বিশ্ব ডিম দিবসের বৈশ্বিক ও দেশীয় পারিপার্শ্বিকতা

বিশ্ব ডিম দিবসের বৈশ্বিক ও দেশীয় পারিপার্শ্বিকতা

মো. মাহিদুজ্জামান সিয়াম

Published : ১৪:০৫, ২৮ অক্টোবর ২০২৪

সাশ্রয়ী মূল্যের এবং অত্যন্ত পুষ্টিকর খাদ্যের উৎস হিসাবে ডিমের অবিশ্বাস্য উপকারিতা সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতি বছরের অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় শুক্রবার বিশ্বব্যাপী বিশ্ব ডিম দিবস উদযাপিত হয়। সেই হিসেবে এবার ১১ অক্টোবর শুক্রবার 'ডিমে পুষ্টি ডিমে শক্তি, ডিমে আছে রোগমুক্তি' শীর্ষক প্রতিপাদ্যের আলোকে দেশব্যাপী পালিত হবে বিশ্ব ডিম দিবস।

বিশ্ব ডিম দিবসের বৈশ্বিক পারিপার্শ্বিকতা:

১৯৬৪ সালে ডিমকে বিশ্বে একটি উন্নতমানের ও সহজলভ্য আমিষজাত খাদ্য হিসেবে পরিচিত করার লক্ষ্যে যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল এগ কমিশন (আইইসি) স্থাপিত হয়। বর্তমানে যার সদস্য সংখ্যা ৮০। প্রাণিজ আমিষের চাহদিা পূরণ, স্বাস্থ্যবান ও মেধাবী জাতি গঠন এবং সর্বোপরি ডিমের গুণাগুণ সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে সংস্থাটি ১৯৯৬ সালে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় প্রথম ‘বিশ্ব ডিম দিবস’ পালনের আয়োজন করে।

যার পরবর্তীতে এটি প্রতিবছর অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় শুক্রবার পালিত হয়ে আসছে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ভারত, বাংলাদেশ সহ সারা বিশ্বের ৪০টি দেশে পালিত হয় ‘বিশ্ব ডিম দিবস’, যার পরিধি ও বিস্তৃতি ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

বিশ্ব ডিম দিবসের বাংলাদেশীয় পারিপার্শ্বিকতা:

২০১৩ সাল থেকে ইন্টারন্যাশনাল এগ কমিশনের বাংলাদেশ প্রতিনিধি হিসেবে ‘বাংলাদেশ অ্যানিমেল অ্যাগ্রিকালচার সোসাইটি (বিএএএস)’ নিযুক্ত হয়। সে বছরের ১১ অক্টোবর প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে ‘বিশ্ব ডিম দিবস’ উদযাপিত হয়, যা ছিল বিশ্ব জুড়ে ডিম দিবসের ১৮তম উদযাপন বর্ষ। সেই থেকে বাংলাদেশে প্রতি বছর বিশ্ব ডিম দিবস উদযাপন হয়।

বিশ্বের ডিম শিল্পের উন্নয়নে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) ইন্টারন্যাশনাল এগ কমিশনের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তির মাধ্যমে একযোগে কাজ করে যাচ্ছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে দিবসটির গুরুত্ব অনুধাবন করে বাংলাদেশ সরকারের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ সহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারী প্রতিষ্ঠান যেমন বাংলাদেশ পোলট্রি শিল্প কেন্দ্রীয় কমিটি (পোল্ট্রি ইন্ডাষ্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল-বিপিআইসিসি), বাংলাদেশ অ্যানিমেল অ্যাগ্রিকালচার সোসাইটি সহ অনেক সংগঠন, পাবলিক-প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের উদ্যোগে ঢাকাসহ সবগুলো বিভাগীয় ও জেলা শহরগুলোতে উৎসাহের সাথে দিবসটি নিয়মিত পালন করে আসছে। যাতে বাংলাদেশ সরকারকে সার্বিক সহযোগিতা এবং তত্ত্বাবধানে রয়েছে ইন্টারন্যাশনাল এগ কমিশন ও এফএও।

এবারে ঢাকার কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে ভ্যাব ও দি ভেট এক্সিকিউটিভের উদ্যোগে দিনব্যাপী উৎযাপিত হচ্ছে ‘বিশ্ব ডিম দিবস’। প্রান্তিক পর্যায়ে ডিমের পুষ্টিগুণ ও জনসাধারণকে ডিমের গুরুত্ব বোঝাতে এবং খামারিদের উৎপাদন মুখী করতে দেশের প্রত্যেকটি উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা প্রাণীসম্পদ দপ্তরের মাধ্যমেও  সভা, সেমিনার, বিনামূল্যে ডিম বিতরণ কর্মসূচি সহ নানা উদ্যোগ হাতে নিয়েছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর।

এছাড়া বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থীরা এই দিনটি বর্ণাঢ্য র‍্যালি, স্লোগান, সেমিনারের মাধ্যমে উদযাপন করছে।

লেখক: মো. মাহিদুজ্জামান সিয়াম, শিক্ষার্থী: ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সায়েন্সেস অনুষদ, গণ বিশ্ববিদ্যালয়।

বিডি/এন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement