প্রিমিয়ার ব্যাংকে নিয়োগ বাণিজ্যের হোতা কবির এখন ব্যস্ত খোলস পাল্টাতে
Published : ১৬:০৭, ২৫ অক্টোবর ২০২৪
ভৈরবে প্রিমিয়ার গ্রুপের কর্ণধার ও আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ড. এসবিএম ইকবালের ডান হাত হিসাবে পরিচিত ছিল জাভেদ ওমর কবির। যিনি নিজেকে ইকবালের ভাই বলে পরিচয় দিতেন। আর প্রিমিয়ার ব্যাংকের অধিকাংশ নিয়োগ তার হাত দিয়েই হতো। শর্ত একটাই লিখিত পরীক্ষায় ৩৩ পেতে হবে এবং এডভান্স পেমেন্ট করতে হবে। সেক্ষেত্রে পোস্ট বুঝে দুই থেকে আট লাখ পর্যন্ত টাকা নিতেন তিনি।
পদচ্যূত স্বৈরাচারের আমলে আওয়ামী লীগের এমপির সহচরের ভূমিকায় থাকা এই জাভেদ ওমর কবির প্রিমিয়ার ব্যাংকের কোনো পদে না থেকেও বিরাট প্রভাব বিস্তার করে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। আর সরকার পতনের পর নিজেকে বিএনপিপন্থী প্রমাণ করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রিমিয়ার ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানান, গত বছর প্রিমিয়ার ব্যাংকে একটা পোস্টে নিয়োগের জন্য তার কাছে কবির ৮ লাখ টাকা দাবি করেন। পরে দফারফা করে ৬ লাখ টাকা চূড়ান্ত হয়, শর্ত দেয়া হয় লিখিত পরীক্ষায় ৩৩ পেতে হবে। পরীক্ষায় তিনি ৩৮ পান। পরীক্ষার পরদিন কবির নিজে ফোন দিয়ে ক্লায়েন্টকে কনফার্ম করেন। এরপর ভাইভার দুই ঘন্টা পর কবির তাকে জানান তার চাকরি হয়ে গেছে। এর দুই সপ্তাহ পর নিয়োগপত্র হাতে পান তিনি।
সম্প্রতি প্রিমিয়ার ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে দেয়া এক কর্মকর্তা অভিযোগ করে বলেন, নিয়োগ বাণিজ্যে কবিরের সাথে ব্যাংকটির অনেক বড় বড় কর্মকর্তা জড়িত।
তথ্য সূত্র বলছে, কয়েক বছর আগে প্রিমিয়ার ব্যাংকে প্রায় শতাধিক অফিস সহকারি নিয়োগ দেয়া হয়। যাদের বেতন ধরা হয় ১৬ হাজার টাকা। সেই চাকরির জন্য প্রায় ২০০ মানুষের কাছ থেকে ১ লক্ষ ৬০ হাজার থেকে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত নেন তিনি। তবে অনেককেই পরবর্তীতে চাকরি দেওয়া হয়নি, এমনকি টাকাও ফেরত দেননি।
শুধুমাত্র চাকরি নয় কবির খুশি না হলে প্রিমিয়ার ব্যাংকে প্রমোশন কিংবা ট্রান্সফার কোনটাই সম্ভব হয় না। পুরুষদের ক্ষেত্রে অর্থ কিংবা উপহার নেওয়া নেন তিনি। আর মহিলাদের ক্ষেত্রে তার চাহিদা অন্য কিছু। এক ভুক্তভোগী নারীর দাবি, সম্প্রতি হোয়াটসঅ্যাপে কবির তার কাছে অনৈতিক প্রস্তাব করেন।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে আত্মগোপনে চলে যান আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ও প্রিমিয়ার গ্রুপের কর্ণধার ড. এসবিএম ইকবাল। তবে পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে খোলস বদলানোর চেষ্টায় ব্যস্ত জাভেদ ওমর কবির। নিজেকে পরিচয় দিচ্ছেন ভৈরব উপজেলা বিএনপির সদস্য হিসেবে। যা নিয়ে তৈরি হয়েছে নানান সমালোচনা।
বিডি/এন