বাংলাদেশে এইচএমপিভি নিয়ে যা বললেন বিশেষজ্ঞরা
Published : ১৪:১৬, ৫ জানুয়ারি ২০২৫
কভিড মহামারির ধকল না কাটতেই নতুন বছরের শুরুতে এইচএমপিভি (হিউম্যান মেটানিউমো ভাইরাস) নতুন আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। কভিডের মতো সেই চীন থেকেই এইচএমপিভি আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। তবে বাংলাদেশে এই ভাইরাস নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
তারা বলছেন, এই ভাইরাসের উপস্থিতি অনেক আগে থেকে বাংলাদেশে রয়েছে। প্রতি শীত মৌসুমে এই ভাইরাসে এদেশের কিছু মানুষ আক্রান্ত হন এবং সুস্থ হয়ে ওঠেন। ভাইরাসটির আচরণ অনেকটা সাধারণ ফ্লুর মতোই।
আন্তর্জাতিক কিছু গণমাধ্যম জানাচ্ছে, এইচএমপিভির প্রাদুর্ভাব বেড়েছে চীন আর জাপানে। ইনফ্লুয়েঞ্জা ধাঁচের এই ভাইরাসে এরই মধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন অনেকে। ভাইরাসটি করোনার মতোই ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে বলে সতর্ক করেছেন কিছু বিশেষজ্ঞ। বেইজিং অবশ্য বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, কোনো ভয়েরও কারণ নেই। এমনকি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এখনো এ বিষয়ে কোনো সতর্কতা জারি করা হয়নি।
রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন পরিচালক অধ্যাপক ডা. মাহমুদুর রহমান এ বিষয়ে বলেন, ভাইরাসটি শ্বাসযন্ত্রে সংক্রমণ ঘটায় এবং বাতাসের মাধ্যমে ছড়ায়। তাই সতর্কতা হিসাবে সাধারণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললেই হবে। এতে আতঙ্কিত হওয়ার মতো কিছু নেই।
জানা গেছে, এই ভাইরাসে কেউ আক্রান্ত হলে সাধারণ সর্দি-কাশির মতোই উপসর্গ দেখা যায়। নাক দিয়ে লাগাতার তরল নির্গত, গলায় ব্যথা অনুভব হওয়া অর্থাৎ ফ্লু-এর মতো সমস্ত উপসর্গ। শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। এ ছাড়া যাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তারাও আক্রান্ত ও অসুস্থ হতে পারেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান ও বেসিক সায়েন্স ও প্যারাক্লিনিক্যাল সায়েন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মো. সাইফ উল্লাহ মুন্সী বলেন, এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা নেই।
প্রায় দুই দশক আগে এইচএমপিভি ভাইরাসের উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়া গেলেও এখন পর্যন্ত এর প্রতিষেধক টিকা আবিষ্কার হয়নি। চিকিৎসকরা বলছেন, করোনা মোকাবিলায় যেসব সতর্কতা নেওয়া হয়েছিল, একই পদক্ষেপে এই ভাইরাস থেকে নিরাপদে থাকা সম্ভব।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, অপরিষ্কার হাতে নাক-মুখ স্পর্শ না করা, আক্রান্ত ব্যক্তিদের থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা এবং জনসমাগম স্থানে মাস্ক ব্যবহারের মাধ্যমে নিরাপদ থাকা সম্ভব।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন অ্যান্ড রেফারেল সেন্টারের ভাইরোলজি বিভাগের প্রধান ডা. আরিফা আকরাম বলেন, গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনায় প্রায় দুই দশক আগেই রেসপিরেটরি প্যানেলে এই ভাইরাসের উপস্থিতি আমারা নিয়মিতভাবে পেয়েছি। আমাদের দেশে মানুষের শরীরে এই ভাইরাসের প্রতিরোধ ক্ষমতা রয়েছে।
বিডি/এন