ফ্যাসিস্ট বিদায় নিলেও ফ্যাসিবাদ রয়ে গেছে: জামায়াত আমির

ফ্যাসিস্ট বিদায় নিলেও ফ্যাসিবাদ রয়ে গেছে: জামায়াত আমির

নীলফামারি প্রতিনিধি

Published : ০৮:১০, ২০ এপ্রিল ২০২৫

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, জাতির দুর্বার আন্দোলনে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট বিদায় নিলেও দেশে এখনো ফ্যাসিবাদ রয়ে গেছে। শনিবার (১৯ এপ্রিল) সন্ধ্যায় নীলফামারীর জলঢাকায়  অনুষ্ঠিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জলঢাকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে উপজেলা জামায়াত এ জনসভার আয়োজন করে। জনসভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি ও রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের পরিচালক মাওলানা আব্দুল হালিম।

শফিকুর রহমান বলেন, হাসিনা পালিয়ে গেলেও তার দোসররা রাষ্ট্রের সর্বস্তরে বহাল তবিয়তে রয়েছে। এ সিস্টেম বহাল থাকলে নির্বাচন হলে জাতির ঘাড়ে আবারও ফ্যাসিস্টরা জেঁকে বসবে, যা জাতি কখনোই প্রত্যাশা করে না। তাই নির্বাচন ব্যবস্থাসহ প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে সংস্কার এবং বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সব অপকর্মের বিচার না হওয়া পর্যন্ত কোনো নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না।

জামায়াত আমির  বলেন, হাসিনা আওয়ামী লীগ সোনার বাংলা গড়ার কথা বলে দেশকে শ্মশানে পরিণত করেছিলেন। অধিকারের কথা দূরে থাক, সাধারণ বাকস্বাধীনতাও কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। সবচেয়ে বেশি নির্যাতন চালানো হয়েছে জামায়াতে ইসলামীর ওপর। আমাদের ১১ জন শীর্ষ নেতাকে প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে জুডিসিয়াল কিলিংয়ের মাধ্যমে হত্যা করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ কখনোই বাংলাদেশ ও এর জনগণকে ভালোবাসেনি। বরং বসন্তের কোকিলের মতো সময় সুযোগে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করেছে। ভারতের প্রেসক্রিপশনে ক্ষমতায় এসেই বিডিআর হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে ৫৭ জন দেশপ্রেমিক, চৌকস ও সৎ সেনা কর্মকর্তাকে ঠাণ্ডা মাথায় হত্যা করেছে। ঘটিয়েছে শাপলা চত্বরের ঘটনা এবং সর্বশেষ ‘চব্বিশের বিপ্লবে’ নির্বিচারে গণহত্যা চালিয়েছে।

জামায়াত আমির  আরও বলেন, জনগণের মুখোমুখি হওয়ার ভয়েই শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করেছেন। অথচ আমাদের নেতারা নিশ্চিত ফাঁসির মুখেও দেশ ছেড়ে যাননি। নিষ্পাপ মানুষগুলোকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে, এখনও অনেকে কারাবন্দি। এ সময় জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের দ্রুত মুক্তি দাবি করেন তিনি।

শফিকুর রহমান বলেন, আয়না ঘরের মতো লোমহর্ষক অমানবিক নির্যাতনের হোতাদের দেশের মানুষ ঘৃণা করে। তাদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দৃশ্যমান না হওয়া পর্যন্ত দেশের মানুষ কোনো নির্বাচন মেনে নেবে না। আমরা আর কোনো চাঁদাবাজের রাজত্ব দেখতে চাই না। কোনো পরনির্ভরশীল রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে পরিচিত করতে চাই না। বরং আগামীর বাংলাদেশ হবে কুরআনের আলোকে গড়া একটি সমৃদ্ধ কল্যাণ রাষ্ট্র।

জামায়াত আমির বলেন, যুবসমাজ আত্মপরিচয়ে উজ্জীবিত হয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর জন্য প্রস্তুত হোক। আমরা যদি দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পাই, তবে প্রথমেই শিক্ষা ব্যবস্থাকে কর্মসংস্থানমুখী করে গড়ে তুলব, যাতে কেউ সার্টিফিকেট নিয়ে বেকার না থাকে। নারীরাও তাদের যোগ্যতা ও ইচ্ছার ভিত্তিতে রাষ্ট্রের সর্বস্তরে নিজস্ব স্থান করে নিতে পারবে।

জনসভায় আরও বক্তব্য রাখেন টিম সদস্য আব্দুর রশিদ, জেলা আমির অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুস সাত্তার, নায়েবে আমির অধ্যাপক ডা. খায়রুল আনাম, সেক্রেটারি অধ্যাপক মাওলানা আন্তাজুল ইসলাম। জনসভায় সভাপতিত্ব করেন জলঢাকা উপজেলা আমির মাস্টার মোখলেছুর রহমান।

এনই

শেয়ার করুনঃ
Advertisement