বিবিসির চোখে বছরের সেরা ১০ বই

বিবিসির চোখে বছরের সেরা ১০ বই

শিল্প-সাহিত্য ডেস্ক:

Published : ২২:০২, ১৮ নভেম্বর ২০২৪

সারাবিশ্বে বছরে প্রকাশনা সংস্থা ও ব্যক্তি উদ্যোগে প্রায় ৪০ লাখ বই প্রকাশিত হয়। গুগলের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ১৪৪০ সালে সর্বপ্রথম মুদ্রণযন্ত্রে বই প্রকাশের পর ২০২২ সাল পর্যন্ত প্রায় ১২ কোটি ৯৮ লাখ ৬৪ হাজার ৮৮০টি বই প্রকাশিত হয়েছে। 

প্রতিবছর প্রকাশিত লাখ লাখ বই থেকে বিবিসি কালচার বছরের সেরা ১২টি বইয়ের তালিকা করে। ওই প্রতিবেদন থেকে সেরা ১০টি বইয়ের কথা আলোচনা করা যাক।

১. সেলেডোনিয়ান রোড:

স্কটিশ ঔপন্যাসিক অ্যান্ড্রু ও’হাগানের উপন্যাস ‘সেলেডোনিয়ান রোড’ বিবিসি কালচারের ২০২৪ সালের সেরা বইয়ের তালিকার শুরুতেই আছে। উপন্যাসটি এখন পর্যন্ত হাগানের সবচেয়ে উচ্চাভিলাষী উপন্যাস। এই উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র ৫২ বছর বয়সী লেখক ও শিক্ষাবিদ স্কট ক্যাম্পবেল ফ্লিন। উপন্যাসে লেখক ছোট একটি রাজপরিবার এবং রুশ অলিগারক (ক্ষমতাকাঠামোর একটি ধারণাগত রূপ, যেখানে ক্ষমতা অল্পসংখ্যক মানুষের হাতে থাকে) থেকে শুরু করে মানব পাচারকারী ও দুর্ধর্ষ শিল্পীর চরিত্রগুলো মুখোমুখি করিয়েছেন।

২. মাই হ্যাভেনলি ফেবারিট:

ডাচ লেখক লুকাস রিজনেভেল্ডের ‘মাই হ্যাভেনলি ফেবারিট’ বইটি তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে আছে। ‘মাই হ্যাভেনলি ফেবারিট’ উপন্যাসটি নেদারল্যান্ডসের একটি কৃষক সম্প্রদায় নিয়ে লেখা। উপন্যাসটির বর্ণনাকারী ৪৯ বছর বয়সী একজন পশুচিকিত্সক, যিনি ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরীর প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলেন।

৩. গ্রিন ডট:

এর পরের অবস্থনেই রয়েছে অস্ট্রেলিয়ান লেখিকা মেডেলিন গ্রের প্রথম উপন্যাস ‘গ্রিন ডট’। উপন্যাসটি ২৪ বছর বয়সী হেরাকে নিয়ে লেখা। জীবনসংগ্রামে টিকে থাকতে হেরা একটি অনলাইন সংবাদমাধ্যমে চাকরি নেন। চাকরির শুরুর দিকেই তিনি আর্থার নামের একজন বয়স্ক বিবাহিত সাংবাদিকের প্রেমে পড়ে যান। আর্থারের অসংখ্য মন্দ দিক থাকা সত্ত্বেও হেরা তার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন এবং নিজেকে সুখী ভাবতে শুরু করেন।

৪. দ্য স্লিপওয়াকারস:

সেরা বইয়ের তালিকার চার নম্বরে আছে যুক্তরাজ্যের লেখিকা স্কারলেট টমাসের উপন্যাস ‘দ্য স্লিপওয়াকারস’। এটি একটি অন্ধকার, প্রেম ও থ্রিলারধর্মী উপন্যাস। উপন্যাসটি একটি প্রত্যন্ত গ্রিক দ্বীপে মধুচন্দ্রিমায় যাওয়া এক দম্পতিকে নিয়ে লেখা। ওই দম্পতির নাটকীয় বিয়ে এবং একে অপরের কাছে নানা তথ্য গোপন রাখার বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্কারলেট টমাসের গল্প বলার ধরন বেশ সাহসী। ‘দ্য স্লিপওয়াকারস’ পাঠককে প্রতিমুহূর্তে বিস্মিত করবে।

৫. ওয়াইল্ড হাউসেস:

আইরিশ-কানাডীয় লেখক কলিন ব্যারেট প্রথম উপন্যাস ‘ওয়াইল্ড হাউসেস’। আয়ারল্যান্ডের ছোট্ট একটি শহরের একটি মিষ্টি স্বভাবের কিশোর ডল। তার বড় ভাইয়ের অপরাধের প্রতিশোধ হিসেবে একটি স্থানীয় গ্যাং ডলকে অপহরণ করে। এসব নিয়েই উপন্যাসটি এগিয়েছে। ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘ওয়াইল্ড হাউসেস’ একটি বৈদ্যুতিক থ্রিলার। এখানে আছে কৌতুকের নিপুণ ছোঁয়াও।

৬. চেঞ্জ:

তরুণ লেখক ও সমাজবিজ্ঞানী এডওয়ার্ড লুইয়ের আত্মজীবনীমূলক উপন্যাস ‘চেঞ্জ’। উপন্যাসটিতে সামাজিক শ্রেণি, রূপান্তর ও অতীতকে পেছনে ফেলে যাওয়ার বিপদ সম্পর্কে বিবরণ আছে। লুই শ্রমজীবী​শ্রেণির শহরে দারিদ্র্য, বৈষম্য ও সহিংসতার বাইরে একটি জীবনকে তুলে ধরেছেন। বলা হচ্ছে যে, এ উপন্যাস লুইয়ের জীবনের সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত ও স্পষ্ট প্রতিকৃতি।

৭. প্যারাসল এগেইনস্ট দ্য অ্যাক্স:

নাইজেরিয়ান বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ লেখিকা হেলেন ওয়েমির নতুন উপন্যাস ‘প্যারাসল এগেইনস্ট দ্য অ্যাক্স’। উপন্যাসটি প্রাগ শহরের হিরো তোজোসোয়া নামের এক নারীকে কেন্দ্র করে এগিয়েছে। উপন্যাসটি প্রচলিত আখ্যান ছেড়ে গল্পের মধ্যে বেশ কয়েকটি গল্পে পরিণত হয়েছে। এসব গল্পে প্রাগকে স্বপ্ন ও রহস্যের শহর হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে।

৮. চয়েজ:

ভারতের নীল মুখার্জি থাকেন লন্ডনে। ইংরেজিতে লেখালেখি করেন। ‘চয়েজ’ তার বৈশ্বিক দারিদ্র্য থেকে জলবায়ু সংকটের সমসাময়িক উদ্বেগ নিয়ে লেখা উপন্যাস। এই উপন্যাসের মধ্য দিয়ে দারিদ্র্য থেকে জলবায়ু সংকটে নীল মুখার্জি অর্থনীতি, জাতি, বরাদ্দ ও সমসাময়িক জীবনের জটিল নীতিশাস্ত্র সম্পর্কে আমাদের মৌলিক অনুমানের মুখোমুখি হয়েছেন।

৯. ভিকটিম:

মার্কিন মুলুকের লেখক অ্যান্ড্রু বোরগার উপন্যাস ‘ভিকটিম’। এতে উপন্যাসের নায়ক ও ব্রঙ্কস নেটিভ জাভি পেরেজের স্মৃতিকথা উপস্থাপিত হয়েছে, যিনি নিজের সুবিধার জন্য ট্র্যাজিক গল্প বলার খেলা খেলেন। একদিন গল্পের নায়ক জাভি জানতে পারেন, তার বাবা খুন হয়েছেন, মা একা সংগ্রাম করে যাচ্ছেন এবং সবচেয়ে কাছের বন্ধু একটি গ্যাংয়ের সদস্য হিসেবে বন্দী। এসব নিয়ে গল্পও তৈরি করছেন।

১০. ব্লেসিংস:

তালিকার ১০ নম্বরে আছে নাইজেরিয়ার লেখক চুকয়ুবুকা ইবেহর উপন্যাস ‘ব্লেসিংস’। এমন একটি সমাজ, যে সমাজে সমকামিতাকে অপরাধ, সমকামিতা প্রশ্নাতীত ও নিন্দা করা হয়। এ উপন্যাসে বর্তমান সমাজের লাজুক নায়ক ও বিফুনার জীবন সংগ্রামের গল্প বলা হয়েছে। বিফুনার বাবা রক্ষণশীল। সমকামিতা করতে গিয়ে বাবার হাতে ধরা পড়ে সে। পরে তাকে বাড়ি থেকে একটি কঠোর বোর্ডিং স্কুলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু প্রথম প্রেমের কথা কিছুতেই ভুলতে পারে না ওবিফুনা। এসব নিয়ে এগিয়েছে এ উপন্যাস। সূত্র: বিবিসি

বিডি/ও

শেয়ার করুনঃ
Advertisement