যে কারণে ভিন্ন স্বাদের পপকর্নের ওপর ভিন্ন ভিন্ন ট্যাক্স
Published : ১৯:৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪
৭ বছর আগে ভারতে চালু হয়েছিল ‘গুডস অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্যাক্স’ (জিএসটি) বা পণ্য ও পরিষেবা কর। কিন্তু এ বিষয় নিয়ে মানুষের মধ্যে এখনো নানা ধরনের বিভ্রান্তির সঙ্গে রয়েছে বিতর্কও। একই পণ্যের জন্য বিভিন্ন ট্যাক্স স্ল্যাবের কারণে এই সিস্টেমটা বেশ জটিল হয়ে উঠেছে। আর এটাই জিএসটি নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে অভিযোগের অন্যতম কারণ।
ভারতে এই মুহূর্তে আরও একবার বিতর্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে জিএসটি। এবার আলোচনার কেন্দ্রে থাকা পণ্যের মধ্যে একটা হলো পপকর্ন। কারণ, ৩টি ভিন্ন ফ্লেভারের পপকর্নের ওপর ধার্য্য করা ট্যাক্স আলাদা।
সম্প্রতি ভারতে জিএসটি কাউন্সিলের ৫৫তম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে দেশটির অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের সভাপতিত্বে কর সরলীকরণ নিয়ে বেশ কিছু সুপারিশও করা হয়। কিন্তু আরও একবার বিতর্কের বিষয় হয়ে উঠেছে জিএসটি।
এই তালিকায় থাকা পণ্যের মধ্যে যে দুটি পণ্যের ওপর কর ধার্য করা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে, তা হলো- পপকর্ন এবং পুরানো গাড়ি কেনাবেচার ওপর আরোপিত জিএসটি। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আলোচনা হচ্ছে। বহু মানুষ পোস্টও শেয়ার করেছেন।
এরপরেই সরকারের তরফ থেকে বিষয়টাকে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। ব্যাখ্যাও দেওয়া হয়েছে, কেন পপকর্নের ওপর তিন ধরনের ভিন্ন ভিন্ন কর ধার্য্য করা হয়েছে।
জিএসটি কাউন্সিলের তরফে জানানো হয়েছে, রেডি টু ইট’ পপকর্ন লবন ও মশলা দিয়ে আগে থেকেই প্যাকেটজাত করে লেবেল ছাড়া বিক্রি করলে তার ওপর জিএসটি বসবে পাঁচ শতাংশ। কিন্তু সেই একই পপকর্ন যদি লেবেলসহ বিক্রি করা হয়, তাহলে জিএসটি দিতে হবে ১২ শতাংশ।
আবার পপকর্ন যদি মিষ্টি স্বাদযুক্ত হয়, তাহলে তার ওপর জিএসটি বসবে ১৮ শতাংশ। কারণ সেক্ষেত্রে পপকর্নের শ্রেণি বদলে ‘ক্যারামেল পপকর্ন’ হয়ে যাবে। আর এই জন্যই ভিন্ন ভিন্ন জিএসটি।
অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন এ প্রসঙ্গে বলেন, আমরা প্রত্যেক জিএসটি কাউন্সিলের পর সাংবাদিক সম্মেলন করি। কর এমন একটা বিষয়, যার অনেকগুলো স্তর রয়েছে। অন্ধভাবে কোনো কর আরোপ করা হয় না এবং অন্ধভাবে কর সরানোও হয় না। দয়া করে পুরো বিষয়টি বুঝে আপনারা মিডিয়ায় প্রচার করুন।
অর্থমন্ত্রী পপকর্ন তিনটির ভিন্নভাবে বিক্রির তথ্য দেন এবং তার ওপর আরোপ করা করের বিষয়ে ব্যাখ্যাও দেন।
এর আগে জয়সলমীরে অনুষ্ঠিত জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠকে স্বাদ এবং প্যাকেজিংয়ের ভিত্তিতে পপকর্নে করের নতুন হার নির্ধারণ করা হয় এবং তা নিয়ে ক্রমাগত বিতর্কও চলছিল।
তারপর থেকেই এ বিষয় নিয়ে নানান রকম কথা হচ্ছিল। কেউ কেউ সিনেমা হলে বিক্রি হওয়া পপকর্ন এবং রাস্তায় বিক্রি হওয়া পপকর্নের তুলনাও করছিলেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে বেশ বিতর্কের সৃষ্টি হয় এবং তারপরই সরকার এ নিয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে।
কর বিশেষজ্ঞ ও চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট বিকাশ বলেছেন, এখন সিনেমা হলে লবন মেশানো পপকর্ন খেতে হলে পাঁচ শতাংশ কর দিতে হবে। আর ট্রেনে চিনি মিশ্রিত পপকর্ন কিনলে ১৮ শতাংশ কর দিতে হবে।
এই বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, জিএসটি কাউন্সিলের প্রস্তাবের পর শীঘ্রই নতুন কর হার সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তিও জারি করা হবে। সূত্র: বিবিসি বাংলা
বিডি/এন