শীতে অন্তঃসত্ত্বা মায়ের বিশেষ যত্ন নিন

শীতে অন্তঃসত্ত্বা মায়ের বিশেষ যত্ন নিন

লাইফস্টাইল ডেস্ক:

Published : ১৪:২৫, ৬ ডিসেম্বর ২০২৪

শীতে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের বাড়তি সুরক্ষার দরকার হয়। তা না হলে অল্পতেই সর্দিকাশি, নিউমোনিয়া ও ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে মা এবং গর্ভের সন্তানটিও অসুস্থ হয়ে পড়ে। এতে জন্ম থেকেই ঠাণ্ডাজনিত নানা সমস্যায় ভুগতে থাকে শিশু।

অন্তঃসত্ত্বা মায়েদের পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার সবসময় একটু বেশিই খেতে হয়। শীতকালও তার ব্যতিক্রম নয়। শীতকালে বাজারে লাউ, শিম, গাজর, টমেটো, ফুলকপি, বাঁধাকপি, লালশাক, পালংশাক ইত্যাদি কমবেশি কিনতে পাওয়া যায়।

স্বাস্থ্য ভালো রাখতে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় শীতকালীন সবজি যোগ করা জরুরি। কারণ এগুলো ভিটামিন ও মিনারেলের চাহিদা পূরণ করে। মা ও গর্ভের বাচ্চা সুস্থ থাকে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।

এছাড়া পালংশাক, লালশাক, লাউশাক ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমাণে আঁশ থাকে, যা খেলে কমে কোষ্ঠকাঠিন্য। তবে যাদের রক্তে ইউরিক এসিডের মাত্রা বেশি তাদের পালংশাক ও লালশাক কম খাওয়া উচিত। বাঁধাকপিতে রয়েছে প্রচুর ফসফরাস, যা শীতের সময়ে ঠাণ্ডার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে।

শীতের শাক-সবজি ও ফলমূল অন্তঃসত্ত্বা মায়ের ত্বক, চুল ইত্যাদির জন্যও উপকারী।এ ছাড়া প্রচুর প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার যেমন–মাছ, মাংস, ডিম, বিভিন্ন ধরনের ডাল ও তেলবীজজাতীয় খাবার এ সময় বেশি খেতে হবে।

শীতকালে পানি খাওয়ার দিকে দিতে হবে বিশেষ নজর। অনেকেই শীতকালে পানি কম খেয়ে থাকেন। কিন্তু গর্ভাবস্থায় এমন করা উচিত নয়।

গর্ভাবস্থায় এমনিতেই স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি পানি পান করা উচিত। শীতকালেও এটির ব্যতিক্রম করা যাবে না।

পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করলে ত্বকের শুষ্ক হয়ে যাওয়া, এমনকি ফ্লুইড কমে যাওয়া, মাথা ব্যথা ও প্রি-টার্ম লেবারের মতো জটিলতার ঝুঁকি কমবে।

শীতে অন্তঃসত্ত্বা নারীর ত্বকেরও বিশেষ যত্ন নেয়া উচিত। হাত-পা, মুখ এবং পুরো শরীরে ময়েশ্চারাইজার মাখা দরকার।এতে ত্বক কম শুষ্ক হবে। এছাড়া শীতে গোসলের সময় সাবান কম ব্যবহার করাই ভালো।

কারণ সাবান ত্বকে শুষ্কতা সৃষ্টি করে। তবে গ্লিসারিনসমৃদ্ধ সাবান ব্যবহার করা যেতে পারে। পুরো শরীরে নিয়মিত অলিভ অয়েল মাখলেও ত্বকের শুষ্কতা দূর হয়। এর ফলে পেটের স্ট্রেস মার্ক বা ফাটা দাগও কম হবে।

শীতকালে আলসেমি ভর করে বলে অনেকে ব্যায়াম করতে চায় না। এটা একেবারেই উচিত নয়। শারীরিক জটিলতা না থাকলে সকালে বা বিকেলে নিয়মিত ৩০ মিনিট হাঁটাহাঁটি করা উচিত অন্তঃসত্ত্বা নারীর। এটি প্রসবের সময় কাজে দেবে। এছাড়া মনকে শান্ত রাখার জন্য মেডিটেশনও করা যেতে পারে।

শীতে অন্তঃসত্ত্বা নারীর সোয়েটার কিংবা গরম কাপড় বাছাইয়ের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। এমন কিছু কেনা বা পরা যাবে না, যাতে পেটের ওপর চাপ পড়ে এবং চলাফেরা করতে সমস্যা হয়। লম্বা এবং সামনের দিকে বোতাম আছে এমন সোয়েটারগুলো এই সময় অন্তঃসত্ত্বা মায়েদের আরাম দিতে পারে।

শীতের কাপড় পরিধানের পাশাপাশি জুতার দিকে নজর দিতে ভুলবেন না যেন। পা থেকে ঠাণ্ডা লেগে মায়ের এবং সন্তানের সমস্যা হতে পারে। তাই যাতে পা ভালোভাবে ঢাকা থাকে এমন জুতা পরতে হবে অথবা ঘরে মোজা পরে থাকতে হবে।

শীতে ঠাণ্ডা, সর্দিকাশি, নিউমোনিয়া, অ্যাজমা বা হাঁপানি রোগের প্রকোপ বাড়ে। কানে ইনফেকশন, দাঁতে ব্যথা, মাথা ব্যথা ইত্যাদি বেশি হয়। এগুলো মায়ের পাশাপাশি বাচ্চারও ক্ষতি করে। অক্সিজেন ঘাটতিতে পড়ে বাচ্চা। তার স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। আর তাই এগুলো নিয়ে খুব সতর্ক থাকতে হবে।

অনেক গর্ভবতী মা গর্ভের সন্তানের ক্ষতি হবে ভেবে সর্দিকাশিতে ওষুধ খাওয়া থেকে বিরত থাকেন। তবে অন্তঃসত্ত্বা মায়ের যদি সর্দিকাশি দু-তিন দিনের বেশি থাকে তবে অবশ্যই ডাক্তার দেখাতে হবে এবং চিকিৎসা করাতে হবে।

শীত বা গরম- গর্ভবতী মায়ের এবং তার গর্ভের সন্তানের সুস্থতার জন্য নিয়মিত চেকআপ অবশ্যই করাতে ভুলবেন না।

বিডি/ও

শেয়ার করুনঃ
Advertisement