টানা বৃষ্টিতে নিত্যপণ্যের বাজার চড়া

টানা বৃষ্টিতে নিত্যপণ্যের বাজার চড়া

নিজস্ব প্রতিবেদক:

Published : ১৩:০৯, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

আজ ভোর থেকে বৃষ্টি না হলেও গত ২ দিন রাজধানীতে বৃষ্টি ঝরেছে। টানা বৃষ্টির কারণে নিত্যপণ্যের বাজারে সরবরাহ কমেছে। এতে বাড়তে শুরু করেছে শাক-সবজি, মাছ-মাংসসহ অন্যান্য পণ্যের দাম।

সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) কারওয়ান বাজার ও নিউমার্কেটসহ রাজধানীর বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত ২ দিনের বৃষ্টির কারণে পণ্য আসতে পারেনি। এছাড়া সম্প্রতি বৃষ্টি ও বন্যার কারণে ফসল, মাছ ও মুরগির খামার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে বাজারে কমে গেছে পণ্যের সরবরাহ। ফলে দাম কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে।

বাজারে আজ মানভেদে প্রতি কেজি গোল বেগুন ৮০-১০০ টাকা, করলা ৭০-৮০, ঢ্যাঁড়শ ৫০, বরবটি ৬০, মুলা ৫০, লতি ৮০, কহি ৬০ টাকা ও পটোল ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি পেঁপে ৩০ টাকা, কচুরমুখী ৬০-৮০,  টমেটো ১৬০, শিম ২২০ ও শসা বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়।

প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকায়, আর প্রতি পিস লাউয়ের জন্য গুনতে হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা।

বাজারে লালশাকের আঁটি ২০ টাকা, পাটশাক ১৫, পুঁইশাক ৩০, লাউশাক ৪০, মুলাশাক ২০, ডাটাশাক ২০, কলমিশাক ১০-১৫ টাকা ও পালংশাক ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা আনিস বলেন, কেজিতে ৫-১৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে শাক-সবজির দাম। সম্প্রতি বন্যায় ফসলের ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। তাছাড়া গত ২ দিনের বৃষ্টিতে শাক-সবজি কম এসেছে। যার প্রভাবে দাম বাড়ছে।

বাজারে বেড়েছে কাঁচা মরিচের দাম

পাইকারি পর্যায়ে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২০০-২২০ টাকায়, খুচরা পর্যায়ে যার জন্য গুনতে হচ্ছে ২৮০-৩০০ টাকা।

বিক্রেতারা বলছেন, গত ২ টানা বৃষ্টিতে ক্ষেতে নষ্ট হয়ে গেছে কাঁচা মরিচ। এতে বাজারে সরবরাহ কমায় দাম ঊর্ধ্বমুখী।

ঊর্ধ্বমুখী আদা, রসুন ও পেঁয়াজের দাম

বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ১১০-১২০ টাকা, ভারতীয় ১১০-১১৫ টাকা ও পাকিস্তানি পেঁয়াজ ৯৫-১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বিক্রেতারা বলছেন, শুল্কহার কমায় ও মূল্যহার ছাড়ে ভারতীয় পেঁয়াজের দাম কমবে। এতে কমতে পারে দেশি ও অন্যান্য বিদেশি জাতের পেঁয়াজের দামও।

তবে ভারত থেকে পেঁয়াজ আসতে এখনও দেরি আছে। অন্তত এক থেকে দুসপ্তাহ সময় লাগবে। তখন দাম কমতে পারে।

বাজারে চড়া ডিম ও মুরগির দাম

প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৭০-১৮০ টাকা, সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৪০-২৬০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৪০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ২৮০ টাকায়। এছাড়া জাতভেদে প্রতি পিস হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৫৫০-৬০০ টাকায়।

বাজারে মুরগির প্রতি ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫৫-১৬০ টাকা, আর সাদা ডিম ১৫০ টাকায়। প্রতি ডজন হাঁসের ডিম ২৩০ টাকা ও দেশি মুরগির ডিম ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে বেড়েছে প্রায় সব ধরনের মাছের দাম

প্রতি কেজি রুই বিক্রি হচ্ছে ৩৬০-৩৮০ টাকায়। চাষের পাঙাশ ২০০-২২০ টাকায়, তেলাপিয়া ২২০-২৫০ টাকা, চাষের কৈ ২৪০-২৮০ টাকায়, চাষের শিং প্রতি কেজি ৫৫০-৬০০ টাকায়, কোরাল ৭৫০ টাকা, টেংরা ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, বোয়াল ৭৫০ টাকা, আইড় ৭৫০-৮০০ টাকা, পাবদা প্রতি কেজি ৫০০-৫৫০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

ভরা মৌসুমেও ইলিশের দাম আকাশ ছুঁই ছুঁই।

দেড় কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২২০০-২৩০০ টাকায়। এক কেজি ওজনের ইলিশ ১৭০০-১৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৮০০-৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১৫০০-১৬০০ টাকা ও ৫০০-৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের জন্য গুনতে হচ্ছে ১২০০-১৩০০ টাকা।

মাছের দাম বাড়ার কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, বন্যায় বেশকিছু অঞ্চলে চাষিদের মাছ ভেসে গেছে। ফলে বাজারে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় মাছের দাম কিছুটা বাড়তি।

নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত বাজার মনিটরিংয়ের দাবি ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়েরই।

ক্রেতারা বলছেন, নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হয় না। এতে বিক্রেতারা ইচ্ছে মতো দাম বাড়ানোর সুযোগ পান।

বিক্রেতাদের দাবি, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ইচ্ছে মতো দাম বাড়াচ্ছে। বাজারে নিয়মিত অভিযান চালালে তাদের দৌরাত্ম্য কমবে।

বিডি/ও

শেয়ার করুনঃ
Advertisement