সরকারী সা’দত কলেজ: মুসলিম জমিদার কর্তৃক বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত প্রথম কলেজ

সরকারী সা’দত কলেজ: মুসলিম জমিদার কর্তৃক বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত প্রথম কলেজ

খন্দকার  আশরাফুল ইসলাম

Published : ১৯:৪৬, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সরকারী সা'দত কলেজ, টাঙ্গাইলের করটিয়াতে অবস্থিত একটি পুরাতন সরকারি বিদ্যাপীঠ। কলেজটি করটিয়া কলেজ নামেও স্থানীয়দের কাছে অধিক পরিচিত।

১৯২৬ সালের গোড়ার দিকে প্রতিষ্ঠিত হয় সরকারী সা'দত কলেজ। এটি ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের কাছে এবং টাঙ্গাইল জেলা শহর থেকে প্রায় ৭কিলোমিটার (৪.৩মাইল) দূরে অবস্থিত। কলেজের প্রথম অধ্যক্ষ ইব্রাহিম খাঁ। যিনি টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে ভূঞাপুর কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও অধ্যক্ষ ছিলেন। পরে তার নামানুসারেই কলেজটির নামকরণ করা হয় ইব্রাহিম খান সরকারী কলেজ।

করটিয়া সা’দত কলেজ বাংলাদেশের প্রথম কলেজ যা একজন মুসলিম জমিদার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত। এটি প্রতিষ্ঠা করেন টাঙ্গাইলের জমিদার ও শিক্ষাবিদ ওয়াজেদ আলী খান পন্নী। তিনি তার দাদা সা’দত আলী খান পন্নীর নামানুসারে এর নামকরণ করেন।

সা’দত কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন অধ্যক্ষ ইব্রাহিম খান। তিনি কলেজের প্রথম প্রধান নির্বাহী ছিলেন। ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত কলেজে নিয়োজিত ছিলেন। কলেজটিকে ১৯৩৮সালে ডিগ্রী কলেজ হিসাবে উন্নীত করা হয়।

১৯৭৯ সালেরমাঝামাঝি সময়ের দিকে কলেজটি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতি লাভ করে। বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ১৬ টি বিষয়ে অনার্স (স্নাতকসম্মান) এবং ১০ টি বিষয়ে মাস্টার্স (স্নাতকোত্তর)করার সুযোগ রয়েছে। কলেজটি একটি স্নাতকোত্তর কলেজ হিসেবে স্বীকৃত।

এই কলেজের মূল ভবনটি ২৭ একর জায়গা বেষ্টিত। ক্যাম্পাস এলাকায় একটি অডিটোরিয়াম, দুটি ছাত্রদের কমন রুম, একটি কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার, স্বাস্থ্য পরিষেবা, একটি ক্রীড়া অফিস, একটি বিএনসিসি অফিস কক্ষ, একটি রোভার স্কাউটস অফিস, একটি মসজিদ এবং একটি ক্যান্টিন রয়েছে।

বিজ্ঞান অনুষদের জন্য ৫ টি পরীক্ষাগার - (১) পদার্থবিদ্যা (২) রসায়ন (৩) গণিত (৪) প্রাণিবিদ্যা এবং (৫) উদ্ভিদবিদ্যা নির্ধারিত। কলেজটিতে ১৬ টি সেমিনার কক্ষ রয়েছে।

কলেজের গ্রন্থাগারে ২০০ টি বিরল মধ্যযুগীয় পাণ্ডুলিপি রয়েছে, যার মধ্যে পারস্যের (বর্তমান ইরান) কবি ফেরদৌসী দ্বারা লিখিত শাহনামা পাণ্ডুলিপি অন্যতম। প্রতিষ্ঠার পর থেকে কলেজটি তার শিক্ষার্থীদের জন্য থাকার ব্যবস্থা করে আসছে।

বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কর্পস প্রতিষ্ঠার পর, বিএনসিসি সরকারি সা’দত কলেজে আত্মপ্রকাশ করে। ইউনিটের প্রথম পিইউও মোঃ আব্দুল মজিদ এবং প্রথম সিইউও মোঃ নবি হায়দার বাদল। সেই দিক থেকে, সা’দত কলেজ বিএনসিসির ইউনিটটি অনেক পরিবর্তনের মাধ্যমে আধুনিকীকরণ করেছে এবং ১ আগস্ট ২০১৮ সালে বিএনসিসি মহিলা প্লাটুনের আগমনের মাধ্যমে সা’দত কলেজের ক্যাডেটরাদেশ ও জাতির কল্যাণে উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড গুলোতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হয়েছে। ইউনিটটি ভবিষ্যতে দ্বিতীয় শ্রেণীর স্বয়ংসম্পূর্ণ সামরিক ইউনিট হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার আশা করে।

সা’দত কলেজের শিক্ষার্থীদের সুবিধাজনক আবাসনের জন্য রয়েছে ৬টি হল। পুরুষদের জন্য ৪ টি এবং অন্য ২ টি মহিলাদের জন্য। পুরুষ শিক্ষার্থীদের জন্য হলগুলি হল:

১.ওয়াজেদ আলী খান পন্নী হল

২.ইব্রাহিম খান হল

৩.সোম্মান হল

৪.উত্তরা হল

এবং মহিলা শিক্ষার্থীদের জন্য হলগুলি হল:

১.ফজিলাতুন্নেসা হল

২.ছাত্রীনিবাস হল

এছাড়াও, মহিলা শিক্ষার্থীদের জন্য আবাসন বৃদ্ধির জন্য আরও পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

বিডি/এন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement