কার্বন নির্গমন কমাতে ই-ট্রাক

কার্বন নির্গমন কমাতে ই-ট্রাক

প্রযুক্তি ডেস্ক

Published : ০০:১৫, ২৮ নভেম্বর ২০২৪

পরিবহণের জন্য ট্রাক প্রয়োজন। কিন্তু সেগুলো ব্যাপক কার্বন নির্গমনও ঘটায়। ব্যাটারিচালিত ইলেকট্রিক ট্রাক এই সমস্যা কিছুটা দূর করতে পারে। কিন্তু ই-ট্রাক কি দীর্ঘ পথের ধকল সামলাতে পারবে? ডেলিভারির কাজে বেরিয়েছে ই-একট্রোস ৬০০ ডাইমলার ট্রাক। এটি প্রথম ট্রাক, যেটি একবার চার্জ নিয়ে ৫০০ কিলোমিটার চলতে পারে।

স্টেভ এঙ্গেলমান ইউরোপের অন্যতম বড় রিসাইক্লিং এন্টারপ্রাইজ রিমন্ডিসের জন্য ট্রাকটি পরীক্ষা করছেন। ডিপোতে রাতের বেলা ব্যাটারিটি পুরোপুরি চার্জ দেয়া হবে। এজন্য ছয় থেকে আধঘণ্টা লাগবে। রিমন্ডিস গ্রুপের আড়াইশোর মতো ই-ট্রাক রয়েছে। কিন্তু এটি সবচেয়ে বেশি দূরে যেতে পারে।

রিমন্ডিসের ফ্লিট ম্যানেজার স্টেভ এঙ্গেলমান বলেন, মার্সেডিস - ডাইমলার - মজা করেনি। কোনো সমস্যা ছাড়াই ৫০০ কিলোমিটার গিয়েছি আমরা। সবুজ জ্বালানি ব্যবহার করে রিচার্জ করায় ট্রাকগুলোকে প্রায় কার্বন নিরপেক্ষ বলা যেতে পারে। কিন্তু চালকদের কাছে রাস্তায় এগুলোকে রিচার্জ করাটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। কারণ তারও ঘরে যেতে হবে।

দ্রুত রিচার্জ করতে হাই ভোল্টেজ বিদ্যুৎ এবং হেভি ডিউটি চার্জারের দরকার। সেক্ষেত্রে বিশ মিনিটেই বিশ থেকে আশি শতাংশ চার্জ দেয়া সম্ভব। কিন্তু এরকম মেগাওয়াট চার্জিং সিস্টেম যথেষ্ট নেই এখনো।

রিমন্ডিসের জাসা হিংকে বলেন, আমাদের বড় পরিসরে গণ চার্জিং কাঠামো দরকার। নির্মাতারা প্রস্তুত। তারা অনেক গাড়ি তৈরি করছেন। ধারাবাহিকভাবে কাজ চলছে। কিন্তু এজন্য কাঠামো তৈরিতে অনেক কিছু করতে হবে।

ডাইমলার ট্রাকের উৎপাদনকেন্দ্র হচ্ছে দক্ষিণপশ্চিম জার্মানি। তারা বিশ্বের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক গাড়ি নির্মাতা। এখানে টেস্ট ট্র্যাকে ই-ট্রাকটিকে নানা গতিতে যাচাই করা হচ্ছে। কয়েকশত বিশেষজ্ঞ আট বছর খরচ করে তৈরি করেছেন। প্রকল্পটির পরিচালক মিশায়েল ভল্ফ। ই-ট্রাকটির খুচরা মূল্য আড়াই লাখ ইউরো, যা ডিজেলচালিত মডেলের তুলনায় এক লাখ ইউরো বেশি।

ডাইমলার মনে করছে উৎপাদন ব্যাপক হারে বাড়লে দাম কমবে। ঘণ্টায় এটির সর্বোচ্চ গতি আশি কিলোমিটার। জার্মানির মহাসড়কে ট্রাকের স্পিডলিমিটও এটা। এটির রাডার ডিস্টেন্স সেন্সর এবং অভিনব মিরর ক্যামেরা রয়েছে। তিনটি ব্যাটারি প্যাকসহ ওজন সাড়ে চার মেট্রিক টন এবং আউটপুট ৬০০ কিলোওয়াট। একইধরনের ডিজেল মডেলের তুলনায় ই-ট্রাকগুলোর গতি বেশি। অন্যান্য উৎপাদনকারীরাও তাই আগ্রহী হচ্ছে। ডাচ নির্মাতা ডিএএফ-এর ই-ট্রাক প্রায় পাঁচশ কিলোমিটার যেতে পারে।

সুইডেনের স্ক্যানিয়া ই-ট্রাক যেতে পারে সাড়ে তিনশো কিলোমিটার, এবং ম্যানের ২০২৫ সালের মডেলের ব্যাপ্তি হবে ৪০০ কিলোমিটার। রিমন্ডিস বেশ কিছুদিন আগে ই-ট্রাক বাজারে ছাড়ে। প্রতিষ্ঠানটির জন্য এটা ভালো উদ্যোগ ছিল।

জাসা হিংকে বলেন, আমার ডিপোতে সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ এবং শুল্ক অব্যাহতি ডিজেলের বিপরীতে দুটি সুবিধা। এবং আমি লম্বা দূরত্বে চালালে এগুলোর সুফল মেলে। ২০২৪ সালের শুরুর দিকে জার্মানি ই-ট্রাক কেনার ক্ষেত্রে ভর্তুকি বাতিল করে। তার অনেক আগেই অবশ্য ডিজেল ট্রাকের মহাসড়ক ব্যবহারের শুল্ক দ্বিগুণ করা হয়েছে যাতে ই-ট্রাকের কদর বাড়ে।

এতে অবশ্য বিরক্ত জার্মানির ট্রাক শিল্প। ট্রাক শিল্প সংশ্লিষ্টরা মনে করেন ই-ট্রাকের বিক্রি বাড়াতে জার্মানিকে আবারো ভর্তুকি চালু করতে হবে। তবে একইসঙ্গে এসব ট্রাকের দূরত্ব অতিক্রমের সক্ষমতাও বাড়াতে হবে। এক্ষেত্রে এখনো পিছিয়ে আছে নির্মাতারা।

বিডি/এন

শেয়ার করুনঃ
Advertisement