রাজশাহীতে ক্ষতির মুখে পাটচাষিরা, ঝুঁকছেন ভুট্টায়
Published : ১২:৪৭, ৩১ জুলাই ২০২৪
রাজশাহীতে কম বৃষ্টিপাতের কারণে ডোবা ও খালগুলোতে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় সেখানকার চাষিদের পাট জাগ দিতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। পর্যাপ্ত পানি না পাওয়ায় উৎপাদন খরচ বাড়ছে। ফলে পাট চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে ভুট্টা চাষে ঝুঁকছেন কৃষকরা।
জেলার কৃষি অফিস জানিয়েছে, গত বছর পানির অভাবে পাট জাগ দিতে কৃষকদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবার ২৫১৫ হেক্টর জমিতে পাট চাষ কমেছে। এ বছর রাজশাহীতে পাট চাষ হয়েছে ১৭ হাজার ৮৫ হেক্টর জমিতে। গত বছর চাষ হয়েছিল ১৯ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে।
কৃষি অফিস বলছে, গত বছর এ সময় বৃষ্টিপাত কম হয়েছিল। ফলে পাট জাগ দিতে সমস্যায় পড়তে হয় চাষিদের। এ বছরও পাটের বীজ বপনের সময় বৃষ্টিপাত হয়নি। ফলে অনেকেই পাটের পরিবর্তে ভুট্টা চাষ করেছেন।
তাই এবার বেড়েছে ভুট্টার চাষ। গত বছর ১১ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছিল। এবার চাষ হয়েছে ১২ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে। এ বছর ভুট্টার চাষ বেড়েছে ১৫০০ হেক্টর জমিতে।
পবা উপজেলার পারিলা গ্রামের পাটচাষি ইমরান আলী জানান, গত বছর ৬ বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেছিলাম। জাগ দিতে সমস্যা হওয়ায় এবার ৪ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছি। এবারও বৃষ্টিপাত কম হয়েছে। এ কারণে পাটের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ঘটেনি। এবার ডোবা বা খালে পানির অভাবে চাষিরা পাট কাটছে কম। তবে যেসব এলাকায় ডোবায় পানি আছে, সেখানে তারা পাট কেটে জাগ দিচ্ছেন।
আরেক পাট চাষি আব্দুর রহিম মন্ডল জানান, গত বছর রাজশাহীতে সর্বোচ্চ সাড়ে ৫ হাজার টাকা মণ দরে পাট বিক্রি হয়। এতে চাষিরা কিছুটা আশা দেখেছিলেন। তাই অনেকে এবারও পাট চাষ করেছেন। কিন্তু পাট জাগ দিতে পানির সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। অনেকে পাট কেটে জমিতে ফেলে রেখে বৃষ্টির অপেক্ষা করছেন।
গত বছর পাট চাষ করে পানির অভাবে জাগ দিতে বেগ পেতে হয় পবার দারুশা এলাকার করিম আলীকে। তিনি বলেন, গত বছর ডোবায় পানি না থাকায় পাট কেটে জমিতে ফেলে রাখতে হয়েছে। এতে অনেক পাট নষ্ট হয়েছে। তাই এবার পাট ১ বিঘা জমিতে পাট ও আড়াই বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছেন।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোসা. উম্মে সালমা বলেন, রাজশাহীতে পাটের চাষ কমছে। তবে বেড়েছে ভুট্টার চাষ। এ বছর পাট জাগ দিতে তেমন সমস্যা হচ্ছে না। কয়েকদিন আগে বৃষ্টি হওয়ায় চাষিরা ভালোভাবে পাট জাগ দিতে পারছেন। গত বছর জুলাইয়ের তুলনায় এ বছর ১০০ মিলিমিটার বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে।
বিডি/ও