ব্যাগ তৈরিই সাজিনা বেগমের সাফল্যের চাবি

ব্যাগ তৈরিই সাজিনা বেগমের সাফল্যের চাবি

রংপুর প্রতিনিধি:

Published : ১২:৫৮, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

পরিশ্রম আর চেষ্টা মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে পারে। নারী কিংবা পুরুষ ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ কোন বাঁধা হতে পারে না। প্রয়োজন শুধু মানুষের ইচ্ছা শক্তি ও সততা। 

একজন মানুষ নিজেকে দক্ষ ব্যক্তি হিসেবে গড়ে তুলে সততার সাথে কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে আর্থিক পরিবর্তন সাধান করতে পারে। এমন নারী সাজিনা বেগম (২৮)। 

বাজারের ব্যাগ তৈরি করে ভাগ্য খুলেছে গৃহবধূ সাজিনার। নিজের সঙ্গে স্বাবলম্বী করেছেন গ্রামের শতাধিক অবহেলিত নারীকেও।

হাঁস বিক্রির ১৬০০ টাকা পুঁজিতে শুরু এ ব্যবসা থেকে এখন প্রতিমাসে প্রায় অর্ধ লক্ষ টাকা আয় করছেন সাজিনা বেগম। 

জানা যায়, ২০০৮ সালে গাইবান্ধার পলাশবাড়ি উপজেলার বরিশাল ইউনিয়নের ভবানীপুর ডিলারপাড়া গ্রামের মোনারুলের সঙ্গে বিয়ে হয় সাজিনার। বিয়ের পর থেকে আর্থিক টানাপড়েন ছিল তাদের নিত্যসঙ্গী।

একদিন পাশের গ্রামে ব্যাগ তৈরি করতে দেখে তিনিও সিদ্ধান্ত নেন এ কাজ করার।

চিন্তায় সীমাবদ্ধ না থেকে ২০১৮ সালে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ডে প্রশিক্ষণ নিয়ে কাজ শুরু করেন সাজিনা। ঘরে মাত্র ১৬০০ টাকা দিয়ে শুরু করলেও পরে ঋণ নিয়ে কাজের পরিধি আরও বাড়াতে থাকেন।

সেই থেকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি গ্রামের গৃহবধূ সাজিনা বেগমকে। পর্যায়ক্রমে ব্যাগের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় গ্রামের অন্যান্য নারীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে ব্যাগ তৈরীর কাজে নিযুক্ত করেন।

একপর্যায়ে ব্যাগ তৈরির কারখানা গড়ে তুলেন সাজিনা। আর এ কাজে সবসময় পাশে ছিলেন স্বামী মোনারুল। 

সাজিনার এমন সফলতা ব্যাপক সাড়া ফেলেছে এলাকায়। গ্রামটি এখন অনেকের কাছে পরিচিতি লাভ করেছে ব্যাগের গ্রাম নামে। তার কারখানাতে তৈরি করা এসব ব্যাগ শুধু নিজ গাইবান্ধা জেলায় ছাড়াও রংপুর, বগুড়ায়, দিনাজপুরের হিলি, নীলফামারীর সৈয়দপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয়।

তবে ব্যাগের চাহিদা বেশি থাকলেও পুঁজি কম হওয়ায় আশানূরুপ উৎপাদন করতে পারছেন না সাজিনা।

ব্যাগ তৈরীর কারখানার শ্রমিক রাজু মিয়া বলেন, একজন পুরুষ যা করতে পারেনি, সাজিনা বেগম তা করে প্রমাণ করেছে। নারী-পুরুষ কোন কাজে বাঁধা না, প্রয়োজন শুধু মানুষের ইচ্ছা শক্তি। গ্রামে অসহায় নারী, প্রতিবন্ধী এমনকি আমি নিজেও কাজ করে এখন আয় করছি। 

নারী শ্রমিক সাজুনী আক্তার বলেন, এখন সংসার চালাতে পারি। দিনে ২০০-৩০০ টাকা আয় করছি। ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনার খরচ এখন আমিই বহন করি। 

সাজিনা বেগম বলেন, ব্যাগের চাহিদা বেশি থাকলেও পুঁজি কম হওয়ায় আশানূরুপ উৎপাদন করতে পারছি না। উৎপাদন বৃদ্ধি করতে পেলে গ্রাহকদের চাহিদা মেটানো সম্ভব। বাজারের ব্যাগ তৈরি তার সফল্যের চাবিকাটি। 

বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন (বিআরডিবি) পলাশবাড়ী উপজেলা সহকারী কর্মকর্তা মো. ফিরোজ কবীর বলেন, সাজিনা বেগমের ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।

বিডি/ও

শেয়ার করুনঃ
Advertisement