১৫ লাখ মাইল দূর থেকে যোগাযোগ করলো ভয়েজার-১

১৫ লাখ মাইল দূর থেকে যোগাযোগ করলো ভয়েজার-১

প্রযুক্তি ডেস্ক

Published : ১৫:২৮, ২৬ নভেম্বর ২০২৪

সোলার সিস্টেম (সূর্য নক্ষত্রকে ঘিরে আমাদের সৌরমণ্ডল) ও অন্যান্য তারকারাজি মধ্যে বিদ্যমান স্থানে (ইন্টারস্টেলার স্পেস) অবস্থানকারী স্পেসক্রাফট ভয়েজার-১ পৃথিবীর সঙ্গে ফের যোগাযোগ করতে সক্ষম হয়েছে। শনিবার (২ নভেম্বর) বিজ্ঞানবিষয়ক নিউজপোর্টাল স্পেস.কম নাসার বরাত দিয়ে এ খবর প্রকাশ করেছে।

খবরে বলা হয় ভয়েজার-১ পৃথিবীপৃষ্ঠ থেকে বর্তমানে ১৫ লাখ মাইল দূরে অবস্থান করছে। ৪৭ বছর আগে ১৯৭৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের নাসা কেনেডি স্পেস সেন্টারের কেপ ক্যানাভারেল স্টেশন থেকে এটি মহাশূন্যে পাঠানো হয়।

ভয়েজার-১ এ পৃথিবীর সঙ্গে যোগাযোগের জন্য দুটি ট্রান্সমিটার স্থাপন করা হয়, যা ১৯৮১ সালের পর আর ব্যবহার করা হয় না। বর্তমানে স্পেসশিপে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ট্রান্সমিটার ব্যবহার করা হয়।

চলতি বছরের ২৪ অক্টোবর নাসার জেট প্রোপালসন ল্যাবরেটরির (জেপিএল) ইঞ্জিনিয়াররা ভয়েজার-১ সঙ্গে ফের যোগাযোগ করতে সক্ষম হন।

এর আগে তারা ১৬ অক্টোবর ভয়েজার-১কে একটি বার্তা পাঠান। কিন্তু ১৮ অক্টোবরের আগে তারা ভয়েজার থেকে কোনো উত্তর পাননি। এর একদিন পর ভয়েজার-১-এর সঙ্গে যোগাযোগ পুরো হারিয়ে ফেলেন। জানা যায়, এর চার্জারের ওপর বেশি চাপ পড়ার কারণে এর ‘প্রোটেকশন সিস্টেম’-এ ত্রুটি দেখা দেওয়ায় এটির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।

নাসা জানায়, এরপর ভয়েজার-১ ওয়ানওয়ের একটি বার্তা গ্রহণ করতে সক্ষম হয়। এ বিষয় তদন্ত করে নাসা জানতে পারে যে, ভয়েজার-১ প্রোটেকশন সিস্টেমের ত্রুটির কারণে এর দুর্বল ট্রান্সমিটারটির সুইস অন হয়।

প্রসঙ্গত, ভয়েজার-১ এ দুটো ট্রান্সমিটার রয়েছে। এর একটি ‘এস-ব্যান্ড’-এর। এটি যে ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করে পৃথিবীর সঙ্গে যোগাযোগ করতো, সেটি ১৯৮১ সালের পর আর ব্যবহার করা হয় না।

অন্যটি ‘এক্স-ব্যান্ডের। কয়েক সপ্তাহের চেষ্টার পর নাসার বিজ্ঞানীরা এটির সুইচ অন করতে সক্ষম হন। এটি যাতে আর বন্ধ না হয়ে যায়, সে জন্য তারা খুবই সতর্কতার সঙ্গে এক্স-ব্যান্ডের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।এই ব্যান্ডের মাধ্যমে নাসার বিজ্ঞানীরা ২২ অক্টোবর ভয়েজার-১কে একটি বার্তা পাঠান এবং ২৪ অক্টোবর ভয়েজার নাসায় ফিরতি বার্তা পাঠায়।

এবিষয়ে ভয়েজার মিশন অ্যাসুরেন্স ম্যানেজার ব্রুস ওয়াগোনার সিএনএনকে বলেন, এই ব্যান্ডের ওপর বেশিদিন নির্ভর করা যাবে না। ফলে, এটিও একসময় কাজ করা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

উল্লেখ্য, ভয়েজার-১ এর আগে ভয়েজার-২ ১৯৭৭ সালের ২০ আগস্ট মহাশূন্যে পাঠানো হয়। এরপর সেই বছরের ১৫ ডিসেম্বর ভয়েজার-১ ও ভয়েজার-২ গ্রহাণুর বেল্টের মধ্যে অবস্থান করে।

ভয়েজার-১ একমাত্র স্পেসক্রাফট যা মনুষ্যনির্মিত কোনোকিছু ইন্টারস্টেলারে অবস্থান করছে। সৌরমণ্ডলের মহাশূন্য স্তর হেলিওস্ফেয়ার অতিক্রম করে আরো গতিপ্রাপ্ত হয়ে একাধিক তারকারাজির মধ্যবর্তী মহাশূন্য স্তর ইন্টারস্টেলার স্তরে অবস্থান করছে, যা আমাদের নীলগ্রহ পৃথিবী থেকে ১৫ লাখ দূরে অবস্থিত।

ভয়েজার-১ ও ভয়েজার-২ উভয় স্পেসক্রাফট বর্ধনশীল টাইটান-সেন্টুর রকেট দিয়ে মহাশূন্যে পাঠানো হয়।

বিডি/এন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement