মোহাম্মদপুরে কিশোর গ্যাংয়ের সংঘর্ষ, নিহত ২
Published : ১৪:৩৩, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে কিশোর গ্যাংয়ের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ২ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন।
শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন-নাসির বিশ্বাস (৩০) ও মুন্না (২২)।
এর মধ্যে মুন্নাকে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ও নাসিরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নিহত মুন্নার গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর গলাচিপা এলাকায়। তবে তিনি নানীর পরিবারের সঙ্গে মোহাম্মদপুরের শঙ্করে থাকতেন। বাবার নাম বাবুল। মুন্নার আড়াই বছরের একটি মেয়ে রয়েছে।
নাসির মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার বালিগ্রামের শাহ আলম বিশ্বাসের ছেলে। রায়েরবাজার বারৈইখালী এলাকায় পরিবারের সঙ্গে থাকতেন।
স্থানীয়রা জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রায়ের বাজার এলাকার কিশোর গ্যাং লিডার এলেক্স ইমনের নেতৃতে কিশোর গ্যাং গ্রুপের দেড় শতাধিক সদস্য কবরস্থানের ভেতর থেকে ৩/৪ জনকে ধরে নিয়ে আসে আজিজ খান রোডে।
এ সময় ৩ জনকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। কিছুক্ষণের মধ্যে নাছির ও মুন্না ঘটনাস্থলেই মারা যায়। বাকি কয়েকজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
এ ঘটনায় শাহীন নামে এক যুবকসহ আরও প্রায় ৮-১০ জনকে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয়রা আরও জানান, কিশোর গ্যাং চক্রের মূলহোতা এলেক্স ইমন এই এলাকায় চুরি, ছিনতাই, মাদক ব্যবসা ও চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত। এর আগেও বেশ কয়েকজনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
সম্প্রতি র্যাবের সোর্স হিসেবে কাজ শুরু করে পুরো এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব তৈরি করে রেখেছে।
নাসিরকে হাসপাতালে নিয়ে আসা শাওন আহমেদ বলেন, আমি আর নাসির দুজনে মোটরসাইকেলে যাচ্ছিলাম। নাসির সাদেক খান আড়তের সামনে নেমে তিন রাস্তার মোড়ে যাওয়ার সময় দেখি ধারালো অস্ত্র নিয়ে একটি গ্রুপ দৌড়াদৌড়ি করছে।
তারা পেছন থেকে তাকে এলোপাতাড়ি কোপানো শুরু করে। এর মধ্যে নাসির মোটরসাইকেল থেকে নেমে দৌড় দিলে তাকে ধরে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে।
আক্রমণকারীরা তাকে জবাই করতে গেলে আমি একজনকে ধরে ফেলি। তখন দুজনেই পড়ে যাই।
ঘটনাস্থলে পুলিশ আসলে তারা পালিয়ে যায়। পরে নাসিরকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতে মারা যায়। নাসির রাজমিস্ত্রির কাজ করত।
নিহতের নাসিরের বড় ভাই ইসলাম বিশ্বাস বলেন, নাসির নির্মাণাধীন কাজে লেবার সুপারভাইজারের কাজ করতো। বিকেলে বাসা থেকে বের হলে খবর পাই, সন্ত্রাসীরা তাকে কুপিয়েছে। পরে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মুন্নার বাবা বাবুল বলেন, ৯ মাস বয়েসে মুন্নার মা মারা গেলে নানীর সঙ্গে মোহাম্মদপুর শঙ্কর এলাকা থাকতে শুরু করে। সেখানেই বড় হয়ে বিয়ে করেছে। তার আড়াই বছরের একটি মেয়ে রয়েছে।
তিনি বলেন, মুন্নার বয়স ৫ বছর হলে তিনি গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীতে বিয়ে করেন। সেখানে আরও দুটি সন্তান হয়। তবে মুন্নার সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ ছিল।
একদল লোক তাকে কুপিয়েছে এমনটা শুনে হাসপাতালে গিয়ে মৃত অবস্থায় দেখতে পান। তবে কী কারণে মেরেছে, সেটি বলতে পারেননি।
মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী ইফতেখার হাসান বলেন জানান, ২ গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে মুন্না ও নাসির নামে দুইজন নিহতের খবর পেয়েছি।
মুন্নার নামে মারামারিসহ ৭-৮টি মামলা রয়েছে। নাসিরের বিষয়ে খোঁজ পাইনি। কী কারণে হত্যার ঘটনা ঘটেছে তদন্ত চলছে।
বিডি/ও