কোম্পানি বিক্রির পর কর্মীদের ২৬২ কোটি টাকা বোনাস দিলেন বাংলাদেশি
Published : ১৩:০১, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪
প্রায় শোনা যায়, কর্মীদের বেতন না দেওয়া বা বেতনসহ অন্যান্য সুবিধা নিয়ে ভোগান্তির খবর। তবে এসবের মধ্যে ভিন্ন এক খবর নিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছেন অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করা এক বাংলাদেশি।
তিনি এর আগেও অস্ট্রেলিয়ায় ধনকুবের হিসেবে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে জায়াগা করে নিয়েছিলেন। ওই বাংলাদেশির নাম রবিন খুদা। তিনি সেখানে এয়ারট্যাঙ্ক নামে বিলিয়ন ডলারের একটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন।
সংবাদমাধ্যম ইয়াহু নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রবিন প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও)। তার প্রতিষ্ঠানটি একটি মার্কিন কোম্পানি দুই লাখ ৮৬ হাজার ৭১২ কোটি টাকায় (২৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) অধিগ্রহণ করেছে। এরপর তিনি কর্মীদের জনপ্রতি ৭৭ লাখ ৬৫ হাজার ১২৮ টাকা (৬৫ হাজার মার্কিন ডলার) করে বোনাস দিয়েছেন। আর কর্মীদের মোট বোনাস দিয়েছেন ২৬২ কোটি ৮১ লাখ ৯৭ হাজার টাকা (২২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার)। আকস্মিক এ বোনাস ছাড়াও কর্মীরা বার্ষিক অন্যান্য সুবিধা পেয়ে থাকেন।
রবিন জানান, কোম্পানির ৩৩০ কর্মীকে ৭৭ লাখ ৬৫ হাজার ১২৮ টাকা করে প্রদান করেছে। এছাড়া জ্যেষ্ঠ ১২০ কর্মীকে প্রতিষ্ঠানের লভ্যাংশ শেয়ার করা হয়েছে।
গত সোমবার (৯ ডিসেম্বর) রবিন কর্মীদের এমন সুখবর দিয়েছেন। তিনি জানান, কর্মীদের ছাড়া এ সাফল্য অর্জন করা সম্ভব হতো না। ফলে তিনি তাদের পুরস্কৃত করতে চান।
প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান এয়ারট্যাংক বিভিন্ন বড় বড় ডেটা সেন্টার তৈরির কাজ করে থাকে। প্রতিষ্ঠানটির ডেটা সেন্টারে মাইক্রোসফট, গুগল এবং অ্যামাজনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের ডিজিটাল তথ্য জমা ও পরিচালনা করে আসছে। সিডনি, মেলবোর্ন, হংকং, টোকিও, মালয়েশিয়া এবং সিঙ্গাপুরে কোম্পানির ১১টি ডেটা সেন্টার রয়েছে।
রবিন এ ধরনের সুবিধা প্রায় দিয়ে থাকেন। চলতি বছরের শুরুর দিকে তিনি কর্মীদের জন্য বালিতে একটি সম্মেলনের আয়োজন করেছিলেন। এ সময় কোম্পানির পক্ষ থেকে কর্মীদের বিমানে নিয়ে যাওয়াসহ সব ধরনের ব্যবস্থা করা হয়।
রবিন মাত্র ১৮ বছর বয়সে বাংলাদেশ থেকে অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমান। তিনি এ কোম্পানি দাঁড় করাতে গিয়ে নিজের সব সঞ্চয় শেষ করে ফেলেন। এমনকি তিনি প্রায় দেউলিয়া হতে চলেছিলেন।
অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যম অস্ট্রেলিয়ান ফাইন্যান্সিয়াল রিভিউকে তিনি বলেন, ২০১৬ সালের ক্রিসমাসে আমি শুরু করেছিলাম এবং ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যে আমাকে প্রথম ডেটা সেন্টার সরবরাহ করতে হয়েছিল। আমরা এমন জায়গায় ছিলাম যে, আমাদের সব টাকা ফুরিয়ে গিয়েছে। এমনকি আমি কর্মীদের পেনশন তহবিল থেকে অর্থ নিয়েছিলাম, যা সত্যি অনেক দুরূহ ছিল।
রবিন বলেন, আমি এটির জন্য মরিয়া ছিলাম। আমি সত্যিকারের কিছুতে করতে প্রাণপণ চেষ্টা করেছি। তবে আমি খুব বেশি সাপোর্ট পাইনি। এমনকি আমি নিজেকে দেউলিয়া ঘোষণা করার জন্য আইনজীবীর শরণাপন্ন হয়েছিলাম।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিক্রির পরও কোম্পানির সিইও রয়েছেন রবিন। তিনি কোম্পানিকে ১০০ বিলিয়ন ডলারে পরিণত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
বিডি/এন