বয়সের সঙ্গে কী সন্তান নেওয়ার সম্পর্ক আছে, চিকিৎসকের পরামর্শ

বয়সের সঙ্গে কী সন্তান নেওয়ার সম্পর্ক আছে, চিকিৎসকের পরামর্শ

লাইফস্টাইল ডেস্ক

Published : ০০:০০, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪

অনেক নারীই মা হতে একটু সময় নিচ্ছেন। অনেকে তো ৩০ পার করে মা হচ্ছেন। আবার দ্বিতীয় সন্তান নিতেও সময় নেন অনেকে। তবে মা হওয়ার সঠিক সময় নিয়ে অনেকেরই স্বচ্ছ ধারণা নেই। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, সময় নিয়ে মা হতে গিয়ে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে থাকেন নারীদের একটি অংশ। বয়সের সঙ্গে মা হওয়ার ঝুঁকির কোনো সম্পৃক্ততা রয়েছে কিনা, এ নিয়ে আছে নানা প্রশ্ন।

স্বাস্থ্য বিষয়ক ওয়েবসাইট হেলথ লাইনের প্রতিবেদনে চিকিৎসকরা নারীদের মা হওয়ার বয়স সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেছেন। সত্যিই বয়সের সঙ্গে মা হওয়ার ঝুঁকি আছে কিনা সে বিষয়েও বিস্তারিত বলেছেন তারা।

একজন নারীর মা হওয়ার সক্ষমতা বয়স ও শারীরিক সুস্থতার ওপর নির্ভর করে। নারীর দেহে ডিম্বাণুর সংখ্যা কমতে থাকে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে। বয়ঃসন্ধির শুরুর সময়ে একজন কিশোরীর দেহে তিন থেকে পাঁচ লাখ ডিম্বাণু থাকতে পারে। অন্যদিকে একজন নারীর বয়স যখন ৩৭ বছর, সংখ্যাটা কমে তখন ২৫ হাজারে এসে দাঁড়ায়। ৫১ বছর বয়সে তা নেমে হয় এক হাজার বা তারও কম। তাই সহজভাবেই বলা যায়, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রাকৃতিক উপায়ে (অর্থাৎ কোনো ধরনের চিকিৎসা প্রযুক্তির সহায়তা ছাড়া) মা হওয়ার সম্ভাবনা কমতে থাকে।

৩০ বছর বয়স হওয়ার আগে একজন নারীর প্রাকৃতিক উপায়ে মা হওয়ার সম্ভাবনা যেখানে ৮৫ শতাংশ, সেখানে ত্রিশ বছরে তা নেমে আসে ৭৫ শতাংশে। আর ৩৫ বছর বয়সে মা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে ৬৬ শতাংশ, ৪০ বছরে মাত্র ৪৪ শতাংশ।

গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন এসব নানা রোগ দেখা দেয়। এছাড়া অস্বাভাবিক শিশু জন্ম নেয়ার আশঙ্কাও থাকে। বেশি বয়সে গর্ভধারণ করতে চাইলে অনেক সময় তা স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় সম্ভব হয়ে ওঠে না। তাই চিকিৎসা প্রযুক্তির সহায়তা নিতে হয়। তবে বয়স যত বাড়ে, প্রযুক্তি সফল হওয়ার সম্ভাবনাও কিন্তু ততই কমে।

৩৫ বছরের পর মা হতে গেল ঝুঁকি থেকে যায়। এই বয়সী মায়েদের গর্ভপাত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। এমনকি গর্ভের সন্তানের মৃত্যু হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে। মায়ের বয়স যত বেশি হবে, ক্রোমোসোমাল সমস্যার সম্ভাবনা তত বেশি হবে। সময়ের সঙ্গে ডাউন সিনড্রোম-এ আক্রান্ত একটি শিশুর জন্মের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। বেশি বয়সে মা হলে মায়ের নিজেরও কিছু শারীরিক সমস্যার ঝুঁকি বাড়ে, যেমন গর্ভকালীন ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এবং প্রি-এক্লাম্পসিয়া। আবার মায়ের নানাবিধ জটিলতার কারণে অপরিণত অবস্থায় গর্ভের সন্তানের জন্ম হতে পারে।

বয়সের সঙ্গে সঙ্গে মাতৃত্বের সম্ভাবনা যেমন কমে, তেমনি আবার বেশি বয়সে সন্তান গর্ভে এলে মা এবং সন্তানের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ে। তবে আপনি যে বয়সেই মা হতে চান না কেন, চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থাকুন। যদিও ৩৫ বছরের পর গর্ভধারণে নানা ঝুঁকি ও চ্যালেঞ্জ বিবেচনায় নিতে হয়। তবে সঠিক যত্ন ও ব্যবস্থাপনায় ৩৫ বছরের বেশি বয়সী অনেক নারীই সুস্থ শিশুর জন্ম দেন।

বিডি/এন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement