চীনা ফুটবলে আজীবন নিষিদ্ধ ৪৩ জন

চীনা ফুটবলে আজীবন নিষিদ্ধ ৪৩ জন

ক্রীড়া ডেস্ক

Published : ২০:৫৭, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে গত সপ্তাহে জাপানের কাছে ৭-০ গোলে হেরে আলোচনায় উঠে আসে চীন। তবে এবার আরও বড় কারণে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে দেশটির ফুটবল। জুয়া ও ম্যাচ ফিক্সিংয়ের অভিযোগে আজীবন নিষিদ্ধ হয়েছেন চীনের ৪৩ জন।

আজীবনের জন্য এ ৪৩ জনকে নিষেধাজ্ঞা দেয় চায়নিজ ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (সিএফএ)। নিষিদ্ধ হওয়ার তালিকায় রয়েছে চীন জাতীয় দলের সাবেক ৩ ফুটবলার। এ ছাড়া নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার জার্সিতে কাতার বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া সন জুন-হোও।

সোমবার (১০ সেপ্টেম্বর) চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সাম্প্রতিক সময়ে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ক্রীড়াঙ্গনকে দুর্নীতি মুক্ত করতে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। এ জন্য কারাগারে যেতে হয়েছে শীর্ষ অনেক কর্মকর্তাকে। তিনি ফুটবলের বড় ভক্ত। তার স্বপ্ন একদিন বিশ্বকাপ জিতবে চীন।

তবে কর্মকর্তারা বারবার দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়া আর মাঠে ফুটবলারদের হতাশাজনক পারফরম্যান্সে ফিকে হয়ে এসেছে সেই স্বপ্ন। এতে আরও কঠোর অবস্থান নেন চীনের প্রেসিডেন্ট।

দুই বছর ধরে দেশীয় খেলায় অবৈধ জুয়া ও ম্যাচ ফিক্সিংয়ের তদন্ত করা হচ্ছে উল্লেখ করে চীনের জননিরাপত্তা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এতে ১২৮ জনের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। সে তালিকার ৪৩ জনকে আজীবন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নিষিদ্ধ হওয়াদের মধ্যে বেশিরভাগই সাবেক পেশাদার খেলোয়াড়।

২০২১ থেকে ২০২৩, এ তিন মৌসুম চায়নিজ সুপার লিগে খেলেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার হয়ে কাতার বিশ্বকাপের তিন ম্যাচে মাঠে নামা সন জুন হো। শানডং তাইশানের হয়ে খেলার সময় তিনি ম্যাচ ফিক্সিংয়ে জড়িয়ে পড়েন। এ ছাড়া ঘুষ নেওয়ার অভিযোগও উঠেছে তার বিরুদ্ধে।

এমনকি ২০২৩ সালের মে মাসে আটক হন। এরপর ১০ মাস জেলও খাটেন। চলতি বছর মার্চে তাকে ফেরত পাঠায় চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ দিকে নিষেধাজ্ঞার খবরে হতভম্ব হয়ে পড়েছেন সনের প্রতিনিধি। দক্ষিণ কোরিয়ার বার্তা সংস্থাকে সেই প্রতিনিধি জানান সমাধানের লক্ষ্যে সন দ্রুত গণমাধ্যমে কথা বলবেন।

নিষিদ্ধ হওয়ার ফুটবলারদের তালিকায় আরও রয়েছেন মিডফিল্ডার চিং চিংডাও, জাতীয় দলের সাবেক গোলকিপার গু চাও এবং ফরোয়ার্ড গুয়ো তিয়ানয়ু। ফুটবলাররা ছাড়াও দুর্নীতিতে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় সিএফএর প্রায় ১০ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে অপসারণ করা হয়েছে।

এ ছাড়া গত মার্চে বিপুল পরিমাণে ঘুষ নেওয়ার দায়ে সিএফএর সাবেক চেয়ারম্যান চেন সুইউয়ান আমৃত্যু কারাদণ্ডে দণ্ডিত হয়েছেন।

চীনের গণমাধ্যম পিপলস ডেইলি তাদের এক প্রতিবেদনে জানায়, ‘চায়নিজ ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের প্রধানের দায়িত্বে থাকাকালে চেন সুইউয়ান ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। বিভিন্ন জনের কাছ থেকে তিনি অবৈধভাবে ৮ কোটি ১০ লাখ ৩০ হাজার ইউয়ান (বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৩৬ কোটি ১০ লাখ ৭০ হাজার টাকা) নিয়েছেন। তার এ ধরনের কর্মকাণ্ড জাতীয় ফুটবল শিল্পের মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনে।’

চীন জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক কোচ লি তিয়েও গত মার্চে সব দোষ স্বীকার করেন। ম্যাচ ফিক্সিংয়ে সহায়তা করতে ১ কোটি ৭ লাখ মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১২৮ কোটি টাকা) ঘুষ নিয়েছিলেন তিনি।

প্রসঙ্গত, গত মে মাস থেকে চীনের ক্রীড়া প্রশাসনের সাবেক মহাপরিচালক গু জংওয়েনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত চলছে। আর গত আগস্টে ঘুষ নেওয়ার দায়ে সিএএফএর সহসভাপতি লি ইউয়িকে ১১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির এক আদালত।

বিডি/এন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement