যায়যায়দিনের ডিক্লারেশন ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি সংবাদ সম্মেলন

যায়যায়দিনের ডিক্লারেশন ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি সংবাদ সম্মেলন

বিজনেস ডেইলি ডেস্ক

Published : ১২:০১, ১৩ মার্চ ২০২৫

দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার ডিক্লারেশন ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে যায়যায়দিন কর্তৃপক্ষ। বুধবার ( ১২ মার্চ) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত  সংবাদ সম্মেলনে ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক কাজী রুকুনউদ্দীন আহমেদ এই দাবি জানান। 

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক  বলেন, প্রবীণ সাংবাদিক শফিক রেহমানকে সামনে রেখে একটি চক্র সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের দিয়ে গত ১৫ ডিসেম্বর দৈনিক যায়যায়দিনের প্রধান কার্যালয় দখল করে। তারা সেখান থেকে অবৈধভাবে দৈনিক যায়যায়দিনের মূল লোগোর সঙ্গে হুবহু মিল রেখে ‘দৈনিক যায়যায়দিন প্রতিদিন’ নামের একটি পত্রিকা প্রকাশ করছে; যা আইনগতভাবে অবৈধ।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০০৭ সালে আর্থিক সংকটে পড়ে শফিক রেহমান দৈনিক যায়যায়দিন পাবলিকেসন্স-এর শেয়ার এইচআরসি গ্রুপের চেয়ারম্যান সাঈদ হোসেন চৌধুরীর কাছে বিক্রি করেন। ২০০৭ সালের ২৩ মার্চ ফরম-১১৭ এর মাধ্যমে শফিক রেহমান, তার স্ত্রী তালেয়া রহমান এবং ছেলে সুমিত রহমান তাদের যায়যায়দিন পাবলিকেসন্সের সব শেয়ার সাঈদ হোসেন চৌধুরী ও আবুল হাসান মো. আল ফারুক বরবার হস্তান্তর করেন। এর দুইদিন পর অর্থাৎ ২৫ মার্চ ২০০৭ তারিখ শফিক রেহমান ও তালেয়া রেহমান ফরম-১১৭ এর মাধ্যমে তাঁদের যায়যায়দিন প্রিন্টার্সের শেয়ার এইচআরসি মিডিয়া লিমিটেড এবং এইচআরসি বাংলাদেশ লিমিটেডের নামে হস্তান্তর করেন।

শেয়ার হস্তান্তরসহ সব প্রক্রিয়া শেষে শফিক রেহমান ২০০৭ সালের ১৭ জুলাই অতিরিক্ত ঢাকা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে উপস্থিত হয়ে যায়যায়দিনের প্রকাশকের পদ থেকে পদত্যাগ করেন।

পরবর্তী সময়ে ২০০৮ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি ঢাকার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে উপস্থিত হয়ে আবুল হাসান মো. আল-ফারুক যায়যায়দিনের প্রকাশকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি ২০১১ সালের ৯ জুন পত্রিকার প্রকাশকের পদত্যাগের ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে প্রকাশকের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেন। ২০১২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি সাঈদ হোসেন চৌধুরী যায়যায়দিনের প্রকাশক ও মুদ্রাকরের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ওই সময় থেকে সাঈদ হোসেন চৌধুরী দৈনিক যায়যায়দিনের প্রকাশক ও মুদ্রাকর হিসেবে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, শফিক রেহমান ২০০৭ সালের ১৭ জুলাই দৈনিক ‘যায়যায়দিন’ পত্রিকার প্রকাশকের দায়িত্বভার থেকে পদত্যাগ করলেও ২০০৮ সালের ৬ মে পর্যন্ত বেতনভুক্ত সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৮ সালের ৫ মে তিনি স্বেচ্ছায় সম্পাদকের পদ থেকে পদত্যাগ করেন। ৬ মে ২০০৮ সালে যায়যায়দিন ও সমকালসহ একাধিক জাতীয় দৈনিকেও এ সংক্রান্ত খবর প্রকাশ পায়।

শফিক রেহমান পদত্যাগ করার পর শহীদুল হক খান এবং পরে বরুণ শংকর দৈনিক যায়যায়দিনের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।

পরবর্তীতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অনুমতিক্রমে ২০০৮ সালের ২৩ নভেম্বর কাজী রুকুনউদ্দীন আহমেদ যায়যায়দিনের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হিসাবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। উল্লেখিত সময় থেকে তিনি নিষ্ঠার সঙ্গে ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

অথচ আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাঈদ হোসেন চৌধুরীর মালিকানাধীন দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকাটি দখল করে নিতে বেশকিছু দুস্কৃতিকারী পত্রিকার প্রধান কার্যালয় তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল¯’ এইচআরসি মিডিয়া ভবনে কয়েক দফা হামলা চালায়। এ ব্যাপারে গত ২৪ অক্টোবর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করা হয়। গত ১৫ ডিসেম্বর সাংবাদিক শফিক রেহমানকে সামনে রেখে ওই চক্র সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের দিয়ে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের দৈনিক যায়যায়দিনের প্রধান কার্যালয় দখল করে নেয়।

এদিকে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল¯’ যায়যায়দিন কার্যালয় ও প্রেস বেদখল হওয়ার পর বিধি মোতাবেক ডিসি অফিসকে অবহিত করে অন্য প্রেস থেকে যায়যায়দিন পত্রিকা ছাপানোর ব্যবস্থা করা হয়। পর পর দু’টি প্রেস পরিবর্তনের বিষয়টিও যথারীতি ডিসি অফিসকে জানানো হয়। কিন্তু ডিসি অফিস শফিক রহমানের আবেদনের প্রেক্ষিতে ঠুনকো অজুহাতে ১০ ফেব্রুয়ারি যায়যায়দিন পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিল করে। অথচ এর আগে ২ ফেব্রুয়ারি সাঈদ হোসেন চৌধুরীর এক রীট পিটিশনের প্রেক্ষিতে হাই কোর্ট দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার সবকিছুই সাঈদ হোসেন চৌধুরীর পক্ষে থাকবে বলে তিন মাসের ‘স্থিতাবস্থা’ (Status-quo) দেন।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এজিএম (প্রশাসন) গোলাম ফারুক আলম, সিনিয়র ম্যানেজার নূরুল হক ও ডেপুটি ম্যানেজার (প্রশাসন) ইকবাল হোসেন।

এনই

শেয়ার করুনঃ
Advertisement