শীত নিবারণ করতে পারছে না উত্তরাঞ্চলের ছিন্নমূল মানুষ

শীত নিবারণ করতে পারছে না উত্তরাঞ্চলের ছিন্নমূল মানুষ

রংপুর প্রতিনিধি:

Published : ২৩:৫০, ২ জানুয়ারি ২০২৫

পঞ্চগড়. ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, নীলফামারী ও রংপুরে পৌষের দ্বিতীয়ার্ধে এসে শীতের তীব্রতা বেড়েছে। বিপাকে পড়েছে শ্রমজীবি মানুষ। গরম কাপড়ের অভাবে শীত নিবারণ করতে পারছে না ছিন্নমূল মানুষ। 

শীতের তীব্রতা বাড়ার সাথে সাথে দূর্ভোগ বেড়েছে দিনমজুরসহ খেটে খাওয়া মানুষের। শরীরে মোটা কাপড় না থাকলেও জীবিকার তাগিদে ঘর থেকে বের হয়ে শীতে থরথর করে কাঁপছে। উত্তরের জেলাগুলোতে শীত অনুভূত হচ্ছে বেশি। ঘন কুয়াশার সঙ্গে বইছে হিম বাতাস। দিনের বেশির ভাগ সময় সূর্যের দেখা মিলছে না। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে শ্রমজীবি মানুষ। 

রংপুরসহ উত্তরের জেলাগুলোতে আরও ২/৩ দিন শীতের তীব্রতা থাকতে পারে বলে রংপুর আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে। আগামী সপ্তাহে তাপমাত্রার উন্নতি হলেও ফের মৃদু শৈত্যপ্রবাহের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। 

রংপুর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মোস্তাফিজার রহমান বলেন, ঘন কুয়াশা ও বাতাসের আর্দ্রতা বৃদ্ধির কারণে উত্তরের জেলাগুলোতে ঠান্ডার অনুভূতি বেড়েছে। দিনের বেশির ভাগ সময় সূর্যের দেখা মিলছে না। 

তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার রংপুরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর উত্তরাঞ্চলের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে দিনাজপুরে ১০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তীব্র শীতে বেশি বিপাকে পড়েছে শ্রমজীবী মানুষ। কুয়াশা আর হিম বাতাস তাদের জীবনযাত্রা প্রায় অচল হয়েছে। 

শীতে গ্রাম ও চরাঞ্চলের অবস্থা আরও করুণ। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর ইউনিয়নের মেহেদী হাসান বলেন, গত তিন দিন ধরে তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। রাতে বৃষ্টির মতো কুয়াশা ঝরে। পরিবারের ৪ সদস্যের ভরণপোষণে বাধ্য হয়েই ঠান্ডার মধ্যে রিক্সা চালাতে হচ্ছে। রাস্তায় মানুষ কম থাকায় আয় তেমন হচ্ছে না। কনকনে ঠান্ডায় সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বয়স্করা। 

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ধারণ ক্ষমতার ৩ গুণ বেশি রোগী ভর্তি রয়েছে। এক সপ্তাহে দেড় হাজারের বেশি শিশু ও বয়স্ক রোগী ঠান্ডাজনিত রোগের চিকিৎসা নিয়েছেন। 

আবুল কাশেম নামে এক ব্যক্তি বলেন, শিশু ওয়ার্ডে গাদাগাদি করে রোগীদের চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। অনেকে বারান্দায় বা করিডোরে শুয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। রোগীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় অক্সিজেন শেয়ার করতে হচ্ছে। 

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. এস এম নুরুন্নবী বলেন, শীতের প্রকোপ বেশি থাকায় ঠান্ডাজনিত রোগ নিয়ে শিশু ও বয়স্করা হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। গত সপ্তাহ থেকে রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করে। আমরা সাধ্যমত সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। 

এদিকে, শীত নিবারণের জন্য আগুন পোহাতে গিয়ে দগ্ধ রোগীর সংখ্যা বেড়েছে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে। বর্তমানে ৪১ জন দগ্ধ রোগী চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন। তাদের মধ্যে বেশির ভাগ আগুন পোহাতে গিয়ে দগ্ধ হয়েছে। 

রংপুর জেলা প্রশাসক রবিউল ফয়সাল বলেন, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। শীতের প্রকোপ বাড়ায় এ কার্যক্রম আরও জোরদার করা হবে।

বিডি/ও

শেয়ার করুনঃ
Advertisement