কোটাবিরোধী আন্দোলনে উত্তাল সারাদেশ, কী ঘটছে? 

কোটাবিরোধী আন্দোলনে উত্তাল সারাদেশ, কী ঘটছে? 

আবদুল হাকিম

Published : ১৪:২৪, ৭ জুলাই ২০২৪

দাবি-দাওয়া আদায়ে বিশ্বে বরাবরের মতো প্রথম সারিতে বাংলাদেশ। সেই ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে ৪৭-এর দেশ ভাগ, ৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ৭১’র পাকিস্তান খেদাও ও মুক্তির আন্দোলন এবং ২০১২ সালে শাহবাগ আন্দোলন করে মানবতাবিরোধীদের ফাঁসি কার্যকর যেন একই সুতোয় বাঁধা। আবারও শুরু হয়েছে সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের আন্দোলন। ফুঁসে উঠেছে সারাদেশ। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও এই আন্দোলনে শামিল হয়েছেন।   

সরকারি চাকরিতে কোটা-পদ্ধতি বাতিল, ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহাল-সহ মোট ৪ দফা দাবিতে ৭ম দিনের মতো কোটা-বিরোধী আন্দোলন চলছে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে। শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, তাদের সকল দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। দেশের সকল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল হচ্ছে এবং ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করা হয়েছে এবং ধর্মঘট দেওয়ারও ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। ক্রমেই বিস্তিৃত হচ্ছে আন্দোলন। অনেকেই প্রশ্ন করেছেন, কী ঘটছে তাহলে? 

কোটা নিয়ে যেভাবে ঝামেলার শুরু 

২০১৮ সাল পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা প্রচলিত ছিল বাংলাদেশে। তার মাঝে ৩০ শতাংশই ছিল মুক্তিযোদ্ধা কোটা। বাকি কোটার মাঝে ১০ শতাংশ নারী কোটা, ১০ শতাংশ জেলা কোটা, ৫ শতাংশ কোটা ছিল ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের জন্য এবং এক শতাংশ কোটা ছিল প্রতিবন্ধীদের। ওই বছরই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কোটা সংস্কারের দাবিতে কোটাবিরোধী আন্দোলন শুরু করে। শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল যে কোটা ৫৬ শতাংশ না হয়ে ১০ শতাংশ করা হোক। তাদের দাবির মুখে সে বছর পুরো কোটা পদ্ধতিই বাতিল করে একটি পরিপত্র জারি করেছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

কিন্তু ২০২১ সালে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা ফিরে পাবার জন্য উচ্চ আদালতে রিট করেন এবং গত পাঁচই জুন প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের সরকারি সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয় হাইকোর্ট। তারপর হাইকোর্টের ওই রায় স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। কোটার পক্ষের এক আইনজীবীর আবেদনের প্রেক্ষিতে শুনানি করেনি আদালত। সুতরাং, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ হাইকোর্টের এই রায় স্থগিত না করায় পূর্বের নিয়মানুযায়ী সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা আপাতত বহাল রয়েছে। এতেই আবার ফুঁসে উঠেছে পুরো দেশ। 

‘বাংলা ব্লকেড’ চলছে, আসছে হরতাল

আন্দোলন চাঙ্গা করতে কৌশল পাল্টিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছেন তারা। একই দাবিতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক, মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন আন্দোলনকারীরা। দাবি আদায়ে আজ দেশের সকল কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে ছাত্রধর্মঘট পালন করবেন তারা। গতকালের অবরোধ কর্মসূচি থেকে ‘বাংলা ব্লকেড’ এর নতুন কর্মসূচি যোগ হয়েছে। ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ এর ব্যানারে এ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। 

নতুন কর্মসূচি ঘোষণার সময় বিচার বিভাগ ও শিক্ষার্থীদের মুখোমুখি দাঁড় করানোর হটকারী সিদ্ধান্ত থেকে সরকারকে সরে আসার আহ্বান জানান আন্দোলনকারীরা। তারা বলেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। অন্যথায় হরতালের মতো কর্মসূচি দেয়ারও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। 

ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদুল ইসলাম বলেন, রোববার ‘বাংলা ব্লকেড’ শুধু শাহবাগ নয়, রাজধানীর সায়েন্সল্যাব, মতিঝিল, নীলক্ষেত, চানখারপোল, কাঁটাবনসহ প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে আমরা অবস্থান করবো। যারা ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলায় আছেন তারা মহাসড়ক অবরোধ করবেন। দাবি বাস্তবায়ন না হলে আগামীতে সারা দেশে সর্বাত্মক হরতালের কর্মসূচি দেওয়া হবে। 

কোটা নিয়ে বিরোধী দলগুলোর সমর্থনের ‘রাজনীতি’

চলমান শিক্ষার্থীদের কোটাবিরোধী আন্দোলন ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের ‘প্রত্যয়’ ঠেকাও কর্মসূচি আনুষ্ঠানিকভাবে সমর্থন জানিয়েছে বিএনপি, গণতন্ত্র মঞ্চ, জাতীয় পার্টিসহ দেশের বিরোধী দলগুলো। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের দায়িত্বশীল ও নেতাদের সঙ্গে আলাপকালে তারা গণমাধ্যমকে জানান, শ্রেণিগত আন্দোলনে সব সময়ই রাজনৈতিক দলগুলো সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করেছে। ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বিএনপি এখন শিক্ষকদের আন্দোলনের ওপর ভর করবে। আবার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে কোটা আন্দোলনের ওপর ভর করবে।’

এদিকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনকে যৌক্তিক আখ্যা দিয়ে তাতে সমর্থন জানান। বিএনপির পক্ষ থেকে কোটাবিরোধী আন্দোলন ফেসবুকে লাইভে প্রচার করা হচ্ছে দলের অফিসিয়াল পেজে। বিএনপির যুগপৎসঙ্গীরা আনুষ্ঠানিকভাবে সমর্থন দিয়েছে। গণতন্ত্র মঞ্চের পক্ষ থেকে সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি এই আন্দোলনে সমর্থন ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘ছাত্রদের আন্দোলনে বিরোধী দল কোনও ষড়যন্ত্র করছে না। আমরা পরিষ্কারভাবে ছাত্রদের আন্দোলনকে সমর্থন জানাই।’ 

কোটা পদ্ধতি সংবিধানবিরোধী বলে মনে করেন বিরোধী দলীয় নেতা জিএম কাদের। গাজীপুরে দলের একটি অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করছে। আমাদের দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে কোটা পদ্ধতি বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোটা পদ্ধতি বাংলাদেশের সংবিধানের ২৯ এর ১,২,৩ এর সম্পূর্ণ পরিপন্থি। সংবিধান সংশোধন করে এটাকে বৈধ করতে পারবে না। মৌলিক অধিকার সম্পর্কিত ২৯ এর ১,২,৩ ধারা পরিবর্তন করার ক্ষমতা সংবিধানে দেওয়া হয়নি।’

কোটা বিরোধী আন্দোলন ছড়িয়ে পড়তে পারে

সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এই আন্দোলন ঘিরে আনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেয়া হয়েছে পুলিশ সদর দপ্তরের পক্ষ থেকে। কোটা বিষয়ে করণীয় ঠিক করতে বেশকিছু সুপারিশ ও পর্যবেক্ষণ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। গত ঈদের আগেই এই প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছিল। ঈদের ছুটির পর বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার পর আন্দোলন কর্মসূচি জোরদার হওয়ার সম্ভাব্যতার বিষয় তুলে ধরা হয় প্রতিবেদনে। 

এতে বলা হয়, ২০১৮ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় সরকারি দলের কোনো কোনো নেতার মন্তব্যে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছিল। শিক্ষার্থীদের যেকোনো ধরনের আন্দোলন একটি স্পর্শকাতর বিষয় হওয়ায় সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গের মন্তব্য প্রদানের ক্ষেত্রে অধিকতর সতর্কতা অবলম্বন প্রয়োজন। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের নামে বিশৃঙ্খলা করলে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগ বাধা দিতে পারে এতে উভয়পক্ষে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। এতে অতীতের মতো দায়ভার ছাত্রলীগের ওপর চাপিয়ে কোটা আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করতে পারে। প্রতিবেদনে সুপারিশ হিসেবে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও সন্নিহিত এলাকা, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বড় বড় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ এবং গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করা, সরকারবিরোধী চক্র ও স্বার্থান্বেষী মহল যাতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার সুযোগ না পায় সে ব্যাপারে সতর্কতা বাড়ানো, আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারীসহ সরকারবিরোধী ছাত্র সংগঠন বিশেষ করে ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, ছাত্র অধিকার পরিষদ ও বাম ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দের গতিবিধির প্রতি নজরদারি, ‘মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড’ ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা যাতে আন্দোলনে মুখোমুখি অবস্থানে না যায় সে ব্যাপারে সতর্কতা বাড়ানো। 

শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের ব্যাপারে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের সতর্ক অবস্থান নিশ্চিত করা এবং অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় না জড়ানোর জন্য নির্দেশনা প্রদান করা, সড়ক-মহাসড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে শিক্ষার্থীদের যেকোনো ধরনের কর্মসূচি পালন রোধ এবং যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে ফোর্স মোতায়েন, মোতায়েনকৃত ফোর্সের যথাযথ ব্রিফিং এবং যেকোনো ধরনের উস্কানিতেও সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন নিশ্চিতকরণ, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে বহিরাগতদের অনুপ্রবেশ রোধে নজরদারি বাড়ানো, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার ও গুজব রোধে সাইবার প্যাট্রোলিং জোরদার এবং সব গোয়েন্দা সংস্থার সমন্বিত নজরদারি বাড়ানো। 

কোটা বিরোধী আন্দোলনে ছাত্রলীগের বাধা, শিক্ষার্থীদের অভিযোগ

সরকারি চাকরিতে কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা শুক্রবার অনলাইন ও অফলাইনে আন্দোলনের পক্ষে গণসংযোগ চালিয়েছেন। তবে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ও টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (মাভাবিপ্রবি) বিক্ষোভ, মহাসড়ক অবরোধ এবং সমাবেশ করেছেন তারা। এর মধ্যে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিভিন্ন হলে আন্দোলনে অংশ নিতে শিক্ষার্থীদের বাধা দিচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে বিষয়টি অস্বীকার করেছে ছাত্রলীগ।

গত বৃহস্পতিবার রাতে কোটাবিরোধী আন্দোলনের মোর্চা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ ও অমর একুশে হলের শিক্ষার্থী সারজিস আলমকে হল থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে হল শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। এ খবর পেয়ে রাত ১টার দিকে অন্য হল থেকে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে অমর একুশে হলের সামনে জড়ো হয়ে তাঁকে নিজ কক্ষে ফিরিয়ে দিয়ে আসেন।

এর আগে কোটাবিরোধী আন্দোলনে গেলে হল থেকে বের করে দেওয়ার হুমকির অভিযোগ উঠেছে ঢাবির বিজয় একাত্তর হল শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহমেদ ফয়সাল, সাংগঠনিক সম্পাদক শাকিরুল ইসলাম সাকিব, উপ-গণযোগাযোগ ও উন্নয়ন সম্পাদক সাকিবুল সুজন ও ঢাবি শাখার সাবেক উপদপ্তর সম্পাদক হাসান সাইদের বিরুদ্ধে। তারা সবাই আসন্ন হল শাখা ছাত্রলীগের কমিটির শীর্ষ পদপ্রত্যাশী ও ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের অনুসারী। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তানভীর হাসান সৈকত গণমাধ্যমকে বলেন, বাধা দেওয়া হচ্ছে না। তবে আন্দোলনকে ব্যবহার করে কেউ যেন ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে না পারে, সে বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে।

কোটাবিরোধী আন্দোলনের কোনো যৌক্তিকতা নেই: প্রধানমন্ত্রী

চলমান কোটাবিরোধী আন্দোলনের যৌক্তিকতা দেখছেন না প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘এটা আদালতের বিচারাধীন বিষয়। আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন করার কোনো যোক্তিকতা নেই।’ রোববার (৭ জুলাই) সকালে গণভবনে যুব মহিলা লীগের ২২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেছেন, ‘শিক্ষার্থীরা মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ কোটা বাতিল করার আন্দোলন করছে। যারা এর আগে আন্দোলন করেছিল তারা আগে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষায় কত পাস করত, এখন কত করছে। এটা সাবজুডিস ম্যাটার, আদালতে বিচারাধীন। আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে শিক্ষার্থীরা সময় নষ্ট করছে। এ আন্দোলনের কোনো যৌক্তিকতা নেই।’ 

ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে জাবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

কোটা বাতিলের দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা। রোববার (৭ জুলাই) সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনের ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন তারা। এ সময় ঢাকা আরিচা মহাসড়কের দুপাশে ২ কিলোমিটার করে চার কিলোমিটার পর্যন্ত যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।  

দিন যত যাচ্ছে, আন্দোলনের গতিপথ তত পাল্টে যাচ্ছে। আন্দোলনে নামছেন সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা। বন্ধ হচ্ছে শিক্ষাঙ্গনসহ রাজপথ। চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে যারা নীরব ভূমিকা পালন করেছিলেন এতদিন, তারাও মুখ খুলতে শুরু করেছেন। সরকার বিরোধীরাও একাট্টা হচ্ছেন ধীরে ধীরে। প্রশ্নটা থেকেই যায়, তাহলে কোন দিকে যাচ্ছে এই আন্দোলন?

বিডি/এম

শেয়ার করুনঃ
Advertisement