যে কারণে ২০০ নতুন কারাগার নির্মাণ করলো চীন
Published : ২১:৩১, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪
নতুন ২০০টিরও বেশি বিশেষ বন্দিশালা নির্মাণ করেছে চীন। শি জিনপিংয়ের দুর্নীতিবিরোধী প্রচার চালানোর জন্য এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
সিএনএনের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, এই বন্দিশালাগুলো ‘লিউঝি’ কেন্দ্র নামে পরিচিত। এগুলো সন্দেহভাজনদের ছয় মাস পর্যন্ত ধরে রাখতে ব্যবহৃত হয়, যেখানে তাদের আইনজীবী বা পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের অনুমতি নেই।
শি জিনপিং ২০১২ সালে ক্ষমতায় আসার পর দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইকে তার অগ্রাধিকার দিয়েছেন। তৃতীয় দফার শাসনকালে, এ প্রচারাভিযান আরও জোরদার হয়েছে।
লিউঝি ব্যবস্থা ২০১৮ সালে প্রবর্তিত হয়, যা পূর্বের বিতর্কিত ‘শুয়াংগুই’ ব্যবস্থাকে প্রতিস্থাপন করেছে। এই বন্দিশালাগুলোতে দেওয়ালের গদি, ২৪ ঘন্টা প্রহরা এবং নজরদারি ক্যামেরা রয়েছে।
কেবল কমিউনিস্ট পার্টির কর্মকর্তারাই নয়, যেকোনো ‘জনশক্তি’ ব্যবহারকারী যেমন সরকারি কর্মচারী, ব্যবসায়ী বা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজারদেরও এখানে আটক করা যেতে পারে। উচ্চ-প্রোফাইল মামলাগুলোর মধ্যে রয়েছে বিনিয়োগ ব্যাংকার বাও ফ্যান এবং সাবেক ফুটবল তারকা লি টাই-এর নাম, যিনি দুর্নীতির জন্য ২০ বছরের কারাদণ্ড পেয়েছেন।
২০১৭ থেকে নভেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত, ২১৮টিরও বেশি লিউঝি কেন্দ্র নির্মাণ বা সম্প্রসারণ করা হয়েছে। মহামারীর পর এই নির্মাণ কাজ আরও দ্রুত হয়েছে।
এ ব্যবস্থার সমালোচকরা বলছেন, এটি ক্ষমতার অপব্যবহার এবং জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি আদায়ের সুযোগ তৈরি করছে। একজন আইনজীবী বলেছেন, বন্দিদের মানসিক ও শারীরিক চাপের মধ্যে রাখা হয়।
একজন প্রাক্তন কর্মকর্তার মেয়ে দাবি করেছেন, তার বাবাকে ছয় মাস ধরে ঘুমাতে দেওয়া হয়নি এবং প্রতিদিন ১৮ ঘণ্টা সোজা বসে থাকতে বাধ্য করা হয়।
চীন সরকার লিউঝি কেন্দ্রগুলোর নির্মাণের জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম চালু করেছে। তবে সমালোচকরা বলছেন, এই ব্যবস্থায় ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে ঘুষ আদায় করা হচ্ছে।
একটি নতুন আইন সংশোধনী প্রস্তাবিত হয়েছে, যা তদন্ত পদ্ধতি ‘আইনসম্মত ও সভ্য’ করার কথা বললেও বন্দিদের আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগের অনুমতি দেয় না।
অনেকেই মনে করছেন, এ ধরণের ব্যবস্থাপনা অর্থনীতির উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
বিডি/ও