রাতের রানির দেখা মিললো গোপালগঞ্জে

রাতের রানির দেখা মিললো গোপালগঞ্জে

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি:

Published : ১৬:৫৩, ১৩ জুলাই ২০২৪

নাইট কুইন’কে বলা হয় ‘রাতের রানী’। মনোহরিণী সুবাস, স্নিগ্ধ পাপড়ি আর দুধসাদা রঙের এই ফুলটি ফোটে সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবে। একটি ফুলের জন্য অপেক্ষা করতে হয় বছরের পর বছর।

দীর্ঘ এক বছর পর দ্বিতীয়বারের মত “নাইট কুইন” ফুলের পেলেন গোপালগঞ্জ শহরের বাসিন্দা সাকায়েত হোসেন দিপুর। এ ফুল ফোটার খবরে “নাইট কুইন” দেখতে রাতেই তার বাসায় ভীড় করে নানা বয়সের মানুষ। এই ফুল দেখে খুশি তারা।

ক্যাকটাস প্রজাতির এই “নাইট কুইন” ফুলকে নিশিপদ্মও বলা হয়ে থাকে। এই নাইট কুইন ফুল আমেরিকার দক্ষিণাঞ্চল ও মেক্সিকো অঞ্চলের হলেও বাংলাদেশের অনেক পুষ্পপ্রেমীদের বাড়িতে এ ফুলের দেখা মেলে।

শুক্রবার (১২ জুলাই) রাতে সরিজমিনে সেখানে গিয়ে জানা গেছে, গোপালগঞ্জ শহরতলীর বেদগ্রাম দক্ষিণপাড়া এলাকার বাসিন্দা সাকায়েত হোসেন দিপু। নানা ধরনের ফুল আর ফলের গাছ দিয়ে বাড়িতে সাজিয়ে তুলেছেন ছোটখাট একটি বাগান। 

গত ২০২০ সালে ঢাকা থেকে বিরল প্রজাতির “নাইট কুইন” ফুলের চারা যোগাড় করে বাগানে রোপণ করেন তিনি। এরপর দীর্ঘ ৩ বছর নিজ সন্তানে মত পরিচর্যা করলে ২০২৩ সালে তার গাছে ফোটে একটি মাত্র “নাইট কুইন” ফুল। এরপর দীর্ঘ এক বছরের পরিচর্যা শেষে শুক্রবার রাতে তার গাছে আবারো দেখা মেলে এ ফুলের। এবার একটি বা দুটি নয়, ফুটেছে তিনটি ফুল।

রাতের শুরুতে একটু একটু করে খোলস ছেড়ে লম্বা ডগার আগায় গোলাকৃতির মতো কলি থেকে আস্তে আস্তে পাপড়ি মেলে নাইট কুইন। এর মাঝখানে পরাগ ছড়ানো সাদা রং-এর পাপড়ি রাত যত গভীর হয় ততই মেলতে থাকে আর উজ্জ্বলতা ছড়ায়। সুগন্ধও রাতের গভীরতার সাথে বিস্তৃত হতে থাকে।

“নাইট কুইন” যে রাতে নিজেকে মেলে ধরে প্রকৃতির কাছে, সে রাতেই নিজেকে শেষ করেই ঝরে যায়। কী যেন মাদকতা ছড়িয়ে দেয় ঝরে পড়তে পড়তে।

আবার একটি ফুলের জন্য অপেক্ষা করতে হয় বছরের পর বছর। তাই “নাইট কুইন” ফুল ফোটার খবরে সাকায়েত হোসেন দিপুর বাসায় এলাকাবাসীসহ দূর থেকে ফুলটি দেখতে আসেন নানা বয়সের মানুষ। 

বছরের একবার ফোটায় ছবি তোলার পাশাপাশি অনেকই মোবাইলে সেলফি তুলে ধরে রাখেন স্মৃতি হিসাবে।

“নাইট কুইন” ফুল দেখতে আসা বেদগ্রামের বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম বলেন, “নাইট কুইন” ফুল দেখাটাও ভাগ্যের ব্যাপার। কারণ এ ফুল দেখতে অপেক্ষা করতে হয় বছরের পর বছর। তাও আবার একটি রাতের জন্য। এই ফুলের ঘ্রাণ যেন বিমোহিত করে তোলে।

জেলা শহরের মান্দারতলার বাসিন্দা সজীব বিশ্বাস বলেন, প্রিয়তমার মুখের পর যদি কোন সৌন্দয্য থেকে থাকে, তবে সেটি হলো “নাইট কুইন”। এ গাছে তিনটি ফুল দেখলাম, দেখে খুব ভাল লাগছে। এর সৌন্দয্য আর ঘ্রাণ তাতে সবার বাসায় “নাইট কুইন” ফুল লাগানো উচিত।

ফুল বাগানের মালিক সাকায়েত হোসেন দিপু বলেন, নিজের সন্তানের মত “নাইট কুইন” ফুলের গাছটিকে পরিচর্যা করেছি। গত বছর একটি ফুল ফুটেছিল, এ বছর তিনটি ফুল ফুটলো। “নাইট কুইন” ফুল ফোটায় শুধু আমি না আমার স্ত্রী ও সন্তানরাও খুশি। তবে বেশি ভালো লাগছে এ ফুল ফোটার খবরে বিভিন্ন স্থান থেকে দেখতে আমার বাসায় আসছেন অনেকে। সবার বাসায় এ ফুলটি লাগানো উচিত। 

বিডি/ও

শেয়ার করুনঃ
Advertisement