ব্যাংকে টাকা ফিরতে শুরু করেছে

ব্যাংকে টাকা ফিরতে শুরু করেছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

Published : ১০:৩৫, ২৪ আগস্ট ২০২৪

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের আগ মুহূর্তে দেশের পরিস্থিতি খারাপ হলে ব্যাংক থেকে টাকা তুলেতে শুরু করেন সাধারণ গ্রাহকরা। এ সময় অনেক ব্যাংকে টাকা রাখার জায়গা না হলেও কোনো কোনো ব্যাংকের ভল্ট খালি হয়ে যায়। এ অবস্থায় অনেক শাখা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শরণাপন্ন হয়।

নিয়ম অনুযায়ী নির্ধারিত পরিমাণের বেশি টাকা শাখায় জমা রাখা যাবে না। এ জন্য অনেক শাখা কেন্দ্রীয় ব্যাংকে টাকা জমা রাখছে। সরকার পতনের পর কয়েক দিন নিয়মিত কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে টাকা নিচ্ছিল কিছু ব্যাংক। তবে গেল সপ্তাহের পাঁচ দিনে যত টাকা নিয়েছে, জমা করেছে তার চেয়ে বেশি টাকা। তাই গেল পাঁচ দিনে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে দুই হাজার ৫৯৩ কোটি টাকা জমা হয়েছে।

অনেক ব্যাংকের উচ্চ পর্যায়ে পরিবর্তন এসেছে জানিয়ে ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেন, দুর্বল ব্যাংক থেকে টাকা তুলে বর্তমানে ভালো ব্যাংকে জমা রাখছে মানুষ। প্রতিটি ব্যাংক শাখায় ভল্টের একটি নির্দিষ্ট সীমার বেশি টাকা এলেই তা কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা সোনালী ব্যাংকের চেষ্ট শাখায় জমা করতে হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানা যায়, বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভল্টে জমা হয় ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। গত ১৮ আগস্ট তা ছিল ১০ হাজার ৯০৭ কোটি টাকা। এর বিপরীতে নোটস ইন সার্কুলেশন বা প্রচলনে থাকা টাকার পরিমাণ কমে গতকাল ৩ লাখ ১৯ হাজার ৪৬৯ কোটিতে নেমেছে। গত ১৫ আগস্ট তা ছিল তিন লাখ ২২ হাজার ৬১ কোটি টাকা। আর গত ৬ আগস্ট কারেন্সি ইন সার্কুলেশন ছিল তিন লাখ ১৫ হাজার ৫৪০ কোটি টাকা। গত ১৫ আগস্ট পর্যন্ত ৯ দিনে মানুষের হাতে টাকার পরিমাণ বেড়ে যায় ৬ হাজার ৫২২ কোটি টাকা।

এদিকে, বাংলাদেশ ব্যাংক নিরাপত্তার স্বার্থে ব্যাংক থেকে নগদ টাকা তোলার সর্বোচ্চ সীমা বেঁধে দেয়।

গত শনিবার (১৭ আগস্ট) রা‌তে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে পাঠানো এক জরুরি বার্তায় সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের বলা হয়, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এক‌টি অ্যাকাউন্ট থেকে সর্বোচ্চ তিন লাখের বেশি নগদ টাকা উত্তোলন করা যাবে না। এর আগে এই সীমা ছিল এক লাখ টাকা।

গত ১০ আগস্ট অ্যাকাউন্ট থেকে দুই লাখের বেশি নগদ টাকা উত্তোলন করা যাবে না বলে নির্দেশনা দেওয়া। তারও আগে ৮ আগস্ট এক লাখের বেশি নগদ টাকা উত্তোলন করতে পারেননি গ্রাহক।

তবে যেকোনো পরিমাণ টাকা অন্য হিসাবে স্থানান্তর করতে পারবেন এবং ডিজিটাল লেনদেন করতে পারবেন।

জানা যায়, সরকার পরিবর্তনের পর নগদ টাকা উত্তোলনের চাপ বেড়ে যায়। বিশেষ করে আওয়ামীপন্থী রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী পরিবার থেকে নগদ টাকা উত্তোলনের চাপ দেখা যায়।

বাংলাদেশ ব্যাংক এসব অর্থ যাতে কোনোভাবেই সন্ত্রাসী বা অবৈধ কাজে ব্যবহৃত না হয়, সে জন্য নগদ টাকা উত্তোলন কিছুটা নিরুৎসাহিত করতে এ সিদ্ধান্ত নেয়।

বিডি/এন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement