শ্রীলঙ্কার নতুন প্রেসিডেন্ট কুমারা দিসানায়েকে

শ্রীলঙ্কার নতুন প্রেসিডেন্ট কুমারা দিসানায়েকে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Published : ২১:২৭, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

চমকে দিয়ে দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন বামপন্থী রাজনীতিক ৫৫ বছর বয়সি অনুরা কুমারা দিসানায়েকে। এর মধ্যদিয়ে তিনি দেশটির প্রথম বামপন্থী হিসেবে রাষ্ট্রপ্রধান হওয়ার গৌরব অর্জন করলেন। খবর বিবিসি।

রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) দ্বিতীয় দফায় ভোট গণনার পর দেশটির নির্বাচন কমিশন তাকে বিজয়ী ঘোষণা করে।

এর আগে, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কোনও প্রার্থীই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাননি। এতে করে দেশটির ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দ্বিতীয় দফায় গড়ায় গুরুত্বপূর্ণ এই জাতীয় নির্বাচন। রোববার ভোট গণনায় দেখা যায়, নতুন চমক বামপন্থী অনুরা কুমারা দিসানায়েকে এগিয়ে থাকলেও নির্বাচিত হতে হলে যে মাইলফলক স্পর্শ করতে হয় তা থেকে অনেকটা দূরে ছিলেন তিনি। দেশটির নির্বাচনি নীতিমালা অনুযায়ী, বিজয়ী হতে হলে প্রার্থীকে অবশ্যই ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পেতে হবে।

দেশটির নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, শনিবারের নির্বাচনে বামপন্থী রাজনীতিবিদ দিসানায়েকে ৩৯ দশমিক ৫০ শতাংশ ভোট পেয়ে শীর্ষ অবস্থানে ছিলেন। বিরোধী নেতা সাজিথ প্রেমাদাসা ৩৪ শতাংশ ভোট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন। এই দুই প্রার্থীর মধ্যেই দ্বিতীয় দফার ভোট অনুষ্ঠিত হয়। মাত্র ১৭ শতাংশ ভোট পেয়ে তৃতীয় অবস্থানে থাকা বর্তমান প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে নির্বাচনি লড়াই থেকে ছিটকে পড়েন।

শ্রীলঙ্কার নির্বাচন ব্যবস্থায় একটি ব্যালট পেপারে ভোটারদের জন্য তাদের পছন্দ অনুসারে পর্যায়ক্রমে সর্বোচ্চ তিনজন প্রার্থীকে ভোট দেয়ার সুযোগ রয়েছে। যদি কোনো প্রার্থী প্রথম গণনায় ৫১ শতাংশ ভোট না পান, তাহলে দ্বিতীয় দফায় ভোট গণনা করা হয়। সেক্ষেত্রে দুই শীর্ষ প্রার্থীকে বিবেচনায় নিয়ে বিজয়ী নির্ধারণ করা হয়।

নির্বাচনের নিয়ম মেনে সবচেয়ে বেশি ভোট পাওয়া অর্থাৎ শীর্ষ দুই প্রার্থী অনুরা কুমারা দিসানায়েকে ও বিরোধী দলীয় নেতা সাজিথ প্রেমাদাসার প্রাপ্ত ভোট গণনা করা হয়। এটা শ্রীলঙ্কার ইতিহাসের প্রথম। 

ভোট গণনার পর নির্বাচন কমিশন বিজয়ীর নাম ঘোষণা করে। ভোটের হিসেবে প্রথম হয়েছেন বামপন্থী রাজনীতিক অনুরা কুমারা দিসানায়েকে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন বিরোধীদলীয় নেতা সাজিথ প্রেমাদাসা। বর্তমান প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে তৃতীয় হয়েছেন। প্রাথমিক ফলাফলে দিসানায়েকে এগিয়ে থাকতে দেখা যায়। তখন তিনিই পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন ধরে নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বিরোধী দলের সমর্থকরা তাকে অভিনন্দন জানান।

কিন্তু সর্বশেষ ফলাফল অনুযায়ী, প্রেমাদাসা ধীরে ধীরে তার সঙ্গে ব্যবধান কমিয়ে আনছেন। তবে নির্বাচনের পর বর্তমান প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে আর ক্ষমতায় থাকছেন না, তা এখন নিশ্চিত হয়ে গেছে।

প্রসঙ্গত, গত ২০২২ সালে দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক সংকটের পরে ব্যাপক বিক্ষোভের মাধ্যমে তখনকার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসেকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর দেশটিতে প্রথমবারের মতো জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভোট দেন এক কোটি ৭০ লাখের বেশি ভোটার।

উল্লেখ্য, ১৯৮২ সালের পর থেকে শ্রীলঙ্কার আটটি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রত্যেকটিতেই প্রথম দফাতেই বিজয়ী নির্ধারিত হয়েছে। এবারই প্রথমবার দ্বিতীয় দফায় গড়ায় জাতীয় নির্বাচন। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, এটি দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন ছিল। তারপরও শনিবার রাতে ‘জননিরাপত্তার’ স্বার্থে কারফিউ ঘোষণা করা হয়।

বিডি/এন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement