ধুম

রংপুর প্রতিনিধি:

Published : ১৯:৩৯, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

নীলফামারীতে আগাম আমন ধান কাটার ধুম পড়েছে। ধান কাটা মাড়াই করতে দম ফেলার ফুরসত নেই কৃষকের। বাড়তি ও লাভজনক ফসল হিসেবে চাষ করেছেন স্বল্পমেয়াদি এ আগাম জাতের আমন ধান। 

আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গত বছরের তুলনায় ধানের ফলনে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। ধানের পাশাপাশি গো-খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় হাট-বাজারে চলছে কাঁচা খড়ের আঁটির রমরমা ব্যবসা। দামও পাচ্ছে আশানুরূপ। 

বর্তমানে প্রতি মণ কাঁচা ধান ৭৫০-৮০০, আর শুকনো ধান ৮৫০ টাকায় বিক্রয় করা হচ্ছে। ন্যায্য মূল্য পাওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। অনেক কৃষক ধান কেটে জমিতেই মাড়াই ও বিক্রয় করছেন। ব্যবসায়ীরা এসে ক্ষেত থেকেই ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন। 

ধান কাটার পর ওই জমিতে আগাম আলুসহ শীতকালীন সবজি চাষের লক্ষ্যে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। ভাগ্য পরিবর্তনের স্বপ্নের ফসল আগাম আলু রোপণে জোরে-শোরে মাঠে কাজ করছেন আলুচাষিরা। 

উঁচু বেলে ও দোআঁশ মাটি হওয়ায় এ এলাকার বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ সারাবছরই সবুজে ভরা থাকে। জমিগুলোতে ৩-৪টি ফসল হওয়ায় কৃষকেরা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।

আগাম ধান কাটা ও আলু রোপণ যেন শীতেরই আগমনী বার্তা বহন করে। শীতকালীন পিঠা-পায়েস তৈরি ও নবান্নের প্রস্তুতি চলছে গ্রামে গ্রামে।

নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ, ডোমার ও সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায়, কৃষি শ্রমিকেরা ধান কাটছেন, কেউ জমিতে ধান মাড়াই করে বস্তা ভরাচ্ছেন। 

কিশোরগঞ্জ উপজেলার পুঁটিমারী ইউনিয়নের কৃষক গজেন্দ্র নাথ রায় বলেন, দুই বিঘা জমিতে চায়না আগাম জাতের ধান রোপণ করেছি। ফলন ভালো হয়েছে। প্রতি বিঘায় ২০-২২ মণ ধান হয়েছে। দামও ভালো। এবার ৪ বিঘায় আগাম আলু গারিমো (রোপণ করব)। 

একই উপজেলার বাহাগিলি ইউনিয়নের উত্তর দুরাকুটি গ্রামের কৃষক আনারুল বলেন, ৪ বিঘা জমিতে চায়না ধান চাষ করেছি। প্রতি মণ ধান বিক্রি করছি ৮০০ টাকার ওপরে। 

নিতাই ইউনিয়নের কাচারিপাড়ার কৃষক সামছুল হক বলেন, ধানের ফলন ভালো। বাজারে আশানুরূপ দাম পাচ্ছি।

কিশোরগঞ্জে উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর আগাম আমন ধান চাষ হয়েছে ১৪ হাজার ৯৩৫ হেক্টও জমিতে। এরই মধ্যে ধান কাটা শুরু হয়েছে। 

কাটার পরপরই এসব জমিতে আগাম আলু রোপণ করা হবে। সে জন্য কৃষকেরা প্রস্তুতিও নিচ্ছেন। এছাড়া এ বছর আগাম আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬৬০০ হেক্টও জমি। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লোকমান আলম বলেন, কৃষকেরা আগাম আমন ধান কাটা যেমন শুরু করেছেন, তেমনি ওই জমিতে আগাম আলু রোপণেরও প্রস্তুতি নিচ্ছেন। 

এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। দামও পাচ্ছেন বেশ ভালো। আগাম ফসল ঘরে ওঠায় কৃষকেরা লাভবান হওয়ার পাশাপাশি খাদ্য নিরাপত্তাও বেড়েছে।

বিডি/ও

শেয়ার করুনঃ
Advertisement