ভারত বিশ্বের ক্ষুধা মোকাবিলায় তেমন ভূমিকা রাখছে না: জাতিসংঘ

ভারত বিশ্বের ক্ষুধা মোকাবিলায় তেমন ভূমিকা রাখছে না: জাতিসংঘ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

Published : ২১:৫৬, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

ভারত বৃহৎ অর্থনৈতিক শক্তি হওয়া সত্ত্বেও বিশ্বের ক্ষুধা মোকাবিলায় তেমন ভূমিকা রাখছে না বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের সাবেক মানবিক ত্রাণ প্রধান জ্যান ইগল্যান্ড।

এদিকে বিশ্বজুড়ে বাড়ছে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা। আসন্ন ২০২৫ সালে প্রায় ১২ কোটি মানুষ খাদ্য সংকটে ভুগবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। এ অবস্থায় ধনী দেশগুলোর অর্থসাহায্য কমে যাচ্ছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে। জার্মান ভিত্তিক গণমাধ্যম ডায়েচে ভেলে বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এতথ্য নিশ্চিত করেছে।

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালে ৩০ কোটি ৭০ লাখ ক্ষুধার্ত মানুষের মধ্যে ১১ কোটি ৭০ লাখ মানুষের কাছে খাবার পৌঁছানো সম্ভব হবে না। ২০২৪ সালে জাতিসংঘ মানবিক সাহায্যের জন্য ৪ হাজার ৯৬০ কোটি টাকা সংগ্রহের চেষ্টা করলেও মাত্র ৪৬ শতাংশ তহবিল সংগ্রহ করতে পেরেছে। পরপর দুই বছর প্রয়োজনীয় অর্থের অর্ধেকও জোগাড় করতে ব্যর্থ হওয়ায় তাদের ব্যয় সংকোচনের পথে হাঁটতে হয়েছে। ফলে অনেক দেশেই ক্ষুধার্ত মানুষের কাছে খাবার পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়েছে সংস্থাটি।

জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) সিরিয়ায় ৬০ লাখ মানুষের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করলেও বর্তমানে মাত্র ১০ লাখ মানুষের কাছে পৌঁছানোর পরিকল্পনা করছে।

ডব্লিউএফপি কর্মীরা জানিয়েছেন, তারা এখন সবচেয়ে বেশি দুর্বল এবং অনাহারী মানুষদের অগ্রাধিকার দিয়ে সাহায্য করছেন।

বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে সংঘাত, চরম আবহাওয়ার প্রভাব এবং মূল্যস্ফীতি মানবিক সাহায্যের চাহিদা বাড়িয়ে তুলেছে। তবে ধনী দেশগুলো নিজেরাও আর্থিক চাপে থাকায় তাদের সাহায্যের পরিমাণ কমেছে।

উদাহরণস্বরূপ, জার্মানি ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে ৫০ কোটি ডলার কম অনুদান দিয়েছে। এমনকি ২০২৫ সালে তারা আরও ১০০ কোটি ডলার অনুদান কমানোর পরিকল্পনা করেছে। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব গ্রহণের পর বিদেশি সাহায্য আরও কাটছাঁটের আশঙ্কা রয়েছে।

বিশ্বে ক্ষুধার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গত পাঁচ বছরে ৬ হাজার ৪৫০ কোটি ডলার দিয়েছে, যা জাতিসংঘের তহবিলের ৩৮ শতাংশ। অন্যদিকে, চীন, রাশিয়া ও ভারত মিলে মাত্র এক শতাংশ অর্থসাহায্য করেছে। চীন ২০২৩ সালে ১ কোটি ১৫ লাখ ডলার এবং ভারত ৬ লাখ ৫০ হাজার ডলার দিয়েছে।

জাতিসংঘের সাবেক মানবিক ত্রাণ প্রধান জ্যান ইগল্যান্ড বলেছেন, চীন ও ভারত বৃহৎ অর্থনৈতিক শক্তি হওয়া সত্ত্বেও বিশ্বের ক্ষুধা মোকাবিলায় তেমন ভূমিকা রাখছে না।

এমন পরিস্থিতিতে ধনী দেশ এবং উদীয়মান অর্থনৈতিক শক্তিগুলোর কাছে সাহায্য বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ, যাতে ক্ষুধার বিরুদ্ধে লড়াই আরও কার্যকরভাবে চালানো যায়।

বিডি/এন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement