গোপালগঞ্জে সাংবাদিক নির্মল সেনের মৃত্যুবার্ষিকী পালিত
Published : ২২:৪৩, ৮ জানুয়ারি ২০২৫
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় বিশিষ্ট সাংবাদিক, কলামিষ্ট, বাম রাজনীতির পুরোধা, মুক্তিযোদ্ধা নির্মল সেনের ১২তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। বুধবার (৮ জানুয়ারি) সকালে সরকারি কোটালীপাড়া ইউনিয়ন ইনস্টিটিউশনের হলরুমে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক হোসেন শহীদ মজনু।
প্রেসক্লাব কোটালীপাড়া’র সভাপতি এইচ এম মেহেদী হাসানাতের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রফেসর গৌরাঙ্গ লাল চৌধুরী, প্রফেসর কার্তিক চন্দ্র বিশ্বাস, সরকারি কোটালীপাড়া ইউনিয়ন ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক হিমাংশু কুমার পান্ডে, কবি মিন্টু রায়, প্রেসক্লাব কোটালীপাড়া’র সাধারণ সম্পাদক গৌরাঙ্গ লাল দাস, সাংবাদিক রতন সেন কংকন, মনিরুজ্জামান শেখ জুয়েল বক্তব্য রাখেন।
সংবাদপত্র ও সাংবাদিকতা জগতের এক উজ্জল নক্ষত্র, বিশিষ্ট সাংবাদিক, কলামিস্ট, বাম রাজনীতির পুরোধা, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক নির্মল সেন ১৯৩০ সালের ৩ আগষ্ট গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া উপজেলার দিঘীরপাড় গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত হিন্দু পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তার বাবার নাম সুরেন্দ্রনাথ সেন গুপ্ত ও মাতার নাম লাবন্য প্রভা সেন গুপ্ত। পাঁচ ভাই ও তিন বোনের মধ্যে নির্মল সেন ছিলেন পঞ্চম।
নির্মল সেনের রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনের মাধ্যমে স্কুল জীবন থেকে। কলেজ জীবনে তিনি অনুশীলন সমিতির সক্রিয় সদস্য ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি আরএসপিতে যোগ দেন। দীর্ঘ দিন তিনি শ্রমিক কৃষক সমাজবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। রাজনীতি করতে গিয়ে নির্মল সেনকে জীবনের অনেকটা সময় জেলে কাটাতে হয়েছে।
নির্মল সেন দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় সাংবাদিকতার মধ্যে দিয়ে সাংবাদিকতার জীবন শুরু করেন ১৯৫৯ সালে। তার পর দৈনিক আজাদ, দৈনিক পাকিস্তান, দৈনিক বাংলা পত্রিকায় সাংবাদিকতা করেন। তিনি বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন।
লেখক হিসেবেও নির্মল সেনের যথেষ্ট সুনাম রযেছে। তার লেখা “পূর্ব পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ”, “মানুষ সমাজ রাষ্ট্র”, বার্লিন থেকে মস্কো, মা জন্মভূমি, স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই ও আমার জবানবন্ধি উল্লেখযোগ্য।
২০০৩ সালে তার ব্রেন স্ট্রোক হয়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এসময় আওয়ামী লীগসহ ১১ দল সাড়ে চার লাখ, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া সরকারে থাকা অবস্থায় পাঁচ লাখ ও বিভিন্ন পেশাজিবী সংগঠন তার চিকিৎসার জন্য অর্থ সহায়তা দেয়। ওই টাকা দিয়ে তাকে সিঙ্গাপুর মাউন্ট এলিজাবেধ থ্রি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু ৫৯ দিন চিকিৎসার পর টাকা না থাকায় চিকিৎসা শেষ না করেই তাকে দেশে ফিরে আসতে হয়।
সাহসী এ সাংবাদিক রোগাক্রান্ত হয়ে দীর্ঘ দিন যাবৎ বিনা চিকৎসায় ভূগেছেন। অর্থ সংকটে তার চিকিৎসাও প্রায় বন্ধ ছিল। ২০১৩ সালের ৮ জানুয়ারি তিনি রাজধানী ঢাকার ল্যাবএইড হাসপাতালে ৮৩ বছর বয়সে পরলোক গমন করেন।
বিডি/এন