শখ থেকে সফল উদ্যোক্তা ইফতি

শখ থেকে সফল উদ্যোক্তা ইফতি

জেলা প্রতিনিধি

Published : ১৭:৩৪, ১৮ জুলাই ২০২৪

শখ থেকে কোয়েল পাখি পালন শুরু করেন বাণিজ্যিকভাবে সফল উদ্যোক্তা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্র আবির হাসান ইফতি। সোনারগাঁও সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক ইতিহাসের অনার্স থার্ড ইয়ারের ছাত্র তিনি।

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার, মোগরাপাড়া ইউনিয়নের বাড়িমজলিশ এলাকায় নিজ বাড়ির বারান্দায় শখ করে কিছু কোয়েল পাখি লালন পালন করতেন। কোয়েল অল্প খাবার ও অল্প জায়গাতেই লালন পালন করা যায়।কোয়েল পাখির মাংস ও ডিম বেশ সুস্বাদু। বাজারে ব্যাপক চাহিদা থাকায় বাণিজ্যিকভাবে শুরু করেন ইফতি। কোয়েল পালনে সাফল্য পাওয়ায় ইফতির খামারে এখন প্রায় ৪ হাজার কোয়েলের বসবাস। মাসিক আয় প্রায় দেড় লাখ টাকা।

ইফতির বাবা সাবেক সোনারগাঁও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শাহা আলম রুপন জানান, আমার ছোট্ট ছেলে ইফতি পাখি খুবই পছন্দ করে। শখের কোয়েল পাখি বাণিজ্যিকভাবে লালন পালনের কথা জানালে আমরা তাকে সাপোর্ট করি। এখন সে ভাল করছে। সে নিজে উপার্জন করতে শিখেছে।

উদ্যোক্তা আবির হাসান ইফতি জানান, আমি পড়াশোনার পাশাপাশি কিছু একটা করতে চেয়েছিলাম। শখে আমি ১৫ থেকে ২০টা কোয়েল পাখি পালতাম তখন এর ডিম বিক্রি হতো এবং বাজারে অনেক চাহিদা লক্ষ্য করি। তার পর ৫শ’ কোয়েল পাখি নিয়ে আড়াই বছর আগে খামার তৈরি করি। এখন আমার খামারে প্রায় ৩ হাজার ৫০০ বেশি পাখি আছে। প্রতিদিন কমপক্ষে ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২শ’ ডিম পাই।

পাইকারি ডিম বিক্রি করি এখন ২ টাকা ৫০ পয়সা এবং কোয়েল পাখির বাচ্চাও বিক্রি করি। শীতের সিজনে খামারে প্রায় ১০ হাজার পাখি থাকে। শীতের সিজনে ডিমের পাইকারি দাম থাকে প্রায় ৩ টাকা ২০ পয়সা থেকে ৩ টাকা ৪০ পয়সা। মাত্র ২ জন লোক দিয়ে সম্পূর্ণ খামার পরিচালনা করি। সকল খরচ বাদ দিয়ে সৃজন বাদে শুধু ডিম বিক্রি থেকে প্রায় ৪০ হাজার টাকা মাসিক আয় হয়।কোয়েল পাখির বাচ্চা বিক্রির টাকাতো আছেই। শীতের সিজনে আলহামদুলিল্লাহ খামারের প্রফিট অনেক বেশি বৃদ্ধি পায়।

কোয়েল পাখি ১৫ সেমি. থেকে ২০ সেমি. হয় এর ওজন ১২০ থেকে ১৫০ গ্রাম হয়। স্ত্রী কোয়েল পাখি বছরে ২০০ থেকে ২৫০টি ডিম দেয়। প্রতিটি ডিমের ওজন ৮ থেকে ১২ গ্রাম হয়। কোয়েল পাখি ১৭-১৮ দিনের মধ্যে বাচ্চা দেয় এবং ৬ থেকে ৭ সপ্তাহের মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে ডিম দিয়ে থাকে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডাক্তার মো. ফারুক আহাম্মেদ জানান, কোয়েল পাখির ডিমে অত্যন্ত পুষ্টিগুণে ভরপুর পটাশিয়াম, জিং, ভিটামিন বি১২, ৬, ভিটামিন-সি, ভিটামিন-এ, ভিটামিন-ই। এর উপকারিতা অনেক এলার্জির লক্ষণ ও মাত্রা কমাতে সাহায্য করে, সর্দি, কাশি, হাপানি কমাতে সাহায্য করে, ত্বক কোমল রাখে, রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করে, বাচ্চাদের মেধা বিকাশের সাহায্য করে, ডায়াবেটিস টু প্রতিরোধ করে। কোয়েল পাখি খাদ্য ও টিকা মেনটেইন করে লালন পালন করলে অনেক লাভজনক। অল্প খরচে ও অল্প জায়গাতেই কোয়েল পাখি লালন-পালন করা যায়।

তিনি আরো জানান, প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে আমরা খামারিদের সহযোগিতা করে থাকি। কোয়েল পাখি খামারিদের ভ্যাকসিন, টিকা সরকারি রাজস্বে তাদের বিতরণ করে থাকি। যেকোনো রোগ বালাইয়ের ক্ষেত্রে চিকিৎসা ও পরিচর্চার বিষয় পরামর্শ দিয়ে থাকি।

সোনারগাঁও উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে জানানো হয়, সোনারগাঁওয়ে প্রায় ৫টি বড়ো কোয়েল পাখির খামার নিয়মিত পরামর্শ নিয়ে থাকে। এছাড়াও আরও কোয়েল পাখির খামার আছে এবং নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হচ্ছে।

বিডি/এন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement