বিশ্বের সবচেয়ে দামি সাইকেল সম্পর্কে জেনে নিন
![বিশ্বের সবচেয়ে দামি সাইকেল সম্পর্কে জেনে নিন বিশ্বের সবচেয়ে দামি সাইকেল সম্পর্কে জেনে নিন](https://www.thebusinessdaily.net/media/imgAll/2024November/1-2411071942.jpg)
Published : ০২:০২, ৮ নভেম্বর ২০২৪
বাইসাইকেল বা দ্বিচক্রযান হচ্ছে দুই চাকা বিশিষ্ট পায়ে চালানোর একটি বাহন। যাকে বাংলায় শুধু 'সাইকেল' বলা হয়। প্রতিদিনের যাতায়াত বা শরীরচর্চার মাধ্যম হিসাবে সবাই সাইকেল ব্যবহার করে থাকেন। কেউ বা আবার প্রতিযোগিতার জন্য সাইকেল চালান।
বিশ্ব জুড়ে সাইকেলের বাজার লোকসানের মুখ খুব একটা দেখে না। বিশ্বের সবচেয়ে দামি সাইকেলগুলির দাম জানেন কি? জানলে অবাক হতেই হবে। অবশ্য সাইকেল বিলাসীদের জন্য এ তেমন কিছুনা।
তাহলে চলুন জেনে নেই বিশ্বের দামি সাইকেল সম্পর্কে-
বেভারসি হিলস এডিশন:
বিশ্বের সবচেয়ে দামি বাই সাইকেলের তালিকায় বেভারসি হিলস এডিশনের সাইকেলের নাম রয়েছে। এই সাইকেল বানাতে সময় লাগে ৭৫০ ঘণ্টা।
বেভারসি হিলস এডিশনের সাইকেলটি ৬০০ কালো হীরা এবং ৩০০ নীলকান্তমণি দিয়ে তৈরি। ভারতীয় মুদ্রায় এই সাইকেলের দাম আনুমানিক সাত কোটি রুপি। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৯ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা মাত্র।
ট্রেক বাটারফ্লাই ম্যাডন
বিশ্বের দামি সাইকেলের তালিকায় রয়েছে ট্রেক বাটারফ্লাই ম্যাডন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিল্পী ড্যামিয়েন হার্স্ট সাইকেলটি তৈরি করেছিলেন যা বিশ্ব জুড়ে সাড়া ফেলে দেয়।
জানা যায়, প্রজাপতির ডানা দিয়ে নাকি এই সাইকেল তৈরি করা হয়। সে কারণে অনেকেই সাইকেল প্রস্তুতকারী সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলে।
ট্রেক বাটারফ্লাই ম্যাডন বাংলাদেশ-ভারতে পাওয়া যায় না। এই সাইকেলের দাম এতই বেশি যে সাইকেলটি নিলামে তোলা হয়। শোনা যায় সাইকেলটি নিলামে বিক্রি করে যে টাকা পাওয়া গিয়েছিল তা ক্যানসার আক্রান্তদের চিকিৎসায় দান করে দেওয়া হয়।
২৪কে গোল্ড রেসিং বাইক
বিশ্বের সবচেয়ে দামি সাইকেলের তালিকায় নাম লিখিয়েছে ২৪কে গোল্ড রেসিং বাইক। এই সাইকেলটির সর্বনিম্ন মূল্য ভারতীয় মুদ্রায় ৩ কোটি টাকা। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা মাত্র।
ট্রেক ইয়োশিমোটো নারা
ট্রেক ইয়োশিমোটো নারা সাইকেলও বিশ্বের দামি সাইকেলের তালিকায় নাম লিখিয়েছে। এই সাইকেলটি তৈরি করতে মোট তিন ধরনের রং ব্যবহার করা হয়। ভারতীয় মুদ্রায় দেড় কোটি টাকা মূল্য। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ২ কোটি টাকার ওপরে আসে।
পিজি বুগাটি চিরন
ফ্রান্সের গাড়ি প্রস্তুতকারী সংস্থা বুগাটি একটি সাইকেল তৈরি করেছে। সাইকেলের ওজন খুবই কম। সংস্থার দাবি, পাঁচ কেজি ওজনের সাইকেলটি যে কোনো রাস্তায় চালানো যায়। অত্যাধুনিক প্রযুক্তি এবং ডিজাইনের দামি সাইকেল। বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় গাড়ি বুগাটি চিরনের আদলে তৈরি হয়েছে এই সাইকেল। যার নাম পিজি বুগাটি চিরন বাইক।
সংস্থার দাবি, এটি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যা সর্বোচ্চ ১৫০০ হর্সপাওয়ার উৎপন্ন করতে পারে। এই সাইকেলটি দামি হওয়ার পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে, নাসার মহাকাশ অভিযানে ব্যবহৃত উপাদান ও যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয়েছে। এই সাইকেল ৯৫ শতাংশ অর্থাৎ সিট, হ্যান্ডেল সব কার্বন ফাইবার দিয়ে তৈরি।
সাইকেলে রয়েছে একটি বিশেষ বাটন, যা চাপলেই বদলে যাবে রং। রাস্তা যেমনই হোক না কেন আরাম দেওয়ার জন্য রয়েছে ফিক্সড গিয়ার বেল্ট ড্রাইভ, অ্যাবসর্বিং বার এবং চামড়ার আসন। জানা গিয়েছে, ফর্মুলা ওয়ান ইঞ্জিনিয়ারদের তত্বাবধানে তৈরি হয়েছে এই সাইকেল। এটি একটি লিমিটেড এডিশন। যা জেনেভা মোটর শো-তে সামনে এনেছিল সংস্থা।
অত্যন্ত নিখুঁতভাবে ডিজাইন করা হয়েছে সাইকেলটি। এমন সাইকেল কিনতে গেলে ৩৯ হাজার ডলার প্রস্তুত রাখতে হবে। তবেই হাতে মিলবে চাবি। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৪২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা।
অডি ই-বাইক
বিশ্বের গাড়ি প্রস্তুতকারী সংস্থা অডি এক ধরনের ইলেকট্রনিক সাইকেল তৈরি করেছে। সাইকেলটি প্রতি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৮০ কিলোমিটার গতিবেগে ছুটতে পারে। অডির ই-বাইকটি সাধারণত রেসিং সাইকেল হিসাবে ব্যবহৃত হয়।
অডির এই সাইকেলে মোট ১৪টি গিয়ার রয়েছে। আটটি গিয়ার সামনের দিকে এবং ছ’টি পিছনের দিকে রয়েছে। ভারতীয় মুদ্রায় অডি ই-বাইকের আনুমানিক মূল্য ৮ লক্ষ টাকা থেকে ১৪ লক্ষ টাকা। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় আসে প্রায় ১১ লক্ষ থেকে ২০ লক্ষ টাকা।
সাইকেল
১৯ শতকে ইউরোপে সাইকেলের উদ্ভব হয়। সাম্প্রতিক কালে বাংলাদেশে সাইকেলের জনপ্রিয়তা লক্ষ করার মতো। ২০০৩ সাল পর্যন্ত সারা বিশ্বে ১০০ কোটিরও বেশি সাইকেল তৈরি করা হয়েছে।
১৮৪৭ সালে সাইকেল শব্দটি প্রথম ব্যবহৃত হয় একটি ফরাসি প্রকাশনায়, সম্ভবত দুই চাকার একটি গাড়ির এক অজ্ঞাত পরিচয় বর্ণনা করতে।
সাইকেল প্রথম আবিষ্কারের দাবি করেন অনেকেই।তবে দুই চাকার বাহন জনসম্মুখে প্রথম আনেন জার্মানির কার্ল ভন ড্যারন। তিনি ১৮১৭ সালে জার্মানিত ম্যানহেইম শহরে তার আবিষ্কৃত বাহনের প্রদর্শনী করেন।
প্রথম দিকের সাইকেলের দুই চাকা সমান ছিলো না। ১৮৮০ সালে সর্বপ্রথম দুই চাকা সমান পর্যায়ে নিয়ে আসা হয় এবং চেইন ও টায়ার সংযুক্ত করা হয়।
তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা, আর্কিটেকচারাল ডাইজেস্ট ও গুগল
বিডি/এন