যুক্তরাষ্ট্রের ভূখণ্ড বাড়ানোর পরিকল্পনা ট্রাম্পের?
Published : ২২:৫৯, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪
ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী ২০ জানুয়ারি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নেবেন। তিনি এর আগেই বেশ গুরুত্ব নিয়েই মার্কিন ভূখণ্ড বাড়ানোর কথা ভাবছেন? বিশেষজ্ঞ মহলে এমন প্রশ্নই ঘুরছে। কখনো কথার ছলে খোঁচা দিয়ে কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এক হওয়ার কথা বলছেন, কখনো আবার পানামা খাল নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করছেন। কিনতে চাচ্ছেন বিশ্বের বড় দ্বীপ গ্রিনল্যান্ডও।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সিএনএনসহ একাধিক পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানা গেছে, পানামা খাল নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশের পরই গ্রিনল্যান্ড নিয়েও একই ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন ট্রাম্প। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষেত্রে কোনটি প্রকৃত অর্থে নীতিমালা সংক্রান্ত প্রস্তাব, কোনটি গণমাধ্যমের নজর কেড়ে নেওয়ার উদ্যোগ বা ভক্ত-সমর্থকদের চাঙ্গা করার কৌশলগত বক্তব্য তা বুঝে ওঠা বেশ কঠিন।
গত সপ্তাহে ট্রাম্প কানাডার কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র তাদের উত্তরাঞ্চলীয় প্রতিবেশীকে ৫১তম অঙ্গরাজ্যে পরিণত করে নিতে পারে। এর কিছু দিন পরই পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে নেওয়ারও হুমকি দিয়েছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্র এই খাল তৈরি করলেও প্রায় ২৫ বছর ধরে এর নিয়ন্ত্রণ মধ্য আমেরিকার দেশ পানামার হাতেই।
রোববার ট্রাম্প ডেনমার্কের তত্ত্বাবধানে স্বশাসিত দ্বীপরাষ্ট্র গ্রিনল্যান্ড কিনে নেওয়ার ইচ্ছাও প্রকাশ করেন। ট্রাম্প বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা ও স্বাধীনতার খাতিরে গ্রিনল্যান্ডের মালিকানা নেওয়ার কোনো বিকল্প নেই। প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম মেয়াদেও তিনি এমন ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। কিছু মাদক ব্যবসায়ী চক্রকে তিনি বিদেশি জঙ্গি সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করতে আগ্রহী। এই উদ্যোগ নিলে মেক্সিকোর ভূখণ্ডে সামরিক বাহিনী পাঠানোর পথ সুগম হতে পারে। ট্রাম্প মাদক চক্রের নেতাদের নির্মূল করতে বিশেষ বাহিনী পাঠানো ও ফেনটানিল ল্যাবে বোমা হামলা চালানোর হুমকি দিয়েছেন। এ ধরনের উদ্যোগে মেক্সিকোর সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ন হতে পারে এবং দুই দেশের সম্পর্কে চিড় ধরতে পারে। গ্রিনল্যান্ড, কানাডা ও পানামায় মর্কিন ভূখণ্ড সম্প্রসারণের ও মেক্সিকোয় হামলা চালানোর এসব উদ্যোগ নতুন প্রশাসনের বাস্তবসম্মত ইচ্ছার প্রতিফলন কিনা এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি ট্রাম্পের ট্রানজিশন টিম।
ট্রাম্পের এক উপদেষ্টা নাম না প্রকাশের শর্তে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, পানামা খালের বিষয়টির সঙ্গে মার্কিন বাণিজ্যিক স্বার্থ জড়িত। পানামার ওপর চাপ দিয়ে জাহাজ চলাচলের শুল্ক কমাতে পারলে বিশেষ উপকার হতে পারে। চীন, কানাডা ও মেক্সিকোর বিরুদ্ধে ট্রাম্পের প্রস্তাবিত বাড়তি শুল্কের কারণে সার্বিকভাবে ব্যবসা পরিচালনার খরচ বাড়তে পারে। এ ক্ষেত্রে পানামা খালের খরচ কমে গেলে শুল্কের ক্ষতি কমতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি। ক্ষমতা নিয়েই কানাডা, চীন ও মেক্সিকোর ওপর প্রচুর আমদানি শুল্ক আরোপের পরিকল্পনার কথা ইতোমধ্যে জানিয়েছেন ট্রাম্প।
বিডি/এন