যেসব দেশে ফেসবুক ব্যবহার অপরাধ

যেসব দেশে ফেসবুক ব্যবহার অপরাধ

আইসিটি নিউজ ডেস্ক

Published : ১৯:৫২, ২৮ জুলাই ২০২৪

ফেসবুক বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম। মেটার মালিকানাধীন ফেসবুকে কয়েকশ কোটি ব্যবহারকারী রয়েছে। প্রায় সব বয়সী মানুষই এই প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহার করছেন। দিনেরাতে সব সময় ফেসবুকে কোনো না কোনো ছবি, স্ট্যাটাস পোস্ট দিচ্ছেন। একটু পর পর গিয়ে দেখে নেন কত লাইক, কমেন্ট পড়লো।

ফেসবুক শুধু সময় কাটানোর জন্য নয়, অনেকের আয়ের উৎস। এখানে পেজ খুলে অনেকেই ব্যবসা করছেন, যা থেকে মাসে লাখ লাখ টাকা ঘরে বসেই আয় করতে পারছেন। তবে কিছুক্ষণ ফেসবুক থেকে দূরে থাকলেই কেমন হাঁসফাঁস লাগে অনেকের। সেখানে গত ১০ দিন ফেসবুক থেকে দূরে আছেন দেশের মানুষ। অনেকে হাঁপিয়ে উঠেছেন ফেসবুক স্ক্রল করতে না পেরে।

বিশ্বের কয়েকটি দেশে ফেসবুক নিষিদ্ধ। কেউ লুকিয়ে ব্যবহার করতে গেলেও কঠোর শাস্তির মুখে পড়তে হয়। সে দেশের কেউ এই প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহার করেন না।

চলুন জেনে নেওয়া যাক কেন এবং কোন কোন দেশে জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ফেসবুক নিষিদ্ধ: 

১) চীন

চীনের কেউ ফেসবুক ব্যবহার করেন না। ২০০৯ সাল থেকে চীনে ফেসবুক নিষিদ্ধ। জিনজিয়াং প্রদেশে ভয়াবহ দাঙ্গার পর থেকে কর্মীদের বিরুদ্ধে সরকারি ক্র্যাকডাউনের অংশ হিসেবে মেটা মালিকানাধীন ফেসবুক নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। চীনে বিদেশি মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের সীমাবদ্ধতা এবং বেসরকারি কন্টেন্টের সেন্সরশিপকে চীনের গ্রেট ফায়ারওয়াল বলা হয়। চীনে মেটার মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটসঅ্যাপ এবং এর ফটো এবং ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপ ইনস্টাগ্রামও নিষিদ্ধ।

২) উত্তর কোরিয়া

বিশ্বের অন্যতম রক্ষণশীল দেশ উত্তর কোরিয়ায়ও ফেসবুক ব্যবহার করা যায় না। ২০১৬ সালে দেশটিতে আনুষ্ঠানিকভাবে ফেসবুক ব্লক করে। এমনকি ঘোষণা করে যে কেউ ‘অনুপযুক্ত’ উপায়ে তাদের অ্যাক্সেস করার চেষ্টা করলে বা এর থেকে ‘প্রজাতন্ত্র বিরোধী ডাটা’ বিতরণ করলে তাকে শাস্তি দেওয়া হবে। যদিও নিষেধাজ্ঞার আগে, অল্প কয়েকজন উত্তর কোরিয়ানের বিশ্বব্যাপী ওয়েবে অ্যাক্সেস ছিল এবং বেশিরভাগই সরকার নিয়ন্ত্রিত ইন্টারনেটের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল।

৩) ইরান

২০০৯ সালে ইরানেও বিতর্কিত নির্বাচন এবং গণবিক্ষোভের মধ্যে ফেসবুক নিষিদ্ধ করা হয়। যদিও কিছু ব্যবহারকারী ভিপিএন ব্যবহার করে ফেসবুক অ্যাক্সেস করেন। এরপর ইরান সরকার ভিপিএনর ব্যবহার আইনত অপরাধ ঘোষণা করে। ২০২০ সালে চীনের সঙ্গে মিলে একটি জাতীয় ইরানী ইন্টারনেট তৈরি করছে বলে ঘোষণা দেয় ইরান।

৪) তুর্কমেনিস্তান

সাবেক সোভিয়েত মধ্য এশিয়ার রাষ্ট্র তুর্কমেনিস্তানে ফেসবুক নিষিদ্ধ। ফেসবুক ব্লক করার পাশাপাশি, তুর্কমেনিস্তান হোম ইন্টারনেট সংযোগের জন্য সাইন আপ করার সময় কোরআনের শপথ নিতে বলে যে তারা ভিপিএন অ্যাক্সেস করবে না। শিক্ষার্থীদের নিষিদ্ধ সাইটগুলোতে অ্যাক্সেস করার জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার না করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিবৃতিতে স্বাক্ষর করতে বলা হয়।

৫) কিউবা

কিউবায় আনুষ্ঠানিকভাবে ফেসবুক নিষিদ্ধ নয় কিন্তু এটি অ্যাক্সেস করা খুব কঠিন। শুধু রাজনীতিবিদ, কিছু সাংবাদিক এবং মেডিকেল স্টুডেন্টরা তাদের বাড়ি থেকে আইনত ওয়েব অ্যাক্সেস করতে পারেন। অন্য সবার জন্য অনলাইন জগতের সঙ্গে আইনিভাবে সংযোগ করার একমাত্র উপায় হল ইন্টারনেট ক্যাফে। কিউবার গড় আয় ২০ মার্কিন ডলার। আর ইন্টারনেট অ্যাক্সেস করতে প্রতি ঘন্টায় ৬ মার্কিন ডলার থেকে ১০ মার্কিন ডলারের খরচ হয়। ফলে এত খরচ দিয়ে বেশিরভাগ মানুষের পক্ষেই ইন্টারনেট ব্যবহার করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। মূলত ইন্টারনেট খরচ তুলনামূলক অনেক বেশি হওয়ায় সেদেশে ব্যবহারকারী কম। সূত্র: টাইম ম্যাগাজিন, দ্য ডেইলি গার্ডিয়ান

বিডি/এন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement