ড্রোন: ইরানের শহীদ-১৩৬ কতটা ভয়ংকর

ড্রোন: ইরানের শহীদ-১৩৬ কতটা ভয়ংকর

প্রযুক্তি ডেস্ক

Published : ২৩:২৬, ৮ জানুয়ারি ২০২৫

যুদ্ধে রণাঙ্গন কাঁপাচ্ছে ইরানের তৈরি শহীদ-১৩৬ ড্রোন। মিত্র রাশিয়াকেও ভয়ংকর এই ড্রোন দিয়েছে তেহরান। রাশিয়ায় এটিকে বলা হয় ‘গেরান-২’। এ ড্রোনটি মূলত সুইসাইড ড্রোন। অর্থাৎ লক্ষ্যবস্তুতে গিয়ে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ধ্বংস করে দেয় নিজেকেই। এর বাইরেও ইরানি এই ড্রোনের রয়েছে আরও বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য। যে কারণে এই ড্রোন পেতে মুখিয়ে থাকে যে কোনো দেশ।

একটি রুশ ক্যালিবার ক্রুজ মিসাইলের দাম প্রায় ১০ লাখ ডলার। যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি টমাহক মিসাইলের দাম ২০ লাখ ডলার। সেখানে ইরানের তৈরি শহীদ ১৩৬-এর দাম মাত্র ১০ থেকে ২০ হাজার ডলার! অর্থাৎ এটি একটি গড় আমেরিকান গাড়ির চেয়েও সস্তা।

সোয়ার্ম ড্রোন : একটি ধ্বংসাত্মক কৌশল

এককভাবে না চালিয়ে এই ড্রোনগুলো ‘সোয়ার্ম’ বা দলবদ্ধভাবে ছোড়া হয়। অর্থাৎ, একসঙ্গে ৫ থেকে ১০টি ড্রোন নিক্ষেপ করে। প্রতিপক্ষের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম মোতায়েন করা থাকলেও অন্তত ২-১টি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনে সব ধ্বংস করে দেয়।

ইঞ্জিন ও শব্দেই ভয় পায় শত্রুপক্ষ

এটি সস্তা ‘মোপেড ইঞ্জিনে’ চলে। সাধারণত ইজিবাইকে এটি ব্যবহার করা হয়। এ ধরনের ইঞ্জিন চীন থেকে আমদানি করে ইরান। মজার বিষয় হলো— এই ড্রোনের শব্দ অনেকটা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্যবহৃত জার্মান ‘স্টুকা’ বিমানগুলোর মতো, যা শত্রুর মধ্যে ভয় তৈরি করত।

গাইডেন্স সিস্টেম

আমেরিকার জিপিএস সিস্টেম বাদ দিয়ে রাশিয়ার গ্লোনাস প্রযুক্তির সাহায্যে দিক নির্ণয় করে চলে এই ড্রোন। এতে রকেট অ্যাসিস্টেড টেক-অফ প্রযুক্তি রয়েছে, যা দ্রুতগতিতে ড্রোনটিকে লঞ্চ করতে সাহায্য করে।

ফাঁকি দিতে পারে শত্রুর রাডার

স্টেলথ প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে শাহেদ-১৩৬ ড্রোন। ফলে, রাডার, তাপমাত্রা সিগন্যাল, বা অন্যান্য সেন্সরের মাধ্যমে ড্রোনটি শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়ে। এ ছাড়া একদম নিচ দিয়ে উড়তে সক্ষম হওয়ায় এটিকে ইন্টারসেপ্ট বা ধ্বংস করাটাও বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়ায়।

সীমাবদ্ধতা:

গাইডেন্স দুর্বলতা ড্রোনের গাইডেন্স সিস্টেম জ্যাম বা ধ্বংস করা সম্ভব হলে এটি লক্ষ্যচ্যুত হতে পারে। ধীর গতি এর গতি কম হওয়ায় স্টিংগার বা জ্যাভেলিন মিসাইল দিয়ে এটি ধ্বংস করা সহজ। অ্যান্টি-এয়ারক্রাফট প্রতিরোধ জার্মানির জাপার্ড এন্টি-এয়ারক্রাফট গান বা সোভিয়েতের ইউ-২৩ এই ড্রোন প্রতিরোধে কার্যকর।

সীমাবদ্ধতা থাকার পরেও ভয়ঙ্কর

যদিও এককভাবে এই ড্রোনটি ধ্বংস করা সম্ভব, তবে একসঙ্গে পাঁচ বা দশটি ড্রোন লঞ্চ করা হলে একটি অন্তত লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছাবেই। এই সস্তা কিন্তু কার্যকর ড্রোন শত্রুকে মনস্তাত্ত্বিক চাপে ফেলতে এবং তাদের প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়াতে বাধ্য করছে।

বিডি/এন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement