মাল্টা চাষে সফল দিনাজপুরের স্বাধীন

মাল্টা চাষে সফল দিনাজপুরের স্বাধীন

রংপুর প্রতিনিধি:

Published : ১৮:০০, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলায় দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে মাল্টা চাষের পরিধি। নির্ভরতা কমছে বিদেশি ফলের ওপর। সাশ্রয়ী হচ্ছে দেশের টাকা।

বিদেশি ফল মাল্টা চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন উপজেলার মাহামুদুন্নবী স্বাধীন নামে এক শিক্ষিত বেকার যুবক। 

ডিগ্রি পাশ করে সোনার হরিণ সরকারি চাকরির পেছনে না ছুটে হিরার খনি কৃষিতে মনোযোগ দিনে ১০ বিঘা জমিতে গড়ে তুলেন মাল্টার বাগান। শুরুটা কঠিন হলেও বর্তমানে তিনি দেখছেন সফলতার মুখ। 

সরেজমিনে দেখা যায়, বাগানে সারিবদ্ধ মাল্টার গাছ। প্রতিটি গাছের সবুজ পাতার ফাঁকে ডালে ঝুলে রয়েছে আধপাকা মাল্টা। ফলের ভারে নুয়ে পড়েছে গাছের ডালপালা।

নবাবগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের রঘুনাথপুর গ্রামের কৃষক সাজু মিয়ার ছেলে মাহামুদুন্নবী স্বাধীনের মাল্টা বাগানে এমন চিত্রই চোখে পড়ে। মাল্টা চাষ করে স্বাধীন এখন সফল ও স্বাবলম্বী হয়েছে। 

২০১৮ সালে মাত্র ১৬ শতক জমিতে উপজেলা কৃষি অফিসের দেয়া পরীক্ষামূলক মাল্টা ফলের প্রদর্শনী চাষ দিয়ে শুরু করেন কৃষি খামার। ভালো ফলন ও ভালো দাম পাওয়ায় তাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।

নিজের জমি না থাকায় অন্যের জমি লিজ নিয়ে বর্তমানে ১০ বিঘা জমিতে গড়ে তুলেছেন তার কৃষি খামার। 

নবাবগঞ্জের মাল্টা চাষি মাহামুদুন্নবী স্বাধীন বলেন, নিরাপদ ফল উৎপাদনের লক্ষ্যে নিজেই বাড়িতে ভার্মি কম্পোস্ট সার তৈরি করেছি। রাসায়নিক সারের পরিবর্তে আমার কৃষি খামারে ব্যবহার করছি নিজের তৈরি ভার্মি কম্পোস্ট সার। ফলে আমার বাগানে উৎপাদিত হচ্ছে নিরাপদ ফল। 

চলতি বছরে ১৫ লক্ষ টাকার মাল্টা বিক্রয় করা হচ্ছে। সব খরচ বাদ দিয়ে এবারে ৬-৭ লক্ষ টাকা আয়ের আশা করছেন তিনি। গড়ে তার বাগানে সারা বছর ৬/৮ জন শ্রমিকের কর্ম সংস্থান হয়েছে। সরকারিভাবে আর্থিক সহায়তা পেলে ভবিষ্যতে তার বাগানটি পরিধি বৃদ্ধি ও নতুন নতুন প্রজাতির ফলের বাগান তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। 

তার এলাকাবাসী বলেন, মাহামুদুন্নবী স্বাধীন একজন সফল কৃষি উদ্যোক্তা। তার সফলতা এখন ছড়িয়ে পড়েছে। তার সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে নিজের জমিতে মাল্টা চাষ করার জন্য তারা স্বাধীনের কাছে পরামর্শ নিচ্ছেন অনেক যুবক। 

নবাবগঞ্জ উপজেলার উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আকতাবুর রহমান বলেন, মাহামুদুন্নবী স্বাধীন একজন সফল কৃষি উদ্যোক্তা। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। নিয়মিত দেওয়া হচ্ছে পরামর্শ ও সহযোগিতা। 

স্বাধীনের মত বেকার যুবকেরা কৃষি উদ্যোক্তা হিসেবে এগিয়ে এলে যেমন বেকারত্ব কমবে তেমনি কৃষি সেক্টর হবে আরও সমৃদ্ধ। চলতি বছর দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলায় ২০ হেক্টর জমিতে মাল্টা চাষ হচ্ছে। আগামীতে আরও বৃদ্ধি পাবে।

দিনাজপুর কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায়, জেলার উৎপাদিত মাল্টা এখন ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলাতে সরবরাহ করা হচ্ছে। এখানকার মাটি মাল্টা ফল চাষে উপযোগী হওয়ার কারণে প্রতি বছরই বাড়ছে মাল্টা চাষের পরিমাণ।

বিডি/ও

শেয়ার করুনঃ
Advertisement