বর্ষায় মুগ্ধতা ছড়ায় চালতা ফুল

বর্ষায় মুগ্ধতা ছড়ায় চালতা ফুল

ফিচার ডেস্ক

Published : ১৫:১৯, ৬ জুলাই ২০২৪

আষাঢ়-শ্রাবণ দুই মাস বর্ষাকাল। এ সময় চালতা ফুলের দেখা মেলে। একসময় রাস্তার পাশে, পুকুরপাড়ে বা বাড়ির আঙিনায়, বনে-বাঁদাড়ে এ গাছের দেখা মিলতো। এখন সে দৃশ্য কমই চোখে পড়ে।

জানা যায়, চালতার বৈজ্ঞানিক নাম Dillenia indica। ইংরেজিতে Dillenia indic নামে পরিচিত। শ্রীলঙ্কা, চীন, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়াসহ বেশ কিছু দেশে এ গাছ জন্মে। এটি বিশেষত ভারতবর্ষীয় উদ্ভিদ হিসেবে পরিচিত।

বর্ষায় দেখা মিললেও চালতা ফুলের বিচরণ চলে শীতকাল পর্যন্ত। সুগন্ধি এ ফুলে থাকে ৫টি পাপড়ি। পাপড়ি থেকেই ফল হয়। এ ফুল সাদা রঙের। ফোটার পর মৌমাছি বসে। মৌমাছি মধু আহরণ করতে এক ফুল থেকে অন্য ফুলে বসে চালতার পরাগায়ন ঘটালে আস্তে আস্তে ফলে পরিণত হয়।

চালতা ফুল রাতে ফোটে। সাদা, সুন্দর ও সুগন্ধযুক্ত চালতা ফুলের ব্যাস ১৫-১৮ সেন্টিমিটার। ফুল ফোটার একদিনেই ফুলের পাপড়ি ঝরে পড়ে ফলে পরিণত হয়। ভেষজ গুণে সমৃদ্ধ এ ফল পাকে বর্ষার পর, থাকে শীতকাল পর্যন্ত। বছরে একবারই ফল ধরে। ফলের ওজন হয় ২০০-৫০০ গ্রাম।

ফলটি কাঁচাও খাওয়া যায়। এ ফলের আচার সব বয়সের মানুষের কাছে খুবই প্রিয়। ওষুধি গুণসম্পন্ন মাঝারি ও চিরহরিৎ জাতীয় উদ্ভিদ। উচ্চতা হয় ১৫ মিটার পর্যন্ত। লাল রঙের চকচকে বাকল থাকে। পাতার কিনারায় খাঁজকাটা। শিরা উঁচু সমান্তরাল।

কেবল ফলের উপযোগিতার কারণেই সুন্দর এ ফুল আমাদের কাছে অনেকটাই উপেক্ষিত। চারপাশের গাছগাছালির ভেতর আমাদের অজান্তেই ফুলটি তার অপার সৌন্দর্য বিলিয়ে যায়। হঠাৎ এ ফুলের দেখা পাওয়া অনেকটাই যেন আবিষ্কারের মতো।

রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশ চালতা ফুল নিয়ে লিখেছিলেন- ‘আমি চলে যাবো বলে, চালতা ফুল কি আর ভিজিবে না শিশিরের জলে, নরম গন্ধের ঢেউয়ে?’ 

ওষুধি গুণাগুণসম্পন্ন গাছটির ফুল দেখতে অত্যন্ত সুন্দর, সুগন্ধযুক্ত এবং পরিবেশবান্ধব। চালতায় আছে প্রচুর ভিটামিন-সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। ফলে স্বাস্থ্যহানিতেও যথেষ্ট উপকার করে। আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে এ গাছ লাগানো প্রয়োজন। পরিবেশবান্ধব বিপন্ন এ গাছটিকে রক্ষা করা জরুরি।
 

বিডি/ও

শেয়ার করুনঃ
Advertisement