ভারতে বাংলাদেশি পর্যটকের সংখ্যা কমেছে

ভারতে বাংলাদেশি পর্যটকের সংখ্যা কমেছে

ভ্রমণ ডেস্ক:

Published : ১৬:৪৯, ২১ আগস্ট ২০২৪

গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বিদায় নিয়েছে শেখ হাসিনার সরকার। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ থেকে দেশের বাইরে ঘুরতে বা অন্যান্য প্রয়োজনে যাওয়া মানুষের সংখ্যা কমেছে অন্তত ৯০ শতাংশ। 

ট্রাভেল অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশকে উদ্ধৃত করে এ তথ্য জানিয়েছে ইকোনমিক টাইমস। 

সম্প্রতি ভারতীয় গণমাধ্যম বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রায় ২ সপ্তাহ আগে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়লে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে যায়। ফলে বাংলাদেশ থেকে ভারত অভিমুখী অস্থায়ী অনেক ফ্লাইট ব্যাহত হয় এবং চিকিৎসাজনিত কারণ ছাড়া সব ভিসা স্থগিত করা হয়। 

ফ্লাইটগুলো এখন আবার শুরু হলেও ঢাকায় ফ্লাইট পরিচালনাকারী একটি এয়ারলাইনের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ফ্লাইটগুলোর যাত্রী সংখ্যা ৫০ শতাংশেরও বেশি কমেছে। 

ইকোনমিক টাইমসকে বাংলাদেশের ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক মো. তসলিম আমিন শোভন বলেন, দেশের বাইরে ঘুরতে যাওয়া বাংলাদেশিদের কাছে ভারত একটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার। বাংলাদেশি ভ্রমণকারীদের জন্য ভারত একটি প্রধান গন্তব্য। যারা বিদেশে ঘুরতে যায়, তাদের ৪০-৪৫ ভাগই ভারতে যায়। 

তিনি আরো জানান, ভারতে যাওয়া বাংলাদেশিদের মধ্যে ১৫ শতাংশ যান কেনা-কাটা করতে, ৫ শতাংশ যান অবকাশ যাপনের জন্য। আর ৮০ ভাগই যান চিকিৎসার উদ্দেশ্যে। বাংলাদেশিদের কাছে কেনা-কাটার জন্য কলকাতা একটি জনপ্রিয় কেন্দ্র। বিশেষ করে বিভিন্ন উৎসবের আগে। 

গতবছর বিভিন্ন দেশ থেকে ভারতে ঘুরতে যাওয়া পর্যটকদের সংখ্যা ৪৩.৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে গিয়েছিল। তবে মহামারির আগের বছরগুলোর তুলনায় এ পরিসংখ্যানটি ১৫.৫ শতাংশ কম ছিল। ২০২৩ সালে দেশটিতে ৯২ লাখ ৩০ হাজার পর্যটক সমাগম হয়। এতে আয় হয় ২৪ হাজার ৭০৭ কোটি রুপি। 

এই পর্যটকদের মধ্যে শুধুমাত্র বাংলাদেশি পর্যটকই ছিল ২২.৫ ভাগ। এ হিসেবে কোনো একক দেশ হিসেবে ভারতে যাওয়া পর্যটকদের মধ্যে বাংলাদেশিরাই সবচেয়ে বেশি ছিল। 

ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অব ট্যুর অপারেটরস পশ্চিমবঙ্গ অফিসের চেয়ারম্যান দেবজিৎ দত্ত বলেন, সাম্প্রতিক সংকট শুরু হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যাতায়াত প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। শুধুমাত্র প্রকৃত চিকিৎসার কারণ ছাড়া সরকার ভিসা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। এতে পশ্চিমবঙ্গের হাসপাতালের কাছাকাছি ট্রাভেল অপারেটর, হোটেল ও গেস্ট হাউসগুলোর ব্যবসা প্রায় ৯০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২২ সালের তুলনায় গতবছর বাংলাদেশ থেকে চিকিৎসার জন্য ভারতে যাওয়া মানুষের সংখ্যা ৪৮ শতাংশ বেড়েছিল। যেখানে ২০২২ সালে এ সংখ্যাটি ছিল ৩ লাখ ৪ হাজার ৬৭ জন, ২০২৩ সালে সংখ্যাটি হয়েছিল ৪ লাখ ৪৯ হাজার ৫৭০ জন। 

অভ্যুত্থানের পর এ পরিস্থিতি এতটাই নাজুক যে, কলকাতাভিত্তিক একটি মেডিকেল টুরিজম কোম্পানির প্রধান নির্বাহী জানান, আগে তার কোম্পানি প্রতি মাসে প্রায় দেড়শ জন বাংলাদেশি রোগীকে ভারতে চিকিৎসার জন্য ব্যবস্থা করত। বর্তমানে এ ধরনের রোগীর সংখ্যা ৫/৬ জনে নেমে এসেছে।

বিডি/ও

শেয়ার করুনঃ
Advertisement