ইউক্যালিপটাস কি শুধুই ক্ষতিকর?

ইউক্যালিপটাস কি শুধুই ক্ষতিকর?

নুসরাত জাহান ঐশী

Published : ১৫:২২, ৬ জুলাই ২০২৪

সম্প্রতি জলবায়ুর পরিবর্তন তীব্র তাপপ্রবাহের জেরে ইউক্যালিপটাস গাছের ক্ষতিকর দিকগুলো সবার সামনে উঠে এসেছে। নিয়ে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকাসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে। যার বদৌলতে গাছটির অনেক নেতিবাচক দিক নিয়ে সচেতনতা বেড়েছে।

ইউক্যালিপটাস গাছ স্থানীয়ভাবে আকাশমণি নামে পরিচিত। সৌন্দর্য বর্ধন, বনায়ন মূল্যবান কাঠের জন্য ১৯৬০ সাল থেকে বাংলাদেশে মূলত পথতরু হিসেবে গাছ রোপিত হয়ে আসছে।

গাছটির বৈজ্ঞানিক নাম Eucalyptus obliqua এর ৫০০ থেকে শতাধিক প্রজাতি আছে বলে মতভেদ রয়েছে। লম্বা মসৃণ কাণ্ড বিশিষ্ট ইউক্যালিপটাস গাছের পাতা খুবই চিকন ধরনের হয়, যা রোদে ছায়া সৃষ্টি করতে পারে না।

অস্ট্রেলিয়া থেকে আগত গাছটি লোকালয় এবং কৃষি জমির জন্য অসুবিধার কারণ হলেও এর যে একেবারেই কোনো উপকারী দিক নেই, তা কিন্তু নয়। আজকে ইউক্যালিপটাস গাছের কিছু উপকারিতা সম্পর্কে জানবো।

পরিবেশের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে আকাশমণি গাছ। দ্রুত বর্ধনশীল গাছের কাঠ বেশ মজবুত মূল্যবান। ফলে এর ক্ষতিকর দিক জেনেও অনেকে আর্থিক লাভের আশায় গাছ রোপণ করে থাকেন। গাছের কাঠ জাহাজ নির্মাণ কাগজ তৈরিসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হয়।

এর বাকল থেকে এক ধরনের তেল পাওয়া যায়, যা ওষুধ অ্যান্টিবায়োটিক তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। তেল মসলা সুগন্ধি তৈরির কাজেও ব্যবহার করা হয়। সর্দি সারাতেও সাহায্য করে তেল।

গাছের পাতা কাশি, ক্ষত আলসার নিরাময়ে কাজ করে। মুখের ব্যাকটেরিয়া দূর করতে সাহায্য করে বলে ইউক্যালিপটাস মাউথওয়াশ তৈরিতেও ব্যবহার করা হয়। গাছের পাতায় থাকা টক্সিন থেকে মশা বা বিভিন্ন কীটপতঙ্গ নাশক তৈরি হয়।

গবেষণা পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, ইউক্যালিপটাস গাছ যতটুকু উঁচু হয় তার শিকড়গুলো মাটিতে ততদূরে চতুর্দিকে ছড়িয়ে যায়। ফলে গাছ ভূমিধস রোধে সাহায্য করে। কষ্টসহিষ্ণু গাছ দাবানলের আগুনে পোড়ার পর পুনরুত্থিত হতে সক্ষম।

অযত্নে বেড়ে উঠতে পারে ইউক্যালিপটাস গাছ। আবহাওয়াগত অভিযোজন ক্ষমতার কারণে গাছ প্রায় সব মহাদেশেই দেখতে পাওয়া যায়।

উল্লেখ্য, বর্তমানে বিজ্ঞানীদের গবেষণায় জানা গেছে, অন্যান্য গাছের মতো ইউক্যালিপটাস পরিবেশের জন্য তেমন উপকারী নয়। বরং উল্টো অনেক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

গাছ অতিরিক্ত পানি শোষণ করার ফলে মাটির উর্বরা কমিয়ে ফসলি জমির ক্ষতি করে। এছাড়া দূষিত বাতাস নির্গমন করায় মানুষের শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে। সূত্র: বাংলাপিডিয়া, উইকিপিডিয়া গুগল।

বিডি/এন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement