দুর্গাপূজায় ঘুরে আসুন ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ৫ মণ্ডপ
Published : ১৭:০৭, ১০ অক্টোবর ২০২৪
দূর্গাপূজা ঘিরে উৎসবের বার্তা বিরাজ করছে দেশের সবখানে। যারা রাজধানতে অবস্থান করছেন, তারা নিশ্চয় উৎসবের সাজ-পোশাকে মণ্ডপগুলো ঘুরতে যাবেন।
গত ২ অক্টোবর শুভ মহালয়ার মধ্য দিয়ে দেবীপক্ষের সূচনা হয়। বুধবার (৯ অক্টোবর) চণ্ডীপাঠের মধ্য দিয়ে সূচনা হয়েছে দুর্গাষষ্ঠীর। এর মধ্য দিয়েই মূলত শুরু হলো বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব ৫ দিনব্যাপী শারদীয় দুর্গোৎসব। এবার দেবী দুর্গার আগমন হয়েছে দোলায় বা পালকিতে এবং গমন ঘোটক বা ঘোড়ায়।
জেনে নিন আপনার হাতের নাগালে আছে, এমন কয়েকটি বিখ্যাত মন্দির সম্পর্কে। ৫ দিনব্যাপী শারদীয় দুর্গাপূজার এই মহাৎসবে ঘুরে আসতে পারেন নগরীর এই মণ্ডপগুলোতে-
ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির: দেশের অন্যতম প্রাচীন মন্দির ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির। পলাশীর মোড়ের পাশে ঢাকেশ্বরী রোডেই মন্দিরটির অবস্থান। দুর্গাপূজায় সবচেয়ে বেশি ভক্তের সমাগম হয় এই মন্দিরে।
মহালয়া থেকে পূজার প্রতিটি দিন শাস্ত্রীয় নিয়ম মেনে ভক্তি আর নিষ্ঠার সঙ্গে উদযাপন করা হয়। মণ্ডপের ভেতরে ও বাইরে চমৎকারভাবে সাজানো হয়। দেশ-বিদেশ থেকেও ভক্ত দর্শনার্থীরা আসেন ঢাকেশ্বরী মন্দিরে মায়ের পূজা দেখতে। বিজয়া দশমীতে বরণ, সিঁদুর খেলা ও সন্ধ্যা আরতি দেখার জন্যও এখানে প্রচুর মানুষের ভিড় হয়।
রমনা কালী মন্দির: রমনা কালী মন্দির ঢাকা বিশ্বিবদ্যালয়ের পাশেই অবস্থিত। জনশ্রুতি আছে, প্রায় ৫০০ বছর আগে বদরীনাথের যোশীমঠ থেকে গোপালগিরি নামে এক উচ্চমার্গের সন্ন্যাসী প্রথমে ঢাকায় এসে সাধন-ভজনের জন্য উপযুক্ত একটি আখড়া গড়ে তোলেন। সেখানেই আরও ২০০ বছর পরে মূল রমনা কালীমন্দিরটি নির্মাণ করেন আর এক বড় সাধু হরিচরণ গিরি।
তবে পরবর্তী সময়ে এই মন্দিরের প্রধান সংস্কারকার্য ভাওয়ালের ভক্তিমতী ও দানশীলা রানি বিলাসমণি দেবীর আমলেই হয়। এখনও রমনা কালী মন্দির তার ঐতিহ্য ধারণ করে আছে। মন্দির চত্ত্বরে দুর্গা পূজার আয়োজন করা হয়। মন্দির এলাকায় ছোটখাটো মেলাও বসে।
রামকৃষ্ণ মিশন: কুমারী পূজা দেখতে চাইলে আপনাকে যেতে হবে রামকৃষ্ণ মিশনে। ঢাকায় শুধু রামকৃষ্ণ মিশনেই মহাঅষ্টমী তিথিতে কুমারী বালিকাকে মাতৃরূপে দেবী জ্ঞানে পূজা করা হয়। কুমারী পূজা দেখার জন্য বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এখানে ভক্তরা ভিড় করেন। টিকাটুলির রামকৃষ্ণ মিশন রোডে এর অবস্থান।
বনানী পূজা মণ্ডপ: প্রতিবছর বনানী খেলার মাঠে অস্থায়ী পূজা মণ্ডপ তৈরি করা হয়। ব্যয়বহুল জাঁকজমকপূর্ণ এই পূজা মণ্ডপ দেখতে সবাই অগ্রহী হয়। অপরূপ সুন্দর প্রতিমা ও বর্ণিল আলোকসজ্জা নজর কাড়ার মতই। দিনের চেয়ে রাতের বনানী পূজা মণ্ডপ অনেক বেশি প্রাণবন্ত। তবে অন্যান্য বছরের মতো এবারও বনানী পূজা মণ্ডপে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে।
খামারবাড়ি পূজা মণ্ডপ: কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (কেআইবি) এর পাশেই খামারবাড়ি পূজা মণ্ডপ। আলোকসজ্জা, প্রতিমার সৌন্দর্য, প্রবেশদ্বার, আভ্যন্তরীণ কাঠামোশৈলী ও প্যান্ডেলের কারণে আলোচিত খামারবাড়ি পূজা মণ্ডপ। পরিবার কিংবা বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন এই মণ্ডপটি। তবে রাতের বেলায় এর সৌন্দর্য বহুগুণে বেড়ে যায়। এবারও খামারবাড়ি দুর্গাপূজা মণ্ডপের সব প্রস্তুতি শেষ।
তাছাড়া পুরান ঢাকার পূজা মণ্ডপগুলোর কথা না বললেই নয়। লক্ষীবাজার, শাঁখারিবাজার, তাঁতিবাজার এলাকার সরু গলির ভেতরেই আয়োজিত হয় দুর্গা পূজা। সেখানে ঝলমলে হয়ে ওঠে পূজা মণ্ডপগুলো।
বিডি/ও