ব্যাংক ঋণের নামে ৯২ হাজার ২৬১ কোটি টাকা লুট: সিপিডি

ব্যাংক ঋণের নামে ৯২ হাজার ২৬১ কোটি টাকা লুট: সিপিডি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

Published : ১৬:০০, ১২ আগস্ট ২০২৪

আওয়ামী লীগ সরকারের গত ১৫ বছরে ব্যাংক ঋণের নামে ৯২ হাজার ২৬১ কোটি টাকা লোপাট করা হয়েছে। এছাড়া ২০০৯-২০১৭ সাল পর্যন্ত দুর্বল ব্যাংকগুলোকে ১৫ হাজার ৭০০ কোটি টাকা মূলধন জোগান দিয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার। 

সোমবার (১২ আগস্ট) রাজধানীতে ব্যাংক খাতে সুশাসন ফিরিয়ে আনার বিষয়ে সিপিডির এক আলোচনায় এসব তথ্য জানায় বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।

গ্লোবাল ফিন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন জানান, ২০০৭-২০১৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে আনুমানিক ৪৭ থেকে ৬৭ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রশাসনিক দায়িত্ব যারা পালন করেছেন অর্থাৎ গত ১৫ বছরে গভর্নর যারা ছিলেন তারা যেসব নীতিমালা নিয়েছেন, ওইগুলো ব্যাংকিং নর্মসের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তারা বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দেয়ার জন্য অনেক নিয়মে ব্যত্যয় ঘটিয়েছেন। 

ফলে বিশেষ গোষ্ঠীকে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে। এর প্রতিটি কেইস তদন্ত হওয়া উচিত। এর সঙ্গে যারা জড়িত ছিলেন, তাদের শাস্তির আওতায় আনা প্রয়োজন।

তিনি আরও জানান, খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েই চলছে। ২০০৯ সালে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২২ হাজার ৪৮১ কোটি টাকা। চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত যার পরিমাণ দাড়িয়েছে ১ লাখ ৮২ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা। ২০১৬ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি নিয়ে এখনও তদন্ত চলছে। 

তদন্ত শেষ করার জন্য সিআইডি ৭৯ বার সময় নিয়েছে। নতুন সময় ৪ সেপ্টেম্বর। ভবিষ্যতে দেখা যাবে। আমরা চাই ওই তদন্ত প্রতিবেদন উন্মুক্ত করা দেওয়া হোক।

সিপিডি নির্বাহী পরিচালক বলেন, বারবার পুনঃতফসিল করার কারণে ঋণ খেলাপির পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে, এটা বন্ধ করতে হবে। ২০১২ সালের হলমার্কের ঋণ কেলেঙ্কারিতে দেখেছিলাম অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনা দুর্বল ছিল, এখনও বিভিন্ন ব্যাংকে তা রয়ে গেছে। 

২০২১ সালের তথ্যানুসারে ১১টি ব্যাংকের তথ্য-উপাত্ত গবেষণা করে বলেছিলাম শক্তিশালী প্রশাসক নিয়োগের সুপারিশ করছি। অনেকগুলো মৃতপ্রায়। এগুলো বেঁচে থাকার কথা নয়। ওইগুলো বন্ধ করা উচিত। যেগুলো দুর্বল রয়েছে, সেগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিবর্তন করে যথাযথভাবে ঠিক করতে হবে। না হলে সক্রিয় করা সম্ভব নয়।

ফাহমিদা খাতুন বলেন, অনেক আর্থিক মামলা আদালতে পড়ে আছে। ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আর্থিক আদালতে মামলার সংখ্যা ৭২ হাজার ৫০০টি। টাকার পরিমাণ ১ লাখ ৭৮ হাজার ২৭৭ কোটি টাকা। 

২০০৮-২০২৩ সাল পর্যন্ত তথ্য-উপাত্ত যাচাই-বাছাই করে আর্থিক কেলেঙ্কারি খুঁজে বের করা প্রয়োজন। আমাদের গবেষণায় দেখিয়েছিলাম ২৪টি আর্থিক কেলেঙ্কারি হয়েছে, যার পরিমাণ ৯২ হাজার ২৬১ কোটি টাকা।

বিডি/ও

শেয়ার করুনঃ
Advertisement