সমালোচনার ক্ষেত্রে ইসলাম যেসব গুণের কথা বলেছে
Published : ২০:৫২, ২১ নভেম্বর ২০২৪
ইসলাম হলো আল্লাহ তাআলার কাছে আত্মসমর্পণ করা। বিনা দ্বিধায় তার আদেশ-নিষেধ মেনে চলা এবং তার প্রদত্ত জীবনবিধান অনুসারে জীবন যাপন করা। ইসলামের শিক্ষা হলো, সমালোচককে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পর্যাপ্ত জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হবে। অসম যোগ্যতা নিয়ে কারো সঙ্গে বিতর্ক করলে সত্যের অবস্থান খাটো হয়।
সমালোচকের যেসব জ্ঞান অপরিহার্য তা হলো-
১) সত্য-মিথ্যা নির্ণয়ের যোগ্যতা
সংশ্লিষ্ট বিষয়ে শরিয়তের সঠিক অবস্থান নির্ণয়ের যোগ্যতা থাকা। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে আমার পিতা! আমার কাছে এমন জ্ঞান অবতীর্ণ হয়েছে, যা আপনার কাছে নেই। সুতরাং আপনি আমার অনুসরণ করুন। আমি আপনাকে সঠিক পথ দেখাব।’ (সুরা : মারিয়াম, আয়াত : ৪৩)
২) আলেমদের সমালোচনা নয়
দ্বীনের ব্যাপারে আল্লাহ আলেমদের মর্যাদাবান করেছেন। সুতরাং কোনো সাধারণ মানুষ আলেমদের সমালোচনা করবে না, বরং আলেমদের কোনো কাজ তার বোধগম্য না হলে তাঁদের কাছ থেকে বুঝে নেবে।
আল্লাহ বলেছেন, ‘তোমরা জ্ঞানীদের জিজ্ঞাসা করো, যদি তোমরা না জানো।’
৩) আলেম হওয়াই যথেষ্ট নয়
যেসব আলেম দ্বীনি জ্ঞানে পারদর্শী নয় অথবা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পর্যাপ্ত জ্ঞান রাখে না, তারাও বড়দের কাজের সমালোচনা করবে না। ইরশাদ হয়েছে, ‘মুসা তাকে বললো, সত্য পথের যে জ্ঞান আপনাকে দেওয়া হয়েছে তা থেকে আমাকে শিক্ষা দেবেন—এই শর্তে আমি কি আপনাকে অনুসরণ করব?’ (সুরা : কাহফ, আয়াত : ৬৬)
৪) আনুষঙ্গিক জ্ঞানও থাকতে হবে
কোনো বিষয়ে বর্ণিত আয়াত ও হাদিস মুখস্থ থাকাই সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিতর্কে লিপ্ত হওয়া বা সমালোচনার জন্য যথেষ্ট নয়। সংশ্লিষ্ট আয়াত ও হাদিস দ্বারা পূর্ববর্তী বিশেষজ্ঞ আলেমরা কিভাবে দলিল উপস্থাপন করেছেন, এসব আয়াত ও হাদিসের অর্থ ও ব্যাখ্যায় তাঁদের বক্তব্য, এই বিষয়ে রাসুলুল্লাহ (সা.), সাহাবিরা, খাইরুল কুরুন (উত্তম যুগের) ও পূর্ববর্তী মুজতাহিদ আলেমদের কর্মপদ্ধতিও সমালোচকের সামনে থাকতে হবে।
ইমাম শাতেবি (রহ.) বলেন, ‘ইসলামী শরিয়তের দলিল অনুসন্ধানকারী প্রত্যেকের জন্য আবশ্যক হলো এই দলিল দ্বারা পূর্ববর্তীরা কি বুঝেছেন এবং তাঁদের আমল (প্রয়োগ) কী ছিল তা লক্ষ্য করা। কেননা তা সত্য অনুসন্ধানে বেশি সহায়ক এবং জ্ঞানার্জন ও প্রয়োগের ক্ষেত্রে বেশি শক্তিশালী ও ভারসাম্যপূর্ণ।’ (আল মুওয়াফাকাত ফি উসুলিশ-শরয়ি : ২/৫৬)
৫) প্রশ্ন তোলার আগে পর্যালোচনা
সমালোচক নিজের অর্জিত জ্ঞানের ওপর নির্ভর না করে সংশ্লিষ্ট বিষয়টি নিয়ে পুনঃ পর্যালোচনা করবে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘হ্যাঁ, তোমরাই তো সেসব লোক, যে বিষয়ে তোমাদের সামান্য জ্ঞান আছে সে বিষয়ে তোমরা তর্ক করেছ, তবে যে বিষয়ে তোমাদের জ্ঞান নেই সে বিষয়ে কেন তোমরা তর্ক করছ। আল্লাহই ভালো জানেন, তোমরা জানো না।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ৬৬)
এই আয়াতে আল্লাহ তাআলা জ্ঞানহীন ও অপর্যাপ্ত জ্ঞান নিয়ে তর্কে লিপ্ত হওয়া উভয় শ্রেণির মানুষের নিন্দা করেছেন।
বিডি/এন