চিকিৎসা খাতে অগ্রগামী মেডিকেল ফিজিক্স

চিকিৎসা খাতে অগ্রগামী মেডিকেল ফিজিক্স

মো. মাহিদুজ্জামান সিয়াম:

Published : ২৩:১৪, ৬ নভেম্বর ২০২৪

বলা হয়ে থাকে ক্যান্সার একটি মরণব্যাধি। এ ধারণাকে ভুল প্রমাণ করতেই যেন চিকিৎসা সেবায় নতুন মাত্রা নিয়ে আসে রেডিয়েশন থেরাপি। 

রেডিয়েশনকে ব্যবহার করে চিকিৎসা ক্ষেত্রে অনন্য মাত্রা তৈরি করেই অমর হন মেরি স্কলোডোস্কা কুরি। 

যার গবেষণা শুধু পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়নের ক্ষেত্রেই নয়, চিকিৎসা বিজ্ঞানের অগ্রগতিতেও অসামান্য অবদান রেখেছে এবং প্রথম ব্যক্তি হিসেবে একাধারে দুটি আলাদা শাখায় নোবেল পুরস্কার লাভ করেন কুরি। প্রথমে পদার্থবিজ্ঞানে ও পরে রসায়নে। 

তার গবেষণায় রেডিয়েশনের ব্যবহার এবং প্রয়োগ নিয়ে যে পথ তৈরি হয়েছিল, তা পরবর্তীতে ক্যান্সারসহ বিভিন্ন জটিল রোগ নিরাময়ের ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব সম্ভাবনা সৃষ্টি করে। 

স্কলোডোস্কা কুরির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের নিমিত্তে তার জন্মদিনের দিনটিকে কেন্দ্র করে ১৮৬৩ সাল হতে বছরের ৭ নভেম্বর বিশ্বব্যাপী পালিত হয়ে আসছে আন্তর্জাতিক মেডিকেল ফিজিক্স দিবস।

উন্নত বিশ্বে মেডিকেল ফিজিক্স বেশ আগেই জনপ্রিয়তা লাভ করলেও বাংলাদেশে এর ভিত্তি বেশ পরে। 

১৯৯৯ সালে বাংলাদেশি জার্মান প্রফেসর ড. গোলাম আবু জাকারিয়া এবং জার্মান প্রফেসর ড. কার্ল হেইঞ্জ হোভারের সাথে ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বৈঠকের মাধ্যমে মেডিকেল ফিজিক্স বিষয়ে বাংলাদেশে সর্বপ্রথম 'গণ বিশ্ববিদ্যালয়' ২০০০ সাল থেকে ২ বছর মেয়েদি মাস্টার্স কোর্স চালু হয় এবং পরবর্তীতে ২০০৫ সাল থেকে অনার্স কোর্স চালু হয়। 

এতে ক্যান্সার চিকিৎসা এক অভূতপূর্ব বিপ্লব ঘটে। ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর আদর্শে দোরগোড়ায় চিকিৎসা সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে এই প্রতিষ্ঠানের ছেলেমেয়েরা। 

গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল ফিজিক্স এন্ড বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো ক্যান্সার চিকিৎসায় দক্ষ জনবল তৈরি করা এবং দক্ষ বায়োমেডিজেল ইঞ্জিনিয়ার তৈরি করা। 

যার ফলশ্রুতিতেই বর্তমানে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল ফিজিসিস্টরা সুনামের সাথে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যক্ষাতে অবদান রেখে চলেছেন এবং দেশের প্রায় ৯৯ শতাংশ মেডিকেল ফিজিসিস্ট গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী যাদের দিকে তাকিয়ে আগামীর চিকিৎসা খাত।

তবে রেডিয়েশনের ব্যাপারে বিভিন্ন অলিক গাল-গল্প ছড়িয়ে আছে সমাজে। বর্তমানে চিকিৎসা বিজ্ঞানে রেডিয়েশন প্রযুক্তি এবং তেজস্ক্রিয় পদার্থের ব্যবহার যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা জনসাধারণের নিকট পৌছাতে এবং  চিকিৎসায় পদার্থবিদ্যার  তুলে ধরার লক্ষ্যে নির্দিষ্ট প্রতিপাদ্যের উপর ভিত্তি করে আন্তর্জাতিক মেডিকেল ফিজিক্স দিবসটি উদযাপিত হয়। 

এবারে ‘চিকিৎসা পদার্থবিদদের পরবর্তী প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করণ’ প্রতিপাদ্যকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক মেডিকেল ফিজিক্স দিবসটি পালিত হবে। 

যাতে শিক্ষার্থী-কর্মজীবীদের পেশাগত দ্বায়িত্ব পালনে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নিজেদের জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও অন্তর্দৃষ্টি শেয়ারের মাধ্যমে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা প্রদান, তরুণ পদার্থবিদদের ক্রমাগত শিক্ষা এবং পেশাদার বিকাশে নিযুক্ত হতে উৎসাহিত করণসহ গবেষণা এবং উদ্ভাবনকে উৎসাহিত করে এমন পরিবেশ গড়ে তোলার নিমিত্তে চিকিৎসা পদার্থবিদদের সহযোগিতা এবং অন্তর্ভুক্তিকে মূল্য দেয় এমন শক্তিশালী সম্প্রদায় তৈরি করণে সচেতনতা লাভ করতে পারে।

বিডি/ও

শেয়ার করুনঃ
Advertisement