গরুর মাংসের আচার বিক্রি করে লাখপতি সীমা

গরুর মাংসের আচার বিক্রি করে লাখপতি সীমা

নিজস্ব প্রতিবেদক

Published : ১৮:৫৯, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

আচারের নাম শুনলেই সবার জিহ্বায় পানি আসে। আম, আমলকী, চালতা, বড়ই কিংবা তেতুলের আচার নয়। তাও আবার গরুর মাংসের আচার? গরুর মাংসের আবার আচার হয়। এটি আবার কেমন আচার? খেতেই বা কেমন স্বাদ, নানান প্রশ্ন জাগে আচার প্রেমীদের মনে।

প্রথমে নাম শুনে অবাক হলেও এই ভিন্ন স্বাদের আচারের স্বাদ নিতে বেশ আগ্রহী হয়ে থাকেন ক্রেতারা। চর্বি ছাড়া মাংস ও খাঁটি সরিষার তেল দিয়ে আচারের বিভিন্ন উপকরণে তৈরি হয় মাংসের আচার। হাতের তৈরি এ আচারে সুনাম কুড়িয়ে দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও ব্যাপক সাড়া পেয়েছেন রংপুরের সফল উদ্যোক্তা সীমা ইসলাম।

উদ্যোক্তা হওয়ার শুরুটা এক হাজার টাকা টাকা দিয়ে হলেও তিনি এখন লাখপতি। আচার বিক্রি করে ১০ লক্ষ টাকা আয় করেছেন। নিজের দক্ষতায় স্বাবলম্বী হয়েছেন সীমা ইসলাম। হাতের কাজ ও বাহারি আচারের মধ্য দিয়ে ব্যাপক পরিচিতি পান তিনি। আলু বোখারার আচারে নিজের নাম ছড়িয়ে পড়ে আচার ওয়ালী হিসেবে।

২০২০ সালে বিশেষ করে চমক দিয়েছেন গরুর মাংসের আচার তৈরি করে। কেজিপ্রতি গরুর মাংসের আচার বিক্রি করেন ১ হাজার ৮০০ টাকা দরে। পরিবার সামলে প্রতিমাসে আচার বিক্রি দিয়ে যেন ফুসরত মিলে না তার।

রংপুরের পায়রাবন্দে জন্ম গ্রহণ করেন সীমা ইসলাম। এইচএসসির গন্ডি পেরিয়ে বসতে হয়েছে বিয়ের পিঁড়িতে। তারপর থেকেই মায়ের আচারের স্বাদকে আকড়ে ধরে উদ্যোক্তা হিসেবে নিজের অনলাইন পেইজে শুরু করেন আচারের প্রচার। এভাবেই দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও এখন পরিচিত সফল উদ্যোক্তা সীমা ইসলাম।

সফল উদ্যোক্তা সীমা ইসলাম বলেন, হাতের কাছে যা ছিল তাই দিয়ে শুরু করেছি। বোনদের জামা তৈরিতে ১ হাজার টাকার কাজ অর্ডার নিয়ে যাত্রা শুরু করে এখন লাখপতি। গরুর মাংসের আচার বিক্রি করে ১০ লক্ষাধিক টাকা আয় করেছি। এই দিনটি পেতে অনেক বাধা বিপত্তি পেরিয়ে আসতে হয়েছে।

স্বামীসহ পরিবারের সবাইে আমাকে সাপোর্ট করেছে। তাদের অনুপ্রেরণায় নিজের পরিশ্রমে এতদূর এগিয়েছি। বিশেষ করে বাজারে টিকে আছি।

তিনি আরও বলেন, দেশের ৬৪ জেলায় আমার হাতের তৈরি আচার ও পোশাক যায়। এমনকি বিদেশেও ডিমান্ড অনুযায়ী ৯টি দেশে আচার পাঠিয়েছি। উদ্যোক্তাদের প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হবে।

বাজারে প্রচারের সুযোগে নিজের তৈরি পণ্যকে ব্রান্ড হিসেবে পরিচিত করার প্রত্যাশা রয়েছে। আর একজন উদ্যোক্তা হিসেবে অন্যান্যদের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিতে পারলেই সেটাই আনন্দের বিষয়। এখন আমার হাতের কাজ নিয়ে অনেককেই সুযোগ করে দিতে পেরেছি আগামীতে পরিধি বাড়ানোর ইচ্ছে আছে।

তার হাতের নিপুণ ছোঁয়ায়, নানা প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে সীমা ইসলাম শুধু স্বাবলম্বী নন, তার ঝুলিতে জমেছে বেশ কিছু সফলতার পুরস্কার। গুটি গুটি পায়ে অসংখ্য উদ্যোক্তাদের মাঝে মানসম্পন্ন তৈরি পণ্য দিয়ে আগামীতে নিজেকে ব্রান্ড হিসেবে তুলে ধরতে চান তিনি।

হাজারো উদ্যোক্তার অনুপ্রেরণা হয়ে বাজারে টিকে থাকার লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে চান সীমা ইসলাম।

বিডি/এন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement