নদীর গল্প 

নদীর গল্প 

রকিবুল হাসান

Published : ০০:০৫, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শুনুন মহাশয়
মহারথি মহাশয় শুনুন আমার শীতের শীতল কথা
তেল মেরে মেরে এ শহরে জীবনের স্বপ্ন দেখিনি। 
শ্রমিকের মতো খেটেছি শৈশব যৌবন-শক্ত মাটির সাথে 
দিন-দুপুরে নির্মাণ করেছি কঠিন দৃঢ়তা-রাত্রির কাছ থেকে শিখেছি 
আঁধার ভাঙা-শ্রম বেচে খাই-শিখিনি তেলের গল্প।

মহারথি মহাশয় শুনুন উদ্ভট এত কথা কেন কন! 
কিসের হুমকি ধামকি মারেন-কৃষকপিতার পুত্র আমি 
শাণিত ফলায় কঠিন মাটির বুকে ফলিয়েছি সোনার ফসল 
রোদ বৃষ্টি ঝড়ঝাপটা আহার-অনাহার এসব জীবনের গান; 
তেলবাজি করা চকচকে চেয়ারে যে লাথি মারি-বোঝেন না বুঝি!

মহারথি মহাশয় শুনুন গড়াইয়ের যৌবনমাখা যুবকের কথা 
রোদে-পোড়া নদীর শুকনো বুকে হাঁটা কয়া কুষ্টিয়া প্রতিদিন 
বুকপোড়া কবিতার খাতা আমি। নকলবাজি আর তৈলমর্দন
 ওসব থাকে না এখানে-তেলমাখা পদ-পদবি পদক চেয়ার 
কৃষকের শাণিত ফলায় ক্ষুধার্ত মাটিতে ফলে না ওসবের জয়গান।

নদীর গল্প 
বাঘা যতীনের দাপিয়ে বেড়ানো নদীটা এখন আর নেই 
সেই পানসি নৌকার সারিও নেই 
যৌবনের মুগ্ধতার কবিতার ঢেউখেলা শব্দও নেই 
বিবর্ণ বিকেল যেন পড়ে আছে অন্ধকারে ভরে নিতে বুক।

কয়া বাজারের শুকনো ঘাটের পাশে দাঁড়িয়ে দূরের ভাঙাবুকে 
দেবতীকে বললাম, তুমি নদী হও 
বুকভরা ঢেউ হও 
দুকূল উপচে পড়া পলিমাটির উর্বর স্বপ্ন হও।

বিরান জমিনে ফলেনি যে কতকাল সবুজ ফসল
 স্বপ্ন দেখতে দেখতে স্বপ্নহীন মানুষেরা পোড়া চোখে যে তাকায় 
শ্মশানের মতো পড়ে থাকা শূন্য মাঠের চৌচির পিপাসায় 
এখানেও একদিন দাপুটে যৌবন ছিল।

নদীটা যে মরে আছে
ফসলের মাঠ পুড়ে পুড়ে পড়ে আছে 
দীর্ঘশ্বাসে বাতাসের বুক ভারি হয়ে পড়ে থাকে 
বাঘা যতীনের সাহসী নদীটা এখন দুচোখে তো মরণ খোঁজে।

দেবতীকে বললাম, তুমি নদী হও 
দুকূল ভাসানো পলিমাটি স্রোতের উর্বরতার যৌবন হও 
দেবতী তাকায় আমার দিকে; 
তারপর মিশে গেলো প্রবল প্রপাতে যৌবনা দারুণ নদী।

এনই

শেয়ার করুনঃ
Advertisement